সালটা ২০১৮ হতেই পারে। হিমা দাস স্বপ্না বর্মণ-রা এশিয়াডে সোনা রুপো এনে 'দেশের মুখ উজ্জ্বল' করতেই পারেন। তবু সমাজের মুখটা একই থাকে। বিবাহযোগ্যা হলেই মেয়ের এবং মেয়ের বাবা মায়েদের বুক ধুকপুক শুরু হয়ে যায়, কেমন হবে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি? মানিয়ে নিতে পারবে তো? কোথাও কোনও ঝামেলা হবে না তো? এ জগতে যখন সব কিছু নিয়ে ব্যবসা হয়, তাহলে বাপ-মা আত্মীয় পরিজনদের এই হাড়হিম করা ভয়ই বা পণ্য হবে না কেন? অতএব বাজারে নতুন স্টার্ট আপ সংস্থা! বারানসির এই স্টার্ট-আপ হবু বউমাদের তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেবে। প্রথম ব্যাচ শুরু হল বলে।
ক্র্যাশ কোর্সের নাম 'মাই ডটার; মাই প্রাইড'। এই কোর্স করলে নাকি 'বিবাহযোগ্যা' মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। কমিউনিকেশন স্কিল আরও ভালো হবে। দেশের প্রথমসারির প্রতিষ্ঠান আইআইটি-বিএইচইউ-এর মালব্য নব পরিবর্তন কেন্দ্রে এ ধরণের কোর্স চালু রয়েছে। সেখান থেকেই প্রথম এই চিন্তা মাথায় আসে বারানসির স্টার্ট আপের কর্ণধার নীরজ শ্রীবাস্তবের। তবে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন 'মাই ডটার মাই প্রাইড' কোর্সটির সঙ্গে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও যোগ নেই।
আরও পড়ুন: চার হাজার পোস্টার ছাপিয়ে কোন্নগরের কনেকে খুঁজছেন এই ব্যক্তি
কোর্স চালু হওয়ার পর আশাতীত সাড়া পেয়েছে তাঁর স্টার্ট আপ, জানিয়েছেন নীরজ। স্টার্ট আপ শুরু করার আগে রীতিমতো আটঘাট বেধেই মাঠে নেমেছিলেন নীরজ এবং তাঁর সঙ্গীরা। বাজারে সমীক্ষা চালানোর সময় তাঁদের পর্যবেক্ষণ বলছে, ৭৫ শতাংশ পাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে। বিয়ে পরবর্তী পরিস্থিতি কতটা অন্যরকম হবে, পেশাগত এবং পারিবারিক জীবনের মধ্যে ব্যালেন্স আনবে কীভাবে, অপরিচিত পরিবারের দায়িত্ব সামলাবে কীভাবে, নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে আদৌ পারবে কি না, এ সব নিয়ে নানা ভয় কাজ করে তাদের মধ্যে।নীরজ বলছেন, বিয়ে সংক্রান্ত যাবতীয় ভয় ভীতি দূর করতেই তাঁর এই অভিনব কোর্স।
যদিও বিরুদ্ধমতও আছে। এমন উদ্দেশ্যের সমালোচনা করে অনেকেই বলছেন স্টার্ট-আপের মূল লক্ষ্যের পরিপন্থী এই ধরণের কোর্স। 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' স্লোগানও থাকবে, আবার পাশাপাশি মেয়েকে 'আদর্শ বউমা' বানানোর প্রশিক্ষণও চলবে, স্ববিরোধিতাটা মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে না?