/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/06/Jamai-sasthi-Lead-pic.jpg)
Express photo Shashi Ghosh
সদ্য বিবাহিতাকে পুড়িয়ে খুন, বৌ কে ফেলে পালিয়েছে বর, কিংবা পণের দাবি না মেটায় বন্ধ হয়েছে বিয়ে। অস্বস্তির এই ব্রেকিংগুলোকে আজ ছাপিয়ে যাবে জামাইষষ্ঠীর হেডলাইন। সে জামাই যত বড় ভিলেনই হোক, আজকের দিনটায় সে নায়ক। তবে কথাতেই রয়েছে, জন-জামাই-ভাগ্না, তিন নয় আপনা। তাহলে কেন অযথা জামাই ষষ্ঠী পালন, আগুন দামের বাজারে কেনই বা টাকা নষ্ট করে টাটকা ইলিশটা, ফলটা কিনে আনা, এমনই প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তাঁদের আরও প্রশ্ন, যখন 'বৌমা ষষ্ঠী' জাতীয় কিছুর রেওয়াজ নেই তখন খামোখা একটা পরের ছেলেকে ডেকে এনে এমন আদিখ্যেতার কী দরকার বাপু? প্রাচীন এইসব নিয়ম কানুন মানতে নারাজ আধুনিক নেটিজেনরা। এবং জামাইষষ্ঠী নিয়ে আপাতত সরব স্যোশাল মিডিয়া।
হিন্দুশাস্ত্রে বাকি রীতিরেওয়াজের পাশাপাশি এরও ব্যাখা রয়েছে৷ পঞ্চব্যঞ্জন রেঁধে খাওয়ানোর পাশাপাশি জামাইকে পাখার হাওয়া করা হয়, দেওয়া হয় শান্তি জলের ছিটে! মা ষষ্ঠীর আশির্বাদ স্বরূপ জামাইয়ের হাতে হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে দেওয়া হয়, এই রীতিই চলে আসছে ফি বছর। তবে অনেকেই মনে করেন, মেয়ে যাতে ভাল থাকে সেই মতলবে জামাইকে "তোষামোদ" করার এই রীতি বন্ধ হওয়া দরকার। এসব শুনে আবার ষষ্ঠী দেবীর পুজোর দোহাই দিচ্ছেন শাশুড়ীকুল। তাঁদের দাবি, স্বার্থ নয়, মা যেমন নীলষষ্ঠীর উপোস করেন সন্তানের জন্য, তেমনই জামাইয়ের মঙ্গলের কথা ভেবেই জামাইষষ্ঠী। এখানে স্বার্থ নেই একচিলতেও।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/06/Jamai-sasthi-in-Kolkata-Express-photo-Shashi-GhoshJamai-Sashti-1-001.jpg)
আরও পড়ুন: Health Tips for Summer Heat Wave: তীব্র গরমে মাথায় রাখুন এই দিকগুলো, নচেৎ বিপদ অবধারিত
সদ্য বিবাহিতা পৃথা মুখোপাধ্যায়ের কথায় জামাইকে খাওয়ানোর জন্য আলাদা কোনও তিথির প্রয়োজন হয় না। যে কোনদিন বাড়িতে ডেকে রেঁধে খাওয়ালেই হল। "আমার মতে একটা নির্দিষ্ট দিতে গরমে ঘেমে নেয়ে রান্না করে কোনও শাশুড়ীরই জামাইষষ্ঠী পালন করার কোনও দরকার নেই," বলছেন তিনি।
শশুড়বাড়ির পথে হাঁটতে হাঁটতেই সৌখিন ভট্টাচার্য জানালেন, যদি জামাইদের কথা ভেবে একটা বিশেষ দিন বরাদ্দ করা হয় তাতে মন্দ কী? মাঝে মাঝে একটু তোষামোদ কে না চায়? তেমনই এক শাশুড়ি জানালেন, আজকের যুগে দাঁড়িয়ে শাশুড়ী জামাইয়ের বন্ডিং ঐ আদ্যিকালের রেওয়াজের মুখাপেক্ষী নয়। জামাইদের জন্য আজকের দিনে যা হয় সব ভালবেসেই।
এ তো গেল জামাইষষ্ঠী রোখার আন্দলোনের কথা। তবে ভাগাড়ের মাংস, আপেলে মোম, আমে নিপার ভয়, পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, ট্যাক্সিভাড়ার তান্ডবের পাশাপাশি ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রাও বাদ সাধতে পারে না বাঙালির তেরো পার্বনে। কাজেই ঘাম মুছতে মুছতে সূয্যিমামাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জামাইরা চলেছেন 'ঘামাইষষ্ঠী' খেতে, আর একদল চিরকুমার আক্ষেপ করছেন সকাল থেকে।