/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/10/srk-crying-main_759.jpg)
প্রতীকী ছবি (সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)
'ভারত আবার জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে'। স্বপ্নের কাছেকাছি পৌঁছে গেছি আমরা। তবে কি না শ্রেষ্ঠত্ব মিলেছে অবসাদে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে ধরা পড়েছে এক ভয়াবহ সত্য। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অবসাদে ভোগা মানুষ ভারতীয়। অ্যাংজাইটি, স্কিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজর্ডারের মতো মানসিক ব্যাধিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন এ দেশের মানুষেরাই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে দেশের জনসংখ্যার ৬.৫ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো মানসিক রোগের শিকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভারতে ক্রমবর্ধমান অবসাদ আক্রান্তের পেছনে একটি বড় কারণ হল দেশে মনস্তত্ত্ববিদ এবং মনরোগ বিশেশজ্ঞদের অভাব। ২০১৪ সালের হিসেব অনুযায়ী দেশে মনোকর্মীদের সঙ্গে মনোরোগীর অনুপাত ১: ১ লক্ষ।
সারা দেশে মনস্তত্ত্ববিদের সংখ্যা মাত্র ৫০০০। ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্টের সংখ্যা ২০০০। সেখানে মানসিক রোগীর সংখ্যা ৫ কোটি।
২০১৪-১৫ সালের ন্যাশনাল মেন্টাল হেলথ সার্ভে অনুযায়ী প্রতি ৬ জন ভারতীয়র মধ্যে ১ জন মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত। বয়ঃসন্ধিতে রয়েছে যারা, অবসাদের দিকে ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা এদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি।
খাতায় কলমে দেশের মানসিক রোগ সংক্রান্ত আইন বলে স্বল্প খরচে মনের অসুখের চিকিৎসা করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানা হয় না সেই আইন। স্বভাবতই সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে চলে যায় চিকিৎসার ব্যয়ভার।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে মনের হাল হকিকত নিয়ে কথা বলায় সমাজের নানা ট্যাবু থাকে বলে ভুক্তভোগী তার সমস্যার কথা সবার সামনে তুলে ধরতে অস্বস্তি পান। সেলেব দুনিয়ার কেউ তার অতীত জীবনের অবসাদের কথা বললে সপ্তাহ খানেক ট্রেন্ডিং থাকে এ দেশে। এই কারণেই পাঁচটা সাধারণ মানুষ বোধ হয় নিজেকে গুটিয়ে রাখেন খোলসে। মনের অসুখগুলো আড়ালেই থেকে যায়।
বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে আরও একটি ভয়াবহ তথ্য। ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদের ২৫ শতাংশই পেশা অথবা কর্মক্ষেত্রজনিত অবসাদ।
দীর্ঘ কর্ম-সময়, ডেডলাইনের চাপ, বাড়ি থেকে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে যানজট মানুষের মনে একটু একটু করে জন্ম দিচ্ছে নানা মনের রোগের। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চি এনজি এই প্রসঙ্গে বলছেন, “কর্মক্ষেত্রে তৈরি হওয়া মানসিক অবসাদ যে শুধুই কর্মীর কর্মক্ষমতা নষ্ট করছে তা-ই নয়, নিয়োগকারী সংস্থার আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।”