করোনা সংক্রমণের কারণেই ক্রমশ বাড়ছে আতঙ্ক। মানুষের মধ্যে একরকম ভয় যেমন কাজ করছে তেমনই থাকছে নিয়ম না মানার স্পৃহা। একনাগাড়ে বছর দুই তিনেক ধরে মাস্ক পড়তে পড়তে যেন একরকম মানুষের অতিষ্ঠ অবস্থা। তবে যারা মাস্ক পরে সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে না আসার পরেও সংক্রমণের কবলে পরছেন তাদের পক্ষে কিন্তু বিষয়টি বেশ সমস্যার।
এই প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতামত কী?
WHO এর তরফে জানানো হয়েছে এই কথাটি একেবারেই অস্বীকার করা যায় না যে একজন সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেই অন্য জন সংক্রমিত হতে পারেন তবে তার একটি দূরত্ব আছে। নির্দিষ্ট পরিমাপ করা দূরত্ব না থাকলে একজন ব্যক্তি হাঁচি, কাশি, এবং শ্লেষ্মা দ্বারা আক্রান্ত হতেই পারে তবে যারা একেবারেই সংক্রমিত কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেননি তাদের কেন এই সমস্যা?
কারণ প্রসঙ্গেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, একজন সংক্রমিত ব্যক্তি লক্ষণ বুঝতে পারেন ২/৩ দিন পর থেকে তাই সেই সময়ের পূর্বে তার শরীরে ভাইরাসের হদিশ থাকে না এই তথ্যটি একেবারেই ভুল। এবং সেই সময় থেকেই তাদের মধ্যে বাসা বাঁধতে থাকে ভাইরাস এবং মারণ রোগ। তবে একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, একে চিকিৎসার ভাষায় প্রি সিম্পটেমেটিক বলা হয়ে থাকে। এবং এই সময় কিন্তু ভাইরাসের মিউটেশন অবশ্যই বেশি মাত্রায় থাকে, তাই সবকিছু মানা হলেও একজনের থেকে আরেকজন সংক্রমিত হতে পারে।
ভাইরাস তরল কণা হিসেবেও এই সময় আক্রমণ করতে পারে?
অবশ্যই পারে! বিশেষ করে অজানা পরিবেশে এবং বদ্ধ জায়গায়। আপনি হয়তো জানেনই না যে এমন কিছু হতে পারে। করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কাশি, কিংবা হাঁচি ড্রপলেট আকারে বাতাসের সঙ্গে মিশে গিয়ে তরল কণার সৃষ্টি করতে পারে। সেগুলি আপনার অজান্তেই চোখ, নাক কিংবা মুখের সংস্পর্শে এলেই ক্ষতি করতে পারে। আবার যদি এমন কোনও জায়গায় আপনি ঐ মুহুর্তে অবস্থান করেন যেখানে সঠিক মাত্রায় মুক্ত বায়ু চলাচল করছে না, তবে কিন্তু আরও সুযোগ সংক্রমিত হওয়ার।
চিকিৎসকদের মতামত কী?
তারা বলছেন, বেশিরভাগ মানুষ এখন উপসর্গ হীন এবং তারা নিজেরাও জানতে পারছেন না যে তারা সংক্রমিত। সুতরাং যেই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে চারিপাশে এমন কেউ থাকতেই পারে যিনি আপনাকে সংক্রমিত করে তুলতে পারে। তারা আগেও জানিয়েছিলেন যে স্পর্শকাতর এই ভাইরাস, অবশ্যই স্কিনের মাধ্যমেও ফুসকুড়ি জাতীয় সমস্যার সৃষ্টি করে এবং আপনাকে সংক্রমিত করতে পারে। এবং অবশ্যই আপনার শরীরের ইমিউনিটির ওপর ভিত্তি করেই এর বহিঃপ্রকাশ সম্ভব, তাই মনে রাখবেন উপসর্গ হীন কারওর থেকে আপনি সংক্রমিত হলেও আপনার মধ্যে তীব্র লক্ষণ কিন্তু থাকতেই পারে।
চিকিৎসকরা আরও জানাচ্ছেন, উপসর্গহীন রোগীদের শরীর থেকে এটি বিচ্ছিন্ন ভাবে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই এই বিস্তার রোধ করতে গেলে নিজেদেরকে সতর্ক থাকা আবশ্যিক! তার মধ্যেই প্রচুর মানুষ ভয়ে টেস্ট করছেন না, ফলেই রোগ লুকিয়ে চুরিয়ে আপনাকে সংক্রমিত করতেই পারে। ভাল করে সংকোচ থাকলে পরীক্ষা করানো খুবই দরকার, নাহলেই আপনার থেকে দশজনের সমস্যা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন