কথিত আছে তারকাসুরকে বধের জন্যই কার্তিকের জন্ম হয়েছিল। কারণ, তারকাসুর বর পেয়েছিল, তাকে শুধু শিব পার্বতীর ছেলেই মারতে পারবে। অত্যাচারী তারকাসুরকে বধ করতে দেবতাদের পরামর্শে মহামায়া জন্ম নেন পার্বতী রূপে। তিনি শিবের মত পুত্রলাভের আশায় তপস্যা করেন। একটি পর্ণ বা বা পাতাও তিনি তপস্যাকালে মুখে না-দেওয়ায়, তাঁর নাম হয় অপর্ণা।
তারমধ্যেই কামদেবের পঞ্চবাণে শিবের কাম জাগ্রত হয়। পার্বতীর সঙ্গে তাঁর মিলন হয়। যা তেজদীপ্ত অগ্নিপিণ্ডের সৃষ্টি করে। অগ্নিদেব থেকে গঙ্গা, কেউই সেই তেজ সহ্য করতে পারেননি। শেষে তা বনের ছয় কৃত্তিকার গর্ভে ভাগ করে দেওয়া হয়।
এর ফলে ছয় মাথাবিশিষ্ট কার্তিকের জন্ম হয়। কৃত্তিকার গর্ভে জন্ম হয় বলে, তাঁর নাম হয় কার্তিক। কিন্তু, এই কৃত্তিকারা ছিলেন ঋষিপত্নী। তাঁরা কার্তিককে ধারণ এবং লালন-পালন করায় ঋষিরা অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এই সন্দেহে কৃত্তিকাদের ত্যাগ করেন। তাঁর কৃত্তিকা মায়েদের সম্মান রক্ষার্থে কার্তিক প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওঠেন। তিনি অনূর্ধ্ব ১৬ বছরের ছেলেমেয়েদের অনিষ্ট করার জন্য কৃত্তিকাদের বলেন।
আরও পড়ুন- প্রচণ্ড জাগ্রত! খাস কলকাতার এই মন্দিরে বছরভর ভিড় করেন হাজার হাজার ভক্ত
পাশাপাশি, অপদেবতাদের নির্দেশ দেন, যাতে তারা সকলের গর্ভের ভ্রূণ নষ্ট করে দেন। কার্তিকের সেই পরিকল্পনা কার্যকরী হওয়ায় শোকে জর্জরিত হয়ে পড়েন মর্ত্যবাসী। নানা জায়গায় ঘুরেও কাজ না-হওয়ায়, তাঁরা শেষ পর্যন্ত দেবতাদের পরামর্শে কার্তিকের শরণাপন্ন হন। সন্তান কামনা এবং তার মঙ্গল কামনায় কার্তিক পুজোর চল সেই সময় থেকে।
একইসঙ্গে, কার্তিকের সৌন্দর্য আর বলিষ্ঠতার কারণে তাঁরমতো সন্তান পাওয়ার আশায় শুরু হয় কার্তিক পুজো। কার্তিক তারকাসুরকে বধ করেন। দেবরাজ ইন্দ্র তাঁকে দেবসেনাপতি নিযুক্ত করেন। পাশাপাশি, কার্তিকের স্ত্রী তথা দেবরাজ ইন্দ্রের কন্যা দেবসেনাপতি হন কার্তিকের স্ত্রী। ষড়ানন কার্তিকের স্ত্রী বলে তাঁর নাম হয় ষষ্ঠী। তিনি হন জন্মসূত্রের দেবী। দম্পতিরা তাই সন্তানের জন্ম ও তার মঙ্গল কামনায় কার্তিক এবং ষষ্ঠীর পুজো করে থাকেন।