শ্যামাপূজার আগে চতুর্দশীকে বলে ভূত চতুর্দশী। এই রাতে ১৪ বাতি দেওয়াই নিয়ম। মনে করা হয়, এই রাতে মৃত পূর্বপুরুষরা মর্ত্যে আসেন। সেই জন্য ১৪ পূর্বপুরুষের স্বার্থে ১৪ বাতি জ্বালানো হয়। সেই সব প্রেতাত্মাদের পুজো করা হয়। জল দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি রয়েছে শাস্ত্রীয় কাহিনিও। সেটা দৈত্যরাজ বলির কাহিনি। তিনি স্বর্গ, মর্ত্য, পাতাল অধিকার করেছিলেন। সেই সময় দেবতারা স্বর্গ পুনরুদ্ধারের জন্য ভগবান বিষ্ণুর শরণাপন্ন হন। ভগবান বিষ্ণু তখন বামন অবতারে বলির কাছে আসেন। তাঁর কাছে মাত্র তিন পা জমি চান। বলি রাজি হয়ে যান।
এরপর বামন অবতার তাঁর দুই পা স্বর্গ এবং মর্ত্যে দেন। আর, নাভি থেকে বেরিয়ে আসা তৃতীয় পা পাতালে না-দিয়ে বলির মাথায় দেন। আর, পাতাল শাসনের ভার বলির হাতে তুলে দেন। পাশাপাশি, তিনি আশীর্বাদ করেন, বলি এখন থেকে মর্ত্যেও পুজো পাবেন। সেই থেকে শ্যামাপুজোর আগের রাতে দৈত্যরাজ বলি সহস্র ভূত-প্রেত, অশরীরী আত্মা নিয়ে শ্যামাপুজোর আগের রাতে পৃথিবীতে পুজো নিতে আসেন। আবার আরেকটি শাস্ত্রীয় মতে, এই রাতেই দেবী চামুণ্ডা চোদ্দজন ভূত অনুচরকে নিয়ে মর্ত্যে আসেন। অশুভ শক্তি দূর করতেই তাঁর এই আগমন।
আরও পড়ুন- ধনতেরস কী ও এর গুরুত্ব, ২৭ বছর পর দু’দিন পড়েছে এই শুভমুহূর্ত
আবার কথিত আছে এক ব্রাহ্মণ ও তাঁর স্ত্রী বাড়ি নোংরা করে রাখতেন। ক্রমশ নোংরা হয়ে সেই বাড়িতে ভূতের উপদ্রব শুরু হয়। সেই ভূত তাড়াতে ১৪ ধরনের গাছের পাতা দিয়ে বাড়িতে গঙ্গাজল ছিটিয়েছিলেন ব্রাহ্মণ। সেই থেকে ভূত চতুর্দশীতে ১৪ শাক খাওয়ার নিয়ম চালু হয়। এই বিশেষ দিনে যে ১৪ শাক খাওয়া হয়, সেগুলো হল- ওল, সরষে, নিম, বেতো, গুলঞ্চ, শুষনি, হেলেঞ্চা, জয়ন্তী, কালকাসুন্দে, পলতা, ভাটপাতা, ঘেঁটু, সরষের পাতা। এই সব শাকের ঔষধি গুণ রয়েছে। কিন্তু, এই সব শাক খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই বাজারে ১৪ শাক নামে যে বিভিন্ন ধরনের গাছের ছেঁড়া পাতা বিক্রি হয়, তাই খাওয়া হয়।