Advertisment

কালরাত্রির দুর্গাসপ্তমী, বাঙালির কালী আর অবাঙালির কালীতে ফারাক কেন আর কোথায়?

বাঙালির বেশিরভাগ কালীমূর্তিই দক্ষিণাকালীর রূপ। যাঁর মূর্তিকেই দুর্গাসপ্তমীতে আরাধনা করে সন্তুষ্ট থাকেন ভক্তরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Kali and Durga

দেবী কালরাত্রি (প্রতীকী) ও ডানদিকে এবছর শিবমন্দির-এর দুর্গাপ্রতিমা।

অবাঙালির কালী
কারণাগম, চণ্ডীকল্প এবং ভবিষ্য পুরাণ অনুযায়ী, দেবী মহাকালী বা কালী উগ্ররূপা। উদ্ধার হওয়া প্রস্তরলিপিতেও দেবী কালীর উগ্ররূপের বর্ণনা রয়েছে। আবার, মার্কণ্ডেয় পুরাণের দেবীমাহাত্ম্যে যেখানে দেবী কালীর বর্ণনা আছে, সেখানেও দেবীর ভয়ানক মূর্তির কথাই বলা আছে। সেই বর্ণনা অনুযায়ী, দেবী করালবদনা, অসিপাশধারিণী, নৃমু্ণ্ডমালিনী, বিচিত্রখট্টাঙ্গধরা, ব্যাঘ্রচর্মবসনা, শুষ্কমাংসা, অতিভীষণা, অতিবিস্তৃতমুখী, লোলজিহ্বা আরক্তা, কোটরগত নয়নবিশিষ্টা। দেবীর কণ্ঠস্বরে দিঙমণ্ডল মুখরিত হয়। তিনি মহাদেবী বা অম্বিকার ভ্রূকুটি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। দেবী চণ্ড-মুণ্ড নামের দৈত্যদের বধ করেন। তাঁদের ছিন্ন মুণ্ড দেবী অম্বিকাকে উপহার দেন। তাই দেবীর নাম চামুণ্ডা। আর এই কালীরই পূজা করে উত্তরভারত। তবে, সর্বত্র নয়। মিথিলা বা উত্তর বিহারে বাঙালির মতই কালীমূর্তি এবং কালীমন্দির দেখতে পাওয়া যায়।

Advertisment

বাঙালির কালী
আর, বাঙালি সাধারণত যে কালীর পূজা করে থাকে, তা হল দক্ষিণাকালী। যাঁর বর্ণনা পাওয়া যায় কালীতন্ত্র নামের তন্ত্রগ্রন্থে প্রথম অধ্যায়ের ২৭ থেকে ৩৩ পাতায়। এই বর্ণনা অনুযায়ী দেবী কালীর ধ্যান বা পূজা চলে। এই ধ্যান অনুযায়ী, দেবী করালবদনা। তিনি ঘোরা, মুক্তকেশী, চতুর্ভুজা, শ্যামা এবং দিগম্বরী। তিনি মুণ্ডমালা বিভূষিতা, মহামেঘপ্রভা, ঘোরদংষ্ট্রা, পীনোন্নত পয়োধরা, শ্মশানবাসিনী, শবরূপী, মহাদেবের হৃদয়ের ওপরে অবস্থিতা। দেবীর বামহাতে সদ্যবিচ্ছিন্ন নরমুণ্ড এবং খড়্গ। আর, ডানহাতে বরাভয় মুদ্রা। দেবীর কণ্ঠে ঝোলানো মুণ্ড থেকে গলে আসা রক্তে অঙ্গ সিক্ত। দেবীর ঠোঁটের প্রান্ত থেকে গলে পড়ছে রক্তের ধারা। কিন্তু, দেবীর সেই কঠিন রূপও বাঙালির সহ্য হয়নি। বাঙালি তাই কালীর মূর্তি তৈরি করেছে দক্ষিণা বা উদার রূপে। যেখানে তিনি সাধকের সাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে তাঁর অভীষ্ট পূরণ করছেন। ঠিক যেন রামকৃষ্ণ আর রামপ্রসাদের ভাবনার মত।

আরও পড়ুন- আজ এমন দিন, যা বদলে দিতে পারে আপনার ভাগ্য, জানেন কীভাবে?

এসব ছাড়াও পার্থক্য
অবাঙালির কালী বা দেবী চামুণ্ডার পায়ের তলায় একটি শব থাকে। যা শত্রুদলনের প্রতীক। বাঙালি তার কালীকল্পনায় এই শবকেই শিবে পরিণত করেছে। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুযায়ী চামুণ্ডা জিহ্বাললনভীষণা। অর্থাৎ, তিনি সর্বদাই ক্ষুধায় জিভ বের করে আছেন। অর্থাৎ, তিনি শত্রুর রক্ত পান করবেন বলে তৃষ্ণার্ত এবং ক্ষুধার্ত জিভ বের করে আছেন। বাঙালি, তাকেই শিবের ওপরে পা দিয়ে জিভ বের করা হিসেবে কল্পনা করে নিয়েছে।

Kali Puja Durga Puja pujo
Advertisment