প্রতি বছর ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে গণেশ চতুর্থীর উৎসব পালিত হয়। এই বছর গণেশ চতুর্থী পালিত হবে ১৯ সেপ্টেম্বর। গণেশজিকে দুঃখনাশকারী দেবতা বলা হয়। ভগবান গণেশ সমস্ত দুঃখ দূর করে তাঁর ভক্তদের ইচ্ছা পূরণ করেন। গণেশ পুজোয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রিদ্ধি-সিদ্ধি। কারা তারা?
গণেশের দুই স্ত্রী
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, ভগবান গণেশের দুই স্ত্রী ছিলেন। ঋদ্ধি ও সিদ্ধি। কিন্তু জানেন কি ভগবান গণেশের কেন দুই স্ত্রী? পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, একবার গণেশ তপস্যা করছিলেন। ঠিক তখনই দেবী তুলসী তপস্যারত ভগবান গণেশের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। অদ্ভূতদর্শণ গণেশকে দেখে তিনি মুগ্ধ হন। দেবী তুলসী বিয়ে করতে চেয়েছিলেন গণেশকে। অথচ ভগবান গণেশ নিজেকে ব্রহ্মচারী বলে দেবী তুলসীর প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। এই প্রত্যাখানে দেবী তুলসী অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছিলেন। ফলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ভগবান গণেশকে অভিশাপ দেন। দেবী তুলসীর অভিশাপ ছিল, গণেশের একটা নয়, দুটো বিয়ে হবে।
কেন গণেশ পুজোয় তুলসী ব্যবহার হয় না?
এই অভিশাপে ভগবান গণেশও অত্যন্ত রেগে দেবী তুলসীকে পাল্টা অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন আপনার বিয়ে হবে একজন অসুরের সঙ্গে। এই কারণেই ভগবান গণেশের পূজায় তুলসী ব্যবহার করা হয় না।
ব্রহ্মচারী থাকতে চেয়েছিলেন গণেশ, তাহলে হল কী?
অন্য এক কাহিনী মতে, ভগবান গণেশ ব্রহ্মচারী থাকতে চেয়েছিলেন। কারণ তিনি মনে করতেন, তাঁর বড় পেট এবং হাতির মতো মুখের কারণে তাঁকে কেউ বিয়ে করবে না। এই কারণে তিনি ব্রহ্মচর্য পালন করা শুরু করেন। এমনকী তিনি অন্যান্য দেবতাদের বিয়েতেও বাধা তৈরি করছিলেন। গজাননের এহেন সিদ্ধান্তে বাকি দেবতাগণ তাঁর উপর বিরক্ত হন ও সকলে ভগবান ব্রহ্মার কাছে পৌঁছে যান। তখন ব্রহ্মার যোগবলে দুই কন্যা ঋদ্ধি ও সিদ্ধি আবির্ভূতা হন। তাঁরা উভয়েই ভগবান ব্রহ্মার মানস কন্যা। এর পরে ভগবান ব্রহ্মা এই দুই কন্যাকে নিয়ে শ্রীগণেশের কাছে পৌঁছান। ওই দুই কন্যাকে শিক্ষা দিতে বলেন।
আরও পড়ুন- গণেশ পুজো করছেন? জানেন কেমন মূর্তি কিনলে আপনি রাতারাতি হবেন লাভবান?
ব্রহ্মার নির্দেশ মত গণেশ রিদ্ধি-সিদ্ধিকে শিক্ষা দিতে শুরু করেন। এমতাবস্থায় গজাননের কাছে যখনই কোনও দেবতার বিয়ের খবর আসত, তখনই ঋদ্ধি ও সিদ্ধি তাঁকে বিভ্রান্ত করত। একদিন গণপতি খবর পেলেন যে সব বিয়ে কোনও সমস্যা ছাড়াই হয়েছে। এর ফলে গজানন ঋদ্ধি-সিদ্ধির উপর অত্যন্ত রেগে যান। তিনি রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে ঋদ্ধি সিদ্ধিকে অভিশাপ দিতে শুরু করেন। তারপর ব্রহ্মাজী সেখানে পৌঁছে গণেশের সামনে ঋদ্ধি ও সিদ্ধির বিয়ের প্রস্তাব দেন। এরপর বেশ ধুমধাম করে বিয়ে করেন দু'জনেই। এরপর তাদের দুই পুত্রের জন্ম হয় যাদের নাম শুভ ও লাভ।