Advertisment

দেশের জন্য প্রাণ দিয়েও বিস্মৃত সব বীরাঙ্গনারা

স্বাধীনতা অন্দোলনে নারীদের ভূমিকা ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কারণ একই সঙ্গে দু'রকমের লড়াই লড়তে হচ্ছিল তাঁদের। একটা লড়াই সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে, অন্যটা আবার এই সমাজের পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অলংকরণ-অভিজিৎ বিশ্বাস

বিংশ শতকের তিনের দশক। অবিভক্ত বাংলায় তখন ব্রিটিশ বিরোধী ঢেউ। ততদিনে পুরুষদের পাশাপাশি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মিছিলের মুখ হয়ে উঠতে শুরু করেছে মেয়েরাও। কলকাতা, ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকায় বিশেষ করে স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোভাগে আসতে শুরু করেছেন কলেজ পড়ুয়া মহিলারা।

Advertisment

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই মেয়েরা একটু একটু করে আন্দোলনের দিকে ঝুঁকছিল। একই সঙ্গে কলেজ থেকেই অস্ত্রবিদ্যায় তালিম নিতে শুরু করেছিল মেয়েরা। ক্রমশ এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই হয়ে উঠল মহিলাদের অধিকার, নারী স্বাধীনতা নিয়ে মুক্ত আলোচনার মঞ্চ।

ভারতীয় উপমহাদেশে নারী অন্দোলনের সূচনার সময়কাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে। অনেকের মত উনিশ শতকের গোড়াতেই নারী আন্দোলনের জন্ম। তখন মূলত সমাজ সংস্কারমূলক কাজের ওপরেই বেশি জোর দিয়েছিলেন দেশের মহিলারা। সতী দাহ প্রথা, বাল্য বিবাহ, কন্যা ভ্রূণ হত্যার মতো বর্বরোচিত কিছু প্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দিয়েই মহিলাদের সামনে আসা শুরু।

উনিশ শতকের শেষ ভাগ থেকে মহিলারা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠলেন জাতীয় কংগ্রেসের হাত ধরে। স্বাধীনতা অন্দোলনে নারীদের ভূমিকা ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কারণ একই সঙ্গে দু'রকমের লড়াই লড়তে হচ্ছিল তাঁদের। একটা লড়াই সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে, অন্যটা আবার এই সমাজের পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে, যাকে জয় করার জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক, আইনি এবং রাজনৈতিক সংস্কার দরকার।

এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, যে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে কিন্তু মহিলাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা যথেষ্ট কমই হয়েছে। পুরুষদের দেখিয়ে দেওয়া পথে চলেই কেবল ক্ষান্ত হয়নি বাংলার দামাল মেয়েরা, তাঁরা অস্ত্র ধরেছে, নিষিদ্ধ সংগঠন করেছে, ব্রিটিশ বিরোধী সাহিত্য প্রকাশ করেছে, বিপ্লবে অংশও নিয়েছে সরাসরি। প্রীতিলতা, মাতঙ্গিনীর মতো মহিলারা দেশের জন্য রক্ত ঝরিয়েছে, প্রাণও দিয়েছে। আবার বীণা দাস, লাবন্যপ্রভা ঘোষেরা, যারা দেশের জন্য, দেশকে স্বাধীন দেখবে বলে লড়ে গিয়েছেন অক্লান্ত, শেষ জীবনে দারিদ্রের কারণে মারা গিয়েছেন, এই দেশ তাঁদের মনে রাখেনি।

Advertisment