ষষ্ঠীর সময়সূচি
ভারতীয় প্রমাণ সময়ানুযায়ী, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩-এর রাত ১০টা ৩৫ থেকে শুরু হচ্ছে ষষ্ঠীর তিথি। থাকবে শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৩- রাত ৯টা ৮ পর্যন্ত।
কেন এই ষষ্ঠীর নাম দুর্গাষষ্ঠী?
বাংলা বছরের প্রতিমাসেই একটি করে ষষ্ঠী রয়েছে। একেক ষষ্ঠীর একেক মাহাত্ম্য। আশ্বিন মাসের শুক্লাষষ্ঠী তিথিতে শারদীয় দুর্গাপুজোর বোধনের দিন এই ষষ্ঠীর আরাধনা করা হয়। তাই এই ষষ্ঠীর নাম দুর্গাষষ্ঠী। সন্তানের মঙ্গলকামনায় এই ষষ্ঠীর আরাধনা করা হয়।
কীভাবে পালিত হয় দুর্গাষষ্ঠী ব্রত?
দুর্গাষষ্ঠী ব্রত পালনের জন্য ফুল, ফল, ধূপ, দীপ, দুর্বা, আতপচাল এবং মিষ্টির ব্যবস্থা রাখা হয়। এই দিন ব্রত পালনকারীদের জন্য অন্নভোগ বা ভাত খাওয়া নিষিদ্ধ। রাতে ফল-মূল খেয়ে থাকতে হয়। খাবার খাওয়ার আগে ষষ্ঠীর ব্রতকথা শুনতে হয়।
দুর্গাষষ্ঠী ব্রত কী?
শিব পুরাণ অনুযায়ী, একবার দেবী পার্বতী শিবের গণ বা অনুচর নন্দীকে দ্বাররক্ষার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর নির্দেশ ছিল, কেউ যেন তাঁর অনুমতি ছাড়া ভিতরে আসতে না-পারে। এমন সময়ে শিব সেখানে এসে পড়ায় নন্দী তাঁকে বাধা দেননি। তা দেখে পার্বতী ক্ষুব্ধ হন। আর, এমন অনুচর তৈরির সিদ্ধান্ত নেন, যিনি পার্বতীর কথা সর্বদা মেনে চলবেন। এরপর পার্বতী তাঁর অঙ্গরাগের চন্দন এবং হলুদ নিজের শরীর থেকে নিয়ে তা দিয়ে এক বালকের মূর্তি গড়ে তোলেন। সেই বালকের মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়। সেই বালকের মূর্তিই হল গণেশ।
শিব এসে সেকথা জানতে পেরে, সব দেবতাদের নিমন্ত্রণ করেন। বাকি দেবতারা এলেও শনিদেব আসেননি। কিন্তু, শিবের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে তাঁকেও আসতে হয়। কিন্তু, শনিদেব চোখ চাপা দিয়ে ছিলেন। কারণ, পার্বতী তাঁকে বর দিয়েছিলেন, যাঁর দিকে তিনি চাইবেন, তাঁর সঙ্গে সঙ্গে মুণ্ডচ্ছেদ হবে। কিন্তু, মহাদেব তারপরও ওই শিশুকে দেখার জন্য শনিদেবকে নির্দেশ দিলে, শনিদেবের চাউনিতে শিশুর মাথা খসে পড়ে। এরপর দেবী পার্বতীর বিলাপ সামলাতে মহাদেব নন্দীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যে উত্তর দিকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে, তার মাথা কেটে আনতে। নন্দী এক হাতির মাথা কেটে আনলে, মহাদেব তাই শিশুটির মাথায় জোড়া দিয়ে দেন।
আরও পড়ুন- দুর্গাষষ্ঠীতে আরাধনা করা হয় দেবী কাত্যায়নীর, জানেন দেবী কী বর দেন?
আরও পড়ুন- কেন রাতে হয় দুর্গাপুজোর বোধন, কী জন্য দরকার হয় বেলগাছের?
ছেলের হাতির মাথা দেখে পার্বতীর দুঃখ হলে দেবতারা শিশুটিকে আশীর্বাদ দেন, তার পুজোই সকলের আগে করা হবে। সে, সকল গণের ঈশ্বর হবে। সেই থেকে ছেলেটির নাম হয়ে যায় গণেশ। ছেলেটির মাথা হাতির মুখের মত হওয়ায়, তাঁর নাম হয় গজানন। এরপর কার্তিক গণেশকে নিয়ে পার্বতী যান তাঁর মা মেনকার কাছে। সেখানে কার্তিক, গণেশকে দেখিয়ে বলেন, 'আশ্বিনের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীতে যে মহিলা আমার পুজো করবে এবং আমার ব্রতকথা শুনবে, তাঁর আমার মত সুন্দর সন্তান লাভ হবে।' তারপর থেকে এই দুর্গাষষ্ঠীর কথা প্রচার হয়।