উত্তর ভারতীয়দের আর্থিক সমৃদ্ধি দেখে ধনতেরস নিয়ে বাঙালির উন্মাদনাও ক্রমশ বাড়ছে। শ্যামাপূজার দু'দিন আগে ত্রয়োদশীতে এই ধনতেরস পালিত হয়। যেখানে সোনা, রুপো, কাঁসা, পিতল-সহ বিভিন্ন মূল্যবান ধাতু এবং নির্দিষ্ট কিছু জিনিস কেনার চল রয়েছে। ধনতেরস কথাটি এসেছে ধন এবং তেরস এই দুই শব্দের মিলনে।
Advertisment
এর মধ্যে ধনের অর্থ হল সম্পদ। আর, তেরসের অর্থ হল তেরো বা ত্রয়োদশী। পঞ্জিকা অনুযায়ী যা কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথি। এই বিশেষ তিথিতে লক্ষ্মী, কুবের এবং ধন্বন্তরীর পুজো করা হয়। তাতে আরোগ্য, ধন, আয়ু-সহ বিভিন্ন আশীর্বাদ মেলে বলেই বিশ্বাস ভক্তদের।
দৃক সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে এবছর ধনতেরস পড়েছে শনিবার ২২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টা ১ থেকে পরদিন রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আবার, অন্য পঞ্জিকা মতে শনিবার ২২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ২ নাগাদ শুরু হবে ধনতেরস। থাকবে রবিবার ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ৩ পর্যন্ত। ধনতেরসের সময়কাল শুরু হওয়ার পর থেকে ধনতেরসের পুজো শনিবার শেষ হবে রাত ৮টা ১৭-র মধ্যে। এমন দু'দিন ধরে ধনতেরসের শুভমুহূর্ত পড়েছে ২৭ বছর পর।
এই সময়ে দেবতাদের চিকিৎসক ধন্বন্তরীর পুজোর রীতি রয়েছে। শাস্ত্রমতে এই বিশেষ দিনেই আবির্ভাব হয়েছিল ধন্বন্তরীর। সমুদ্র মন্থনের ফলে দেবী লক্ষ্মীর পাশাপাশি অমৃতের কলসি হাতে দেবতাদের বৈদ্য ধন্বন্তরীও উঠে এসেছিলেন। কথিত আছে, এই বিশেষ দিনে কিনে আনা খালি পাত্র নিয়ে ঘরে ফিরতে নেই। বরং তাতে চাল, দুধ কিংবা শস্যদানা ভরে নিয়ে ফিরতে হয়। তবেই পরিবারের শ্রীবৃদ্ধি হয়।
শাস্ত্র আনুযায়ী, এই দিনটিতে ধনের দেবতা কুবেরেরও আবির্ভাব তিথি। তাই এই বিশেষ দিনে কুবেরের পূজাও করা হয়। আবার ধনতেরসে দেবী লক্ষ্মীকে অচলা করতে অনেকে কড়ি কেনেন। কারণ, কড়ি দেবী লক্ষ্মীর অত্যন্ত প্রিয়। অনেকে আবার গোটা ধনেও কেনেন এই বিশেষ দিনে।
অনেকে আবার জল রাখার পাত্র অর্থাৎ কলসিও এই বিশেষ দিনে কিনে থাকেন। কারণ, ধন্বন্তরি এই বিশেষ দিনে পূর্ণ কলস হাতে উঠে এসেছিলেন। তবে, বিশেষজ্ঞরা এই দিন কাচের জিনিস, কালো রঙের জিনিস, কাচি, ছুরি বা ধারাল অস্ত্র অথবা প্ল্যাস্টিকের জিনিস কিনতে বারণ করেন।