দেবী জগদ্ধাত্রী দুর্গারই ভিন্ন রূপ। দেবী দুর্গার মতই তিনি ত্রিনয়না। তবে, দুর্গার মত দেবী জগদ্ধাত্রীর হাতের সংখ্যা ১০ নয়, চার। আবার দেবী দুর্গার মতই দেবী জগদ্ধাত্রী সিংহবাহিনী। তাঁর গলায় থাকে নাগযজ্ঞোপবীত। দেবীর দুই বাম হাতে থাকে শঙ্খ ও শার্ঙ্গধনু। আর, দুই ডান হাতে থাকে চক্র ও পঞ্চবাণ।
দেবী দুর্গার বাহন সিংহ মহিষের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। আর, দেবী জগদ্ধাত্রীর বাহন সিংহ দাঁড়িয়ে থাকে হাতির ওপর। সংস্কৃতে হাতির অপর নাম করী। কথিত আছে দেবী জগদ্ধাত্রী করী বা হস্তিরূপী অসুর করীন্দ্রাসুরকে বধ করেছিলেন। সেই কারণে তাঁকে বলা হয় করীন্দ্রাসুরনিসূদিণী।
শ্রীশ্রী চণ্ডীতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে দেবী জগদ্ধাত্রী আর দেবী দুর্গা একই। সেখানে বলা হয়েছে যে দেবী দুর্গার সঙ্গে যুদ্ধের সময় মহিষাসুর নানা রূপ ধারণ করে দেবীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু, বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। নানা রূপের মধ্যে মহিষাসুর করী বা হাতির রূপও ধারণ করেছিল। সেই সময় মহিষাসুরকে শায়েস্তা করতে দেবী দুর্গা চতুর্ভুজা রূপে আবির্ভূত হন। আর, হাতে ধরা চক্র দিয়ে হাতির শুঁড় কেটে দেন। দেবীর সেই রূপকেই বলে জগদ্ধাত্রী। আর, সেই কারণেই দেবী জগদ্ধাত্রীর বাহন সিংহ এক মৃত হাতির ওপর দাড়িয়ে থাকে।
আরও পড়ুন- খাস কলকাতায় জগদ্ধাত্রী মন্দির, যেখানে সংকটে মেলে পরিত্রাণ, বিশ্বাস ভক্তদের
শাস্ত্র অনুযায়ী, প্রতিবছর কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করা হয়। কেউ দুর্গাপূজার মত সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত মহাসমারোহে জগদ্ধাত্রী পূজার আয়োজন করেন। কেউ আবার কেবল নবমীতেই তিন বার আয়োজন করে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী পুজো শেষ করেন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের চন্দনগর, গুপ্তিপাড়া এবং কৃষ্ণনগরে মহাসমারোহে জগদ্ধাত্রী পূজার আয়োজন হয়ে থাকে। এর মধ্যে কৃষ্ণনগর এবং চন্দননগরে জনতার ভিড় বেশি থাকে। বিশেষ করে চন্দননগরে আলোর কাজ দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন।