বেশ কিছুদিন যাবত কোমরে ব্যথায় ভুগছেন? এদিকে কমেছে প্রস্রাবের হার? এড়িয়ে যাবেন না, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) হয়ে থাকতে পারে আপনার। পাশাপাশি গা ঝিমঝিম, ক্লান্ত ভাব, প্রস্রাব করতে সমস্যা, ইত্যাদিও দেখা দেবে। ইউটিআই-কে ছোটখাটো রোগ মনে করে অবহেলা করলে ভুল করবেন। ইউটিআই কম করে হলেও বেশ কিছুদিন ভোগাবে। এবং অসাবধান হলে সংক্রমণ কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে যায়। তাই যত দ্রুত সম্ভব এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের গাইনোকলজিস্ট ডাঃ সুধীর অধিকারি।
ডাঃ অধিকারি জানিয়েছেন, এই সমস্যাটি মহিলা ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে দেখা গেলেও মহিলাদের মধ্যে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। জল কম খেলে, ঘামে ভেজা অপরিষ্কার অন্তর্বাস পরে থাকলে, এবং নোংরা বাথরুম ব্যবহার করলে মূলত ইউটিআই হতে পারে। এছাড়া শরীরে যাঁদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, বা রক্তশূন্যতায় ভোগেন যাঁরা, তাঁদেরও ইউটিআই হতে পারে। যদি দেখেন প্রস্রাব হলুদ হচ্ছে, এবং মাঝেমাঝে সঙ্গে রক্ত পড়ছে, তাহলে বুঝবেন সংক্রমণ বড় আকার নিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার দেখাবেন।
আরও পড়ুন: কী করলে কম ভুগতে হবে অস্টিও-আর্থরাইটিস রোগে?
এই রোগ এড়াতে গেলে কী কী করা উচিত? ডাঃ অধিকারি বলেন, "বেশি করে জল খাওয়া উচিত। দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার। আমরা যখন জল খাই তখন তা বৃক্ক বা কিডনির মাধ্যমে ছেঁকে মূত্রনালি দিয়ে মূত্র হিসেবে বেরিয়ে যায়। জল বেশি খেলে সংক্রমণ মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে।"
ইনফেকশন হলে কী করণীয়?
মূত্র পরীক্ষা করে যদি দেখেন আপনার রেগুলার ও কালচার টেস্টে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাবেন। এছাড়া প্রয়োজনে জলে গুলে অ্যালকাসোল ওষুধটি খেতে পারেন। এতে প্রস্রাব ভালো হয়। জ্বালা এবং ব্যথাও কম হবে।
আরও পড়ুন: সামান্য কয়েকটি অভ্যেস বদলালেই সুস্থ জীবন আপনার অপেক্ষায়
ঘরোয়া ভাবে কী কী করা যেতে পারে?
প্রস্রাবে হলুদ ভাব দেখা গেলেই দেরি না করে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া শুরু করা উচিত। প্রতিদিন অন্তত আড়াই লিটার। প্রস্রাব আটকে রাখবেন না। দু ঘণ্টা অন্তর প্রস্রাব হলে ভালো। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেলে প্রস্রাবের সময় জ্বালা ভাব কমাতে সহায্য করে।
ডাক্তাররা সাধারণত ব্রোমেলাইন সমৃদ্ধ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রেসক্রাইব করে থাকেন রোগীকে। আনারসে এই ব্রোমেলাইন নামক উপকারী এঞ্জাইম খুব বেশি পরিমাণে থাকে। তাই আনারস খেলে উপকৃত হবেন।
উল্লেখ্য, সংক্রমণ সেরে গেলেও বেশ কিছুদিন ক্লান্তিভাব থাকবে। গায়ে হাতে পায়ে ও কোমরে ব্যথাও থাকবে।