/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/10/kumari-puja.jpg)
কুমারী পুজো
দুর্গাপুজোর এক বিশেষ আকর্ষণ হল কুমারী পুজো। বেলুড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে এই কুমারী পুজো হয়। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় হয় কুমারী পুজো। শাস্ত্রের রীতি অনুযায়ী অষ্টমীর দিন থেকে শুরু হয় কুমারী পুজো। এই পুজো চলে নবমীতেও।
কুমারী পুজোর সময় দেবী দুর্গার ন'টি রূপের কথা মাথায় রেখে ন'টি মেয়েকে সাজানো হয়। তাদের খাওয়ানো হয়। পরানো হয় লাল চুড়ি। দেওয়া হয় নারকেল, চাল এবং সামর্থ্য মত অর্থ। যে ব্যক্তি এই কুমারী পুজোর আয়োজন করে থাকেন, তাঁকে জীবনে কখনও আর্থিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হয় না। এই পুজোর আয়োজক সকল কাজে সফলতা পান।
শাস্ত্র অনুযায়ী ১৬ বছরের কমবয়সি অরজঃস্বলা ও অবিবাহিতা কন্যাকেই কুমারী রূপে পুজো করা হয়। ‘কুমারী’ যাঁকে বাছা হয়, তাঁকে দেবী দুর্গার প্রতিভূ বলে মনে করা হয়। সেই কারণে বিভিন্ন শাস্ত্রে খুব যত্ন সহকারে কুমারী নির্বাচনের কথা বলা আছে। কারণ, ‘কুমারী’কে হতে হবে দেবীর মতোই পবিত্র ও প্রশান্ত।
আরও পড়ুন- দুর্গাপুজোয় অষ্টমী তিথি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কেন, কতক্ষণ থাকছে এই বিশেষ সময়?
এক থেকে ১৬ বছর বয়স অবধি কুমারীদের বিভিন্ন নামও শাস্ত্রে দেওয়া আছে। যেমন, একবছরের কুমারীর নাম সন্ধ্যা। দুই বছরের কুমারীর নাম সরস্বতী। তিন বছরের ত্রিধামূর্তি, চার বছরের কালিকা। পাঁচ বছরের সুভগা, ছয় বছরের উমা। সাত বছরের মালিনী, আট বছরের কুষ্ঠিকা। নয় বছরের কালসন্দর্ভা, ১০ বছরের অপরাজিতা। ১১ বছরের রুদ্রাণী, ১২ বছরের ভৈরবী। ১৩ বছরের মহালক্ষ্মী, ১৪ বছরের পীঠনায়িকা। ১৫ বছরের ক্ষেত্রজ্ঞা ও ১৬ বছরের কুমারীকে অন্নদা বা অম্বিকা বলা হয়।
অষ্টমীর সকালে কুমারীকে গঙ্গার পবিত্র জলে স্নান করিয়ে শুদ্ধ করে লাল বেনারসী শাড়ি পরানো হয়। ফুলের গয়না দিয়ে সাজানো হয়। পায়ে পরানো হয় আলতা। পুজো হওয়া অবধি কুমারীকে উপবাস করতে হয়। এরপর যথাসময়ে দেবী দুর্গার মূর্তির সামনে কুমারীকে বসিয়ে দেবীর হাতের একটি পদ্মফুল তার হাতে দিয়ে পুজো আরম্ভ করা হয়। ১৬ টি উপকরণ দিয়ে শুরু হয় কুমারী পুজোর আচার। পরে অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস—এই পাঁচ উপকরণ দিয়েও কুমারীকে পুজো করা হয়।