কথায় বলে, মাছে ভাতে বাঙালি। আর যাঁরা একটু আরামপ্রিয় মানুষ তাঁরা কিন্তু ভাত খেতে বেশিই পছন্দ করেন। বিশেষ করে দুপুরবেলা রসিয়ে কষিয়ে খেতে গেলে ভাত কিন্তু প্রয়োজনীয়। তবে এখন অনেকেই এমন আছেন যাঁরা অত্যধিক ওজন নিয়ে চিন্তিত কিংবা ডায়েট করছেন তাঁরা একেবারেই সাদা ভাত খাওয়া ছেড়ে দিয়ে শুধুই ব্রাউন রাইস খেতে পছন্দ করেন। মিথ রয়েছে, এটি নাকি ওজন বাড়তে দেয় না, ত্বক ভাল রাখে আরও অনেক কিছু।
তবে সবকিছুরই প্রয়োজন বিশেষজ্ঞের মতামত। কারণ তাঁরাই ভাল বলতে পারেন কোনটি ঠিক আর কোনটি ভুল। এমন একটি বিষয় সম্পর্কেই পুষ্টিবিদ রাশি চৌধুরীর বক্তব্য, সাদা ভাত কিন্তু ব্রাউন রাইসের থেকে গুণে এবং মানে বেশি ভাল। সেই ক্ষেত্রে যুক্তিও প্রদান করেছেন তিনি। চারটি এমন পার্থক্যের উল্লেখ করেছেন যেগুলি না জানলেই নয়!
প্রথম, ব্রাউন রাইস এবং সঙ্গেই সমস্ত শস্যদানা গুলির বাইরের অংশ ফাইটেটস কিংবা ফাইটিক অ্যাসিড দ্বারা প্রভাবিত। এবং এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে যাতে বৃদ্ধি পাওয়া কালীন এগুলি কীট পতঙ্গের দ্বারা নষ্ট না হয়। এবং এই অ্যাসিড আদতেই শস্যের মধ্যে সমৃদ্ধ ভিটামিন, মিনারেলস এবং অন্যান্য নিউট্রিশন শরীরে পৌঁছাতে দেয় না। তার সঙ্গেই এটি পেপসিন নামক অ্যাসিড শরীরে ক্ষরণ করে, হজমে সমস্যা ঘটায় - সেই কারণেই এটি খাওয়া খুব একটা লাভদায়ক নয়।
দ্বিতীয়, এর বাইরের খোলস এবং ভেতরের পাতলা আস্তরণ যেহেতু বজায় থাকে তাই কিন্তু হজমে আপনার খুবই সমস্যা হতে পারে। বলা উচিত হজম করা একেবারেই যায় না। ফলেই শারীরিক অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। পেটের গন্ডগোলের সঙ্গে সঙ্গেই দেখা দিতে পারে আন্ত্রিক গোলযোগ। তাই যাদের পেটের সমস্যা তারা সবসময় সাদা ভাতের দিকেই নজর দিন, এটি হজম করতে অনেক সহজ।
তৃতীয়, অনেকেই মনে করেন ব্রাউন রাইস ভীষণ নিউট্রিশন সমৃদ্ধ! আদতেই নয়, কারণ এতে এতই বেশি পরিমাণে ফাইটিক অ্যাসিড থাকে অন্য কোনও প্রয়োজনীয় পুষ্টি এতে ঢুকতে পারে না, কিংবা এতে অপ্রয়োজনীয় অবস্থায় থেকে যায়, সেই কারণেই এটি আপনার মত অনুযায়ী সেইভাবে পুষ্টিকর নয়।
চতুর্থ, যেহেতু চাল জলের মধ্যেই বড় হয় সেই কারণেই এতে জল থেকে বাহিত অনেক কিছুই থাকতে পারে, তার মধ্যে একটি আর্সেনিক। এবং মার্কিন প্রদেশের গবেষণা বলছে ব্রাউন রাইস বেশি মাত্রায় তুলনামূলক ৫০ শতাংশ হারে আর্সেনিক শোষণ করতে পারে।
সুতরাং, আজ থেকে ভুলভ্রান্তি শেষ হোক! না জেনে বুঝে কিন্তু খাওয়াদাওয়া করবেন না, এতে আপনারই বিপদ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন