হুঁ থেকে টুঁ করতেই গঙ্গায় স্নান করতে ছোটেন হিন্দু পুণ্যার্থীরা। কিন্তু, গঙ্গাস্নানে কী উপকার হয়, এটা অনেকেই জানেন না। শুধু জানেন যে গঙ্গাস্নানে পুণ্য হয়। আর, এই কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন তিথিতে গঙ্গায় স্নান করতে ছোটেন ভক্তরা। এমনকী, ছট পুজোতেও গঙ্গার জলে দাঁড়িয়ে অর্ঘ্য দেওয়ার লক্ষ্য থাকে অনেক পুণ্যার্থীরই। তবে, অনেকেই জানেন না যে বিশেষ তিথিতে গঙ্গাস্নান করলে বিশেষ পুণ্য অর্জন হয়।
যেমন জ্যৈষ্ঠ মাসের মঙ্গলবার শুক্লা দশমী তিথিতে যদি দশহরা পড়ে তাহলে সেদিন গঙ্গা স্নান করলে দশ জন্মের অর্জন করা সব পাপ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও অযুত পরিমাণ অশ্বমেধ যজ্ঞের যে ফল মেলে তা শুধুমাত্র একবার দশহরা স্নান করলেই লাভ করা যায়। এই যোগকে ভাগীরথ দশহরা বলা হয়। স্কন্দ পুরাণ বলছে, চৈত্রমাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে শতভিষা নক্ষত্র যোগ হলে সেই তিথি বারুণী নামে পরিচিত হয়। এই তিথিতে গঙ্গা স্নান করলে বহুশত সূর্যগ্রহণে গঙ্গাস্নানের যে ফল হয়, সেই ফল লাভ করা যায়।
এছাড়াও রবিবার সূর্যগ্রহণ এবং সোমবারে চন্দ্রগ্রহণ হলে চূড়ামণি যোগ হয়। এই যোগে গঙ্গাস্নান করলে অনন্ত গঙ্গাস্নানের ফল লাভ হয়। গ্রহণ চলাকালীন যে গঙ্গাস্নান করা হয়, তাকে গ্রহণ স্নান বলা হয়। আর গ্রহণ শেষে যে স্নান, তাকে বলা হয় মুক্তিস্নান বা মোক্ষস্নান। পুরাণে বর্ণিত হয়েছে সূর্যগ্রহণকালে হরিদ্বারে গঙ্গাস্নান পুণ্যদায়িনি। একইরকম প্রয়াগ, পুষ্কর, গয়া এবং কুরুক্ষেত্রের মতই পুণ্যদায়িনি।
আরও পড়ুন- ছটপুজো কী? পালনের রীতি কেমন ও এই উপাসনা থেকে কী উপকার মেলে?
ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের দ্বাদশী তিথি গোবিন্দ দ্বাদশী নামে পরিচিত। এই দ্বাদশী মহাপাপ নাশিনী। এই তিথিতে গঙ্গাস্নান করলে মহাপাপও নাশ হয়। পুনর্বসু নক্ষত্র ও বৃষলগ্ন যদি চৈত্র মাসের শুক্লা অষ্টমীতে যোগ হয়, তাহলে এই যোগে ব্রহ্মপুত্রে স্নান করলে সকল পাপ থেকে মুক্তি লাভ হয় এবং সমস্ত তীর্থস্থান ভ্রমণ ও স্নানের ফল লাভ হয়। পাশাপাশি, পৌষমাসের অমাবস্যা তিথিতে মূলানক্ষত্র যোগ হলে হয় নারায়ণী যোগ হয়। এই যোগে করতোয়াতে স্নান করলে তিন কোটি কুল পর্যন্ত উদ্ধার হয়ে যায়। অনেকেই এমন বেছে বেছে গঙ্গাস্নানের চেয়ে সারাবছরই গঙ্গাস্নান করেন।