Advertisment

দুই শতাব্দীরও প্রাচীন জাগ্রত শিবমন্দির, দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসেন ভক্তরা

নাটোরের রাজমাতা রানি ভবানীর তৈরি বরানগরের মন্দির থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
shiv temple

প্রতীকী ছবি।

পশ্চিমবাংলার বহু মন্দির আছে, যেগুলো অত্যন্ত জাগ্রত। কিন্তু, তার পরিচিতি কেবলমাত্র নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। দূর-দূরান্তের ভক্তরা জানেন। কিন্তু, তাঁরা প্রচারে খুব বেশি আগ্রহী নন। আবার এমন মন্দিরও আছে, যেগুলো অতি পুরোনো। কিন্তু, কে-ই বা তার খোঁজ রাখে।

Advertisment

তাই নির্দিষ্ট কয়েকটি মন্দিরেই ঘোরাফেরা করেন ভক্তরা। যদিও জানা থাকলে তাঁরা সহজেই উইকেন্ড ছুটিতেও গিয়ে সেই সব মন্দির দর্শন করে আসতে পারেন। এমনই একটি হল ব্যাসপুর শিব মন্দির। মুর্শিদাবাদ জেলার কাশিমবাজারের ব্যাসপুরে রয়েছে এই মন্দির।

কথিত আছে পণ্ডিত রামকেশব দেবশর্মন ১৮১১ সালে এই মন্দির তৈরি করেছিলেন। অনেকে বলেন নাটোরের রাজমাতা রানি ভবানীর তৈরি বরানগরের মন্দির থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল। এই মন্দির তার স্থাপত্য শৈলীর দিক থেকে রীতিমতো অনন্য। এই অঞ্চল তো বটেই, এর আশপাশে তথা গোটা মুর্শিদাবাদে এত উঁচু মন্দির আর নেই। উচ্চতা ৫৭ ফুট।

মন্দিরের চূড়ায় রয়েছে কলস ও ত্রিশূল। সেটা আবার উলটো পদ্মের মত দেখতে। এই মন্দিরের চূড়া
আটকোণযুক্ত। রয়েছে কার্নিস-সহ চালা, পদ্মফুলের আট পাপড়ি। সঙ্গে মন্দিরের গায়ে দুর্গা, কালী, রাধামাধব, গণেশ, সিংহ, হাতি, সাপ আঁকা। মন্দিরের প্রবেশপথ আর গায়ে আঁকা আছে রাম-রাবণের যুদ্ধ, কৃষ্ণলীলা, বিষ্ণুর দশাবতার, মহিষাসুরমর্দিনী, ফুল, লতাপাতা। টেরাকোটার বিভিন্ন কাজ।

আরও পড়ুন- বহু প্রাচীন শিব মন্দির, যেখানে ঢেউয়ে অবিরাম ধুয়ে যায় পঞ্চ শিবলিঙ্গ

তবে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে মন্দিরটি জীর্ণ হয়ে পড়েছিল। সেই খবর পৌঁছেছিল লালগোলার রাজবাড়িতে। ১৯১৮ সালে মুর্শিদাবাদের লালগোলার মহারাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায় বাহাদুর তারপরই এই মন্দিরের সংস্কার করান। এই মন্দির সংস্কারের কাজকর্ম তত্ত্বাবধান করেছিলেন আইনজীবী ও জাতীয়তাবাদী নেতা রায়বাহাদুর বৈকুণ্ঠনাথ সেন।

তারপর ফের এই মন্দিরের সংস্কার হয় ১৯৯৫ সালে। সেই সংস্কারের নেতৃত্বে ছিলেন মহারাষ্ট্রের অমিতকুমার ভোঁসলে। সম্প্রতি মন্দিরটির সৌন্দর্যায়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মন্দিরের প্রবেশপথের পাশে তৈরি হয়েছে হরগৌরীর বিশাল মূর্তি। মন্দিরের সামনে তৈরি হয়েছে বিরাট আকারের নাট মন্দির।

আজও প্রতিদিন এই মন্দিরে বাবা ব্যাসদেব বা ব্যাসেশ্বরের পুজো হয়। মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ। এই শিবলিঙ্গেরই নাম ব্যাস দেব। উচ্চতা পাঁচ ফুট। দিনে দু'বার চলে পুজোপাঠ। প্রতি সন্ধ্যায় আরতি ও কীর্তন হয়। শিবরাত্রিতে দিনসাতেকের মেলা বসে।

pujo Maha Shivratri 2022 Temple
Advertisment