Advertisment

কেন মহালয়ার দিনই চক্ষুদানের রীতি, করা হয় চণ্ডীপাঠ?

ঘরোয়া পুজোয় আগে অন্য রীতি পালিত হত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Shilpi

দেবীর চক্ষুদান

মহালয়ার মাধ্যমে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটে। আর, সূচনা ঘটে দেবীপক্ষের। অমানিশার অন্ধকারের অবসান ঘটিয়ে সূচনা হয় মহাতেজের আলোয় উদ্ভাসিত শুভ শক্তির। আর, সেই কারণেই মহালয়াতেই দেবী চণ্ডীর শ্লোক উচ্চারণ। অর্থাৎ, দেবী দুর্গার আবাহন করা হয়। শারদীয়া দুর্গাপুজোর একটি গুরুত্বপর্ণ অনুষঙ্গ মহালয়া।

Advertisment

মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনও মানুষ বা দেবতার মহিষাসুরকে হত্যা করার ক্ষমতা ছিল না। ফলে অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চেয়েছিল। সেই কারণেই তাকে বধ করতে দেবীকে আহ্বানের প্রয়োজন হয়েছিল।

আগেকার দিনে বারোয়ারি পূজা ছিল না। রাজবাড়ি কিংবা জমিদার বাড়িতেই দুর্গাপুজো হত। রথের দিন দেবীর কাঠামো পুজো হত। মহাসপ্তমীর দিন নবপত্রিকা প্রবেশ করত। সেদিনই দেবীর চক্ষুদান পর্ব হত। ক্রমে এই নিয়ম বদলেছে। মহালয়ার দিন যেহুতু দেবীপক্ষের সূচনা হয়, তাই পরবর্তীকালে মহালয়ার দিনই দেবী প্রতিমার চক্ষু আঁকার চল শুরু হয়। চক্ষুদানের মাধ্যমে মূর্তিশিল্পী বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়।

আর, মহাসপ্তমীর সকালে শুদ্ধাচারে ডান হাতে কুশের অগ্রভাগ নিয়ে দেবী দুর্গাকে কাজল পরানো হয়। মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে, প্রথমে ত্রিনয়ন, তারপর বাম চক্ষু ও শেষে ডান চক্ষু আঁকা হয়। পুরোহিতের উপস্থিতিতে লেলিহান মুদ্রায় মোট ১০৮ বার বীজমন্ত্র জপ করা হয়। এর পরেই মৃন্ময়ী থেকে চিন্ময়ী রূপে প্রতিষ্ঠিত হন দুর্গা।

আরও পড়ুন- ভবানীপুরে বাড়ির পুজো, ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটিশরূপী অসুরকে দমন করেন দুর্গা  

তবে শুধু দেবী দুর্গাই নন। তাঁর সঙ্গে থাকা লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী ও কার্তিক- এমনকী তাদের বাহনদেরও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে বারোয়ারি পুজোর সংখ্যা বহুগুণে বেড়েছে। তাই, মহালয়ার বদলে অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন শিল্পীরা কাজের সুবিধার জন্য দোবী দুর্গার চক্ষু আঁকেন। সব মিলিয়ে একথা বলা যেতে পারে, হিন্দু ধর্মে মহালয়ায় চক্ষুদানের বিশেষ গুরুত্ব আছে। কারণ, চক্ষুদান না-হলে প্রতিপদ থেকে দেবী অসুরদের বিরুদ্ধে পূর্ণাবয়বে লড়াই করতে পারবেন না, বলেই মনে করা হয়।

Mahalaya durga pujo
Advertisment