আগামী ২৩ এপ্রিল, রবিবার, সেই বহু প্রতীক্ষিত অক্ষয় তৃতীয়া। এদিন থেকে পরবর্তী ২১দিন চলে ভগবানের চন্দন শোভাযাত্রা মহোৎসব। ২১ দিন সুগন্ধি চন্দন, কর্পূর এবং অগুরু মিশিয়ে ভগবানের শ্রীঅঙ্গে লেপন করা হয়। এতে পরমেশ্বর ভগবান খুবই শীতলতা ও প্রশান্তি অনুভব করেন বলেই কথিত আছে।
অক্ষয় তৃতীয়ার অর্থ-
'অক্ষয় তৃতীয়া'। এর মধ্যে 'অক্ষয়' শব্দের অর্থ হল, যার ক্ষয় নেই। বলা হয়, এইদিন আপনি যা দান করবেন, তার অক্ষয় ফল প্রাপ্ত হয়। যে সকল পুণ্য কর্ম করবেন, তা অক্ষয় হয়ে থাকবে। চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী এই দিন অনেক দোকানে 'হালখাতা' করা হয়। মঙ্গলমূর্তি গণেশের পূজা করা হয়। এই তিথিতে বেশ কয়েকটি শুভ অনুষ্ঠানও হয় ।
কীভাবে পালিত হয়-
অক্ষয় তৃতীয়া হল চান্দ্র বৈশাখ মাসের তৃতীয় তিথি। এই বিশেষ তিথিতে অর্জিত পুণ্য বা সুকৃতির যেমন ক্ষয় নেই, তেমনই পাপেরও কোনও ক্ষয় নেই। তাই এদিন খুব সতর্কতা সহকারে দিন অতিবাহিত করা জরুরি। যেন কোন প্রকার মন্দ কর্ম না-হয়, কারও মনে কোনও কষ্ট যেন না-হয়। তাই এদিন বেশি করে হরিনাম জপ, কীর্তন, ভগবৎ ও ভক্ত সেবা করে দিন অতিবাহিত করা হয়। আমিষ আহার করা হয় না। মন্দিরে ভোগ, চন্দন, ফুল, ফল, অর্থ ইত্যাদি দান করা হয়।
আরও পড়ুন- অলৌকিক মহিমা এখানকার শিবলিঙ্গের, ভক্তরা আর্তি জানালে হাতেনাতে ফল দেন দেবাদিদেব
যে সকল তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল এই বিশেষ দিনে—
১) বিষ্ণুর অবতার পরশুরাম আবির্ভূত হয়েছিলেন। ২) রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন। ৩) গনেশ বেদব্যাসের মুখনিঃসৃত বাণী শুনে মহাভারত লিখতে শুরু করেছিলেন। ৪) চন্দনযাত্রা শুরু হয়েছিল। ৫) সত্যযুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়েছিল। ৬) কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য দান করেছিলেন। এদিনই কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়। ৭) ভক্তরাজ সুদামা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে দ্বারকায় গিয়ে দেখা করেছিলেন এবং তাঁর থেকে সামান্য চালভাজা নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সব দুঃখ মোচন করেছিলেন। ৮) দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে গিয়েছিলেন এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সখীকে রক্ষা করেছিলেন। শরণাগতের পরিত্রাতা রূপে এদিন তিনি দ্রৌপদীকে রক্ষা করেছিলেন। ৯) পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে রথনির্মাণ শুরু হয়েছিল। ১০) কেদার-বদরী গঙ্গোত্রী-যমুনোত্রীর যে মন্দির ছয় মাস বন্ধ থাকে, এইদিনেই তার দ্বার উদঘাটিত হয়েছিল।