/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/25/wb-former-cm-prafulla-sen-2025-09-25-03-06-31.jpg)
WB Former CM Prafulla Sen: পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেন।
West Bengal Former CM Prafulla Sen: একবার বাংলা সংস্কৃতির রসিকতার শিরোমণি 'দাদাঠাকুর' বিধায়কদের সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, 'সব মেলে তাই ও এমএলএ।' কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেন ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্রের এক নেতা। তাঁর জীবন ও রাজনৈতিক কাহিনি বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বিরল অধ্যায়।
১৮৯৭ সালের ১০ এপ্রিল খুলনা জেলার সেনহাটি গ্রামে জন্মেছিলেন প্রফুল্লচন্দ্র সেন। ছোটবেলায় চলে আসেন দেওঘরে, পরে কলকাতায় পড়াশোনা। স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে ফিজিক্স অনার্স নিয়ে স্নাতক হন। উচ্চশিক্ষার জন্য বিলেতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কিন্তু জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় মহাত্মা গান্ধীর কলকাতার ভাষণ। গান্ধীবাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রফুল্ল সেন সত্যাগ্রহ ও স্বদেশি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বেছে নেন আরামবাগকে কর্মক্ষেত্র হিসেবে। তাই তাঁকে অনেকে বলেন, 'আরামবাগের গান্ধী।'
আরও পড়ুন- সন্ধিপুজো না হলে কি দুর্গাপুজো সম্ভব? সত্যিটা কী, ভালো করে জেনে নিন
১৯৬২ সালে বিধানচন্দ্র রায়ের প্রয়াণের পর প্রফুল্ল সেন মুখ্যমন্ত্রী হন। সে সময় বাংলাজুড়ে তীব্র খাদ্য সংকট। অসাধু ব্যবসায়ীরা খাদ্যশস্য মজুত করে বাজারে ব্ল্যাক শুরু করেছিল। খাদ্য সংকট মেটাতে প্রফুল্ল সেন চালু করেছিলেন রেশন ব্যবস্থা এবং লেভি সিস্টেম। এর ফলে মজুতদাররা ক্ষেপে যান এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে তাঁর বিরুদ্ধে উসকে দেন।
আরও পড়ুন- নবরাত্রিতে কোন রঙের পোশাক পরলে ভাগ্য হবে উজ্জ্বল?
কাঁচকলা বিতর্ক
আরও পড়ুন- এই দেবীকেই দুর্গা বলে বাঙালি! শারদোৎসবে এই দেবীর রূপেরই পুজো হয়, জানেন কি?
খাদ্য সংকটের সময় তিনি মানুষকে ভাতের পরিবর্তে রুটি, শাকসবজি, কাঁচকলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন—'তোমরা ভাতের সঙ্গে কাঁচকলা, পটল, কুমড়ো সিদ্ধ খেয়ে পেট ভরাতে পারো।' এ বক্তব্য ঘিরেই তুমুল আন্দোলন হয়। ১৯৬৭ সালের নির্বাচনে আরামবাগ থেকেই তিনি পরাজিত হন। বলা হয়, সেদিন কলকাতার বাজারে কাঁচকলার দাম দ্বিগুণ হয়েছিল!
আরও পড়ুন- নবরাত্রির ৩য় দিনে দেবী চন্দ্রঘণ্টার পূজা, কী প্রাপ্তি হয় এই দেবীর আরাধনায়?
অত্যন্ত সত্ ও সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন প্রফুল্ল সেন। মৃত্যুর সময় তাঁর সম্পত্তি বলতে ছিল মাত্র চার জোড়া ধুতি-পাঞ্জাবি ও এক আলমারি ভর্তি বই। ১৯৯০ সালে চিকিৎসার খরচ বহন করতে না পেরে নীরবেই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান এই সত্ নেতা। বাংলার ইতিহাসে প্রফুল্ল সেনের নাম উচ্চারিত হয় এক সত্, আদর্শবান, গান্ধীবাদী নেতা হিসেবে। রেশন ব্যবস্থা চালুর মত পদক্ষেপ আজও তাঁর দূরদর্শিতা প্রমাণ করে। তিনি ছিলেন বাংলার এক বিরল রাজনীতিক, যিনি ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের সেবা করে গিয়েছেন।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us