চারিদিকে কোভিডের হাহাকার! মানুষ ক্রমশই সংক্রমিত হচ্ছেন করোনায়। দ্বিতীয় ডোজের পরেও মানুষের নিস্তার নেই! তাহলে কী কাজ করছে ভ্যাকসিন? এমন অবস্থায় চিকিৎসকদের এক অংশের দাবি বুস্টার দিয়েও সংক্রমণ কমানো যাবে না, কারণ এটি বর্তমানে একটি ভাইরাল ফিভার স্বরূপ। চিন্তার ভাঁজ রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও। তবে তাদের মতামত অনুযায়ী এবার নতুন রূপের ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা আবশ্যক।
ক্রমবর্ধমান এই আক্রমণের মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে সম্পূর্ণ নতুন ধাঁচের ভ্যাকসিন নির্মাণের আহ্বান জানানো হয়েছে, যেগুলি জেনেটিকালি এবং অ্যান্টি-জেনেটিকালি বর্তমানে সঞ্চালিত sars-cov-2 এর রূপের কাছাকাছি। তাদের বক্তব্য, এই তৃতীয় ডোজ কিংবা ভ্যাকসিন বুস্টার নতুন উদীয়মান রূপগুলির বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না।
কী জানানো হয়েছে WHO-এর তরফে?
তারা জানিয়েছেন, মূল ভ্যাকসিন কম্পোজিশনের পর ভিত্তি করে কখনই যে বুস্টার নির্মাণ করা হবে সেই থেকে মানুষকে সংক্রমণ থেকে বাঁচানো সম্ভব নয়। তাদের অ্যাডভাইজর কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, যবে থেকে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছে তারপর থেকে কম করে পাঁচটি রূপকে কনসার্ন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এবং সবকটি মধ্যেই রয়েছে তফাৎ। ভ্যারিয়েন্ট বদলের সঙ্গে সঙ্গেই তার তীব্রতা, ধরন এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা সবকিছুই বদলেছে। তবে পুরনো মডিউলের ভ্যাকসিন সেভাবে নতুন সংক্রমিত ভ্যারিয়েন্ট গুলির বিপরীতে কাজ করবে না এটাই স্বাভাবিক! তবে ওমিক্রন যে শেষ কনসার্ন ভ্যারিয়েন্ট নয় সেই সম্পর্কেও জানিয়েছেন তারা। সুপারিশ এমনই মিলেছে যে বিকল্প কোনও বিবেচনা করতে হবে।
তবে এ প্রসঙ্গে চিকিৎসকদের কী মতামত? তাঁরা আদৌ প্রয়োজন মনে করছেন নতুন ভ্যাকসিনের?
ইন্ডিয়ান স্পাইনাল ইঞ্জুরি সেন্টারের চিকিৎসক কর্নেল বিজয় দত্ত জানিয়েছেন, মানুষকে বুস্টার দেওয়ার পাশাপাশি নতুন ভ্যাকসিন তৈরি করা একেবারেই বুদ্ধিমানের কাজ। নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর সঙ্গে জড়িত সবকিছুর সঙ্গে লড়বার ক্ষমতা থাকা দরকার। নতুন ট্রান্সমিশন, মলিকিউল বজায় থাকলে মানুষের পক্ষেই ভাল। তবে এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বয়স্কদের এবং ফ্রন্ট লাইন কর্মীদের টিকা দেওয়া অনিবার্য।
চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, যখন নতুন একটি ভ্যাকসিন তৈরি করা হবে তখন সবকটা কনসার্ন ভ্যারিয়েন্ট থেকে ইমিউন প্রতিক্রিয়া নিয়েই গবেষণা করা হবে। Sars-cov-2 এর নতুন রূপের সঙ্গে লড়তে গেলে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। সব রূপের থেকে অ্যান্টিজেন ধারণকারী একটি মাল্টি ভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে।
চিকিৎসক সুচিন বাজাজ ধারণা দিয়েছেন, এত তাড়াতাড়ি একে সাধারণ ফ্লু হিসেবে তকমা দেওয়া সঠিক নয়। এখনও অনেক কিছু জানা প্রয়োজন। এর তীব্র এবং দীর্ঘ প্রভাব কী হতে পারে সেই নিয়েও দোনামনা রয়েছে। অমিক্রন থেকেও পরবর্তীতে হার্ট, ফুসফুস, মস্তিষ্কের কোষ এবং ব্লাড সেলকে সুস্থ রাখতে শনাক্ত করা হয়েছে। সেই কারণেই নির্দিষ্ট একটি ভ্যাকসিন সকলের অবশ্যই প্রয়োজন বলেই জানিয়েছেন।