কার্তিক মাসের ঘোর অমাবস্যায় হয় কালীপুজো। এ দিনেই লক্ষ্ণী গণেশের পুজো দিয়ে পালিত হয় দীপাবলিও। পুজোর সন্ধ্যায় ধুমঝাম করে প্রদীপ বা বিদ্যুতের আলো দিয়ে চারপাশ সাজিয়ে তোলার রেওয়াজ প্রচোলিত আছে। কৃত্রিম আলোর জ্যোৎস্নায় যেন ভরে যায় অমাবস্যার ঘোররাত্রি। কেন কালীপুজোর সময়ে আলোয় আলোয় ভরে ওঠে চারিদিক?
এর নেপথ্যে রয়েছে একটি ছোট্ট কারণ। মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষের অবসানে হয় দেবীপক্ষের সূচনা। মহালয়ার দিন পিতৃপুরুষকে জল দেওয়ার রীতি রয়েছে। শাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই দিন স্ব-স্ব লোক থেকে বিদেহী আত্মারা তাঁদের উত্তরপুরুষের হাত থেকে জল গ্রহণে জন্য পৃথিবীলোকে আসেন। এ লোকে তাঁরা থাকেন মহালয়া থেকে দীপাবলি পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রায় একমাস ধরে মর্ত্যেই বিচরণ তাঁদের। দীপাবলির পুণ্যলগ্নে আত্মারা ফেরস্বলোকে ফিরে যান। কিন্তু এই ফেরার সময় তো ঘোর অমাবস্যা। লোকবিশ্বাস, আত্মাদের এই ফিরে যাওয়ার অন্ধকার পথ আলোকিত করার উদ্দেশ্যেই দীপাবলির সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানোর রীতি। সে কারণেই এ দিন আলোর বাজির রোশনাইয়ে আলোকিত করা হয় লোকলোকান্তরের আকাশপথরেখা।
এ ভাবেই কালীপুজোর সঙ্গে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা জড়িয়ে পড়েছে। যা আধুনিক সময়ে প্রদীপের জায়গা নিচ্ছে বৈদ্যুতিন টুনি বা এলইডি।
আরও পড়ুন- পৌষ থেকে মাঘ সংক্রান্তি, ঢাকের তালে নৃত্য করেন দেবী, মন্দিরেই থাকতে হয় ঢাকিকে
দীপাবলী বা কালীপুজোকে কেন্দ্র করে মাটির প্রদীপ নির্মাতাদের ব্যবসা জমে ওঠে। হাতে আসে অর্থ। যা তাঁদের গোটা বছরের ভরনপোষণের অনেকটাই। এখন অবশ্য মাটির প্রদীপের বদলে চল বেড়েছে টুনি, রাইস বা এলইডি-র। হরেক রকম আলোর পসরায় জমে ওঠে বিকিকিনি।
আরও পড়ুন- বাঁশির সুরে মোহিত হন মা! ভোগে থাকে ইলিশ, সবুজকালীর মাহাত্ম্য সত্যিই চমকপ্রদ!