ধনসম্পদ ও ঐশ্বর্যের দেবী মা লক্ষ্মী। জগৎকে আলোকিত করে রাখেন দেবী। তবে তাঁর বাহন কুরূপ পেঁচা। গোটা ব্রহ্মাণ্ডের যিনি আরাধ্যা, তাঁর বাহন কেন এমন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অতি তুচ্ছ এই জীব?
তাত্ত্বিকদের মত হল, মা লক্ষ্মীর অবিশ্যিক গুণ যেমন তপস্যা, ক্ষমা, সেবাভাব, প্রেম, তিতিক্ষা, পবিত্রতা অর্জন করতে চান, তাঁকে অবশ্যই পেঁচার ধর্ম পালন করতে হবে। কী এই পেঁচার ধর্ম?
আরো পড়ুন: আগামী বছর অক্টোবরেই পুজো-মহালয়া! জেনে নিন মা দুগ্গার আগমণের দিনক্ষণ
ধর্মে বলা হয়েছে, যিনি জাগতিক মায়া মোহ উপেক্ষা করে সাধনার ব্রত নিয়ে নির্জনে সেবাকাজে আত্মোৎসর্গে ব্রতী হবেন তিনি শ্রীময়ীর কৃপাদৃষ্টি লাভ করবেন। পেচক দিনে ঘুমায়, রাতে জেগে থাকে। নিদ্রা ও জাগরণ দিয়ে সে পরমার্থকামী সাধক-সাধিকাদের অনুকরণের যোগ্য। পেচক গোপনচারী। অতি গোপনে এরা বাস করে, লোকচক্ষুর অন্তরালে। সাধকের সাধনাও দৃশ্যমান জগতের বাইরে হওয়া উচিত।
ধান যা মানুষের আহার, তার শত্রু ইঁদুরদের সংহার করে সে ধনরক্ষার ব্রত পালন করেছে। যা মানব হিতৈষীর কাজে লাগে।
ঋগ্বেদে বলা হয়েছে, পেঁচা আসলে যমের দূত। যম অর্থ সংযম, যম মানে ধর্ম। ধনোপার্জনের ক্ষেত্রেও সংযমবুদ্ধি ও ধর্মীয় চেতনা জাগ্রত রাখার প্রতীক পেঁচা। যমদূত পেচক তাঁর নিজের বৃত্তি ও প্রভুর দৌত্যের কথা স্মরণ করিয়ে মৃত্যুচিন্তা ও আত্মচিন্তা জাগ্রত করে সাধকের মনে।
কোজাগরীর রাতে মা লক্ষ্মী খোঁজ নেন কে জাগ্রত রয়েছে। জেগে থাকা ব্যক্তিকেই তিনি ধনের সন্ধান দেন। পেঁচা প্রতি রাতেই জেগে থাকে। দিনে ঘুমায়।
একই সঙ্গে ধনের উপার্জন এবং ও ঐশ্বরিক চিন্তা- দুই গুণ-ই পেঁচকের মধ্যে বিদ্যমান। লক্ষ্মীর বাহন অর্থে যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এসব কারণেই হয়ত শাস্ত্রকাররা পেঁচককে লক্ষ্মীর বাহন হিসাবে ধরেছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন