করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা দেশ। কিন্তু সারা দেশে, সত্যি বলতে কী সারা দুনিয়া যে এখন আরও একটি ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত, তার খবর রাখে ক'জন? আমরা যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করি ঘনঘন, তাঁরাই এই রোগে আক্রান্ত্র হই সবচেয়ে বেশি। অধিকাংশই আবার ঠিক জানিনা কোন রোগের শিকার আমরা। রোগের নাম হোয়াটসঅ্যাপাইটিস। ঘনঘন মোবাইল ফোনে টাইপ করতে করতে হাতের আঙুল অবশ হয়ে আসে না আমাদের? আসে তো? ব্যথা করতে থাকে আঙুলের ডগা। ওইটিই হল হোয়াটসঅ্যাপাইটিস।
রোগের নামটি বেশ চমৎকার না? ২০১৪ সালে প্রথম একটি মেডিক্যাল জার্নালে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছিল। ৩৪ বছরের এক রোগী প্রথম জানিয়েছিলেন তাঁর কব্জির যন্ত্রণার কথা। টানা ছয় ঘণ্টা ১৩০ গ্রাম ওজনের একটি মোবাইল হাতে নিয়ে ব্যবহার করছিলেন ওই মহিলা। ওই ছ'ঘন্টা এক নাগাড়ে দু'হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে মেসেজ করেছিলেন ওই মহিলা।
আরও পড়ুন, স্মার্ট ফোনে আটকে জীবন, মাথায় শিং গজাচ্ছে তরুণ প্রজন্মের
১৯৯০ সালে একই ধরনের এক রোগের কথা শোনা গিয়েছিল, ভিডিও গেম একটানা খেলা থেকেই ওই রোগের সূত্রপাত।
সিকে বিড়লা হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডঃ দেবাশিস চন্দ জানালেন বিশ্ব জুড়ে মহিলাদেরই হোয়াটসঅ্যাপাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ১০ জনের মধ্যে মাত্র ২ জন রোগী এক্ষেত্রে বুঝতে পারছেন, যে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপাইটিস হয়েছে।
হোয়াটসঅ্যাপাইটিস -এর লক্ষণগুলো কী?
আঙুলের ডগা দুর্বল হয়ে যাওয়া
আঙুল লক হয়ে যাওয়া
আঙুলের জয়েন্টে ব্যথা হওয়া
কব্জিতে ব্যথা হওয়া
আরও পড়ুন, স্মার্টফোনে কাটছে শৈশব, নিশ্চিন্ত ‘আধুনিক’ মায়েরা
হোয়াটসঅ্যাপাইটিস হলে কী করবেন?
ওপরে উল্লিখিত লক্ষণগুলো আপনার হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওষুধেই সেরে যাবে হোয়াটসঅ্যাপাইটিস। প্রদাহ কমে এমন মাসল রিলাক্সান্ট দিতে পারেন চিকিৎসক। কিছু ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি হলে ফিজিওথেরাপি করতে হতে পারে।
এছাড়া যা করণীয়
মোবাইলে স্ক্রল এবং টাইপ করা যথাসম্ভব কমান
একান্ত টাইপ করতে হলে কোনও একটা হাতে না করে দুটো হাতেই সমান ব্যবহার করুন
এক নাগাড়ে টানা ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি স্মার্ট ফোন ব্যভার করবেন না
মেসেজ পাঠাতে গেলে টানা টাইপ না করে ভয়েজ মেসেজ পাঠান