দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণ হল মহাষ্টমী। ষষ্ঠী থেকে দশমী, এই চারদিনে বেশ কয়েকবার দেবীর অঞ্জলি হয়। কিন্তু, অষ্টমী পুজোয় অঞ্জলি দেওয়ার জন্যই ভক্তরা বেশি উৎসাহ দেখান। এজন্য সকাল থেকে উপবাস, সাতসকালে স্নান-সহ তাঁদের নানা আচার পালন করতেও দেখা যায়। ঠিক কী কারণে, অষ্টমী তিথিকে এত গুরুত্ব দেওয়া হয়?
পুরাণ অনুযায়ী, মহাষ্টমীতেই দেবী দুর্গাকে নানা ধরনের অস্ত্র, পদ্মের মালা, রত্নহার দিয়ে সাজিয়ে তুলেছিলেন দেবতারা। কারণ, পুরাণের মতে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণানবমী তিথিতে দেবতাদের তেজ পুঞ্জীভূত হতে শুরু করে। আর, সেই পুঞ্জীভূত তেজ আশ্বিনের সপ্তমী তিথিতে বিশেষ রূপ ধারণ করে। সেই তেজের সাহায্যেই অষ্টমী তিথিতে দেবী মহিষাসুরমর্দিনীকে সাজিয়ে তুলেছিলেন দেবতারা।
সেই রীতি মেনে অষ্টমী তিথিতে দেবী দুর্গাকে বিশেষ রূপে এবং উপাচারে সাজিয়ে তোলেন ভক্তরা। ২০২২ সালে অষ্টমী তিথি পড়েছে ৩ অক্টোবর (১৬ আশ্বিন)। পূর্বাহ্ন সকাল ৯টা ২৯ পর্যন্ত। যদিও কালবেলার হিসেব অনুযায়ী, সকাল ৮টা ২৯-এর মধ্যেই শারদীয়া দুর্গাদেবীর মহাষ্টম্যাদিকল্পারম্ভ ও মহাষ্টমীবিহিত পূজা গ্রহণযোগ্য। তবে, মহাষ্টমী তিথি রয়েছে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। যদিও পঞ্জিকার ভেদে মহাষ্টমী দুপুর ৩টে ৩৯ মিনিট ১৮ সেকেন্ড পর্যন্ত বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- নবপত্রিকা আসলে কী? দুর্গাপুজোয় কেন কলাবউকে স্নান করানো হয়?
কথিত আছে, মহাষ্টমীতে দেবীর পুজো করার সময় সঠিক নিয়ম মেনে চললে জীবনে কখনও আর্থিক দিক থেকে অবনতি ঘটে না। সবসময় সাফল্য আসে। জীবনে বহুদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। ব্যবসা আর কর্মক্ষেত্রে বাধা দূর করতে অনেকে আবার অষ্টমীতে সূর্য ওঠার আগে স্নান করে লাল কাপড় পরে দেবীর পুজো করেন।
দেবীকে লাল রঙের চুরি, পয়সা এবং বাতাস নিবেদন করেন। আবার অনেকে মহাষ্টমীতে ১১টি পিপল গাছের পাতায় ঘি ও সিঁদুর মিশিয়ে রামের নাম লেখেন। সেগুলো হনুমানের চরণে অর্পণ করেন। ভক্তদের বিশ্বাস এতে জীবনের নানা বাধা কেটে যায়। সামাজিক সম্মান বৃদ্ধি পায়।