ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারি, এই সময়টাই উৎসবের সময়। টানা একমাস কেমন সেজে সেজে থাকে কলকাতা। রাত জেগে পার্টি, বাইরে খাওয়া দাওয়া সবই হয় দেদার। সারা বছর হাইজিন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করলেও এই ক’টা দিন নিশ্চয়ই খাওয়া দাওয়ায় রাশ টানতে পারবেন না কেউই। ২৪ থেকে ১ তো বাড়ির বাইরেই কাটবে সারাটা দিন। সকালের জলখাবার থেকে রাতের ডিনার, পুরোটাই কেউ কেউ সারবেন বাড়ির বাইরে। কারোর আবার পরিবারেই মহাভোজ। এইক'টা দিন বাইরে খাওয়া এড়িয়ে যেতে বলছে না কেউ। কিন্তু সাবাস্থ্যের কথা ভেবে কিছু সাবধানতা নিতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। কোঠারি মেডিকাল সেন্টারের মুখ্য ডায়াটেশিয়ান মালবিকা দত্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সেরকমই কিছু টিপস দিলেন।
মালবিকা দেবী প্রথমেই জানিয়েছেন, “রাস্তার খাবার বা বাইরের খাবার বেশি খাওয়া কখনওই ভালো না। সত্যি কথা বলতে রাস্তায় খাবার বানানো হলে হাইজিন মানা সম্ভব হয় না। কিন্তু বাঙালি তো হুজুগ প্রিয়, উৎসবের এইক'টা দিন বাইরে খাওয়া ছাড়া ভাবাই সম্ভব না। তাই আমি বলব সবদিক ব্যালান্স করে চলার কথা। এই ক’দিন যা খাবেন, তার কোনওটাই স্বাস্থ্যকর হবে না, সেটা আগে থেকে জেনে নেওয়া খুব দরকার। তবে এর মধ্যেও কোন খাবারে ক্ষতি কম, কী ভাবে হাইজিন মেনে চলা যেতে পারে, সেই পরামর্শ দিতে পারি”।
দেখে নেওয়া যাক কী কী সাবধানতা মেনে চলতে হবে
১) ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি বাইরে খেতে হলে ভালো রেস্তোরাঁ বাছুন। রাস্তার খাবার না খাওয়াই ভালো। খোলা আকাশের তলায় যে সব খাবার বানানো হয়, সেখানে হাইজিন মানা অসম্ভব।
২) খুব মশলাদার খাবার না খেয়ে স্টিমড, বেকড অথবা রোস্টেড খাবার বাছুন। এতে শরীরের ওপর চাপ পড়বে না।
৩) কতটা খাচ্ছেন, তার একটা হিসেব রাখুন। একবেলা খুব স্পাইসি খেয়ে ফেললে, পরের বেলা কম স্পাইসি, মোমো জাতীয় খাবার, বা স্যুপ খেতে পারেন, তাহলে সারাদিনের ক্যালোরিতে একটু ভারসাম্য রক্ষা হবে।
৪) রাস্তার ফুচকা, আলুকাবলি দেখে লোভ সামলাতে না পারলে একদিন অন্তর খান। ফুচকার জল যত কম খাওয়া যায়, ততই ভালো। ঝাল খেতে চাইলে লাল লঙ্কার বদলে কাঁচা লঙ্কা দিতে বলবেন।
৫) উদযাপনের দিনগুলোতে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় জল সঙ্গে রাখবেন অবশ্যই। বাইরের খোলা জল একদম পান করবেন না। সঙ্গে জুস রাখতে পারেন। শরীর যাতে ডিহাইড্রেটেড না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তরল বেশি পান করতে হবে। শীতকালে কিন্তু তেষ্টা কম পায়, তবে শরীর এই সময়ে শুকিয়ে যায় বলে ঘনঘন জল পান করা দরকার।
৬) বছরের শেষটা উল্টো পালটা খেয়ে ফেলে যখন মেদ বাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায়, তখন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ফাইব্রাস জাতীয় খাবার খেতে হবে। কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমাতে হবে। সেদ্ধ সবজি, স্যালাড, ফল বেশি খেলে টানা দিন সাতেকের অনিয়ম অনেকটাই মেক আপ করা সম্ভব।