scorecardresearch

অনেকই তো নাম ছিল, দেবীর নাম হঠাৎ দুর্গা হতে গেল কেন?

শিবের নির্দেশেই এক উগ্র রূপ ধারণ করেন দেবী পার্বতী।

mahatma gandhi asur durga puja hindu mahasabha

আশ্বিন মাস পড়েছে। আশ্বিন মাস মানেই শারদীয়া দেবী দুর্গার আরাধনা। বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো। যার জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন বাংলার আট থেকে আশি। এখন প্রশ্ন হল দেবীর নাম দুর্গা হতে গেল কেন?

পুরাণ অনুযায়ী, অসুর হিরণ্যাক্ষর ছেলে ছিলেন রুরু। তাঁর বংশধর ছিলেন দুর্গম অসুর। সমুদ্রমন্থনের সময় অসুরদের অমৃতের ভাগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এই নিয়ে দেবতাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন অসুররা। তাঁরা প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। দুর্গম অসুর প্রবল তপস্যা করেন। তিনি বর পান, নারীই তাঁকে হত্যা করবে। তবে, সেই নারী সাধারণ হবেন না। তাঁর অনাবদ্ধকে আবদ্ধ করা ক্ষমতা থাকবে।

এই বর পাওয়ার পরই দুর্গম অসুর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি দেবতাদের থেকে স্বর্গ ছিনিয়ে নেন। পাশাপাশি, দেবতাদের যাঁরা পুজো করতেন, সেই মুনি-ঋষিদের ওপর অত্যাচার শুরু করেন। বাধ্য হয়ে দেবতারা নিজেদের রক্ষার জন্য শিবের দ্বারস্থ হন। দেবতাদের দুর্দশার কথা শুনে শিব তাঁর স্ত্রী দেবী পার্বতীকে এই সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেন।

শিবের নির্দেশে দেবী পার্বতী এক উগ্র রূপ ধারণ করেন। তিনি দুর্গম অসুরের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। বিন্ধ্যাচলে ১০ দিন ধরে এক মহাযুদ্ধ চলে। সেই যুদ্ধে দেবী দুর্গম অসুরের অসংখ্য সৈন্যকে হত্যা করেন। অবশেষে হত্যা করেন দুর্গম অসুরকে। সেই থেকেই দেবী ‘দুর্গা’ নামে পরিচিত হন।

আরও পড়ুন- সতীপীঠের দেবী বর্গভীমা, দুর্গাপুজোয় দেবী রূপ ধরেন রাজরাজেশ্বরীর, বদলায় পুজোর আচার

দেবী পার্বতীই অন্যরূপে মহাকালী। তাঁর অনাবদ্ধ কাল অথবা সময়কে আবদ্ধ বা বন্দি করার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি কালের ঊর্ধ্বে, কালের নিয়ন্ত্রণকারিণী। তাই দুর্গম অসুরের হত্যায় ব্রহ্মার আশীর্বাদ বা বরও মিথ্য হয়নি। আর, সেই কারণেই সংস্কৃত অভিধান ‘শব্দকল্পদ্রুম’ অনুযায়ী, ‘দুর্গং নাশয়তি যা নিত্যং সা দুর্গা বা প্রকীর্তিতা’। যার বাংলা তর্জমা করলে- যিনি ‘দুর্গ’ নামে অসুরকে হত্যা করেছিলেন, তিনিই ‘দুর্গা’ নামে পরিচিতা। আবার শাস্ত্রমতেই দুর্গতি নাশ করার জন্য দেবীর নাম হয়েছে দুর্গা।

হিন্দুশাস্ত্রে সংস্কৃতে ‘দুর্গা’ শব্দের অর্থ– ‘দৈত্যনাশার্থবচনো দকারঃ পরিকীর্তিতঃ। উকারো বিঘ্ননাশস্য বাচকো বেদসম্মত। রেফো রোগঘ্নবচনো গশ্চ পাপঘ্নবাচকঃ। ভয়শত্রুঘ্নবচনশ্চাকারঃ পরিকীর্তিত।’ যার বাংলা হল- দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ ও শত্রুকে যিনি নাশ করেন, তিনিই দুর্গা।

শাস্ত্রমতে, দেবীর ‘দ’ অক্ষর দৈত্যবিনাশের প্রতীক। ‘উ’-কার অক্ষর বিঘ্ননাশের প্রতীক। ‘র’- রোগ নাশের প্রতীক। ‘গ’- অক্ষর পাপনাশের প্রতীক। এছাড়া ‘অ’-কার অক্ষর শত্রুনাশের প্রতীক। দেবী মহিষাসুরকে হত্যা করে দুর্গতি নাশ করেছিলেন, তাই তিনি মহিষাসুরমর্দ্দিনী দুর্গা।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Lifestyle news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Why is the goddess called durga