Advertisment

World Book Day: স্মার্টফোন-ট্যাবলেটের যুগে এই গ্রামটাই আস্ত একটা লাইব্রেরি!

পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট এই গ্রামে রয়েছে মারাঠি সাহিত্যের বিরল কিছু বই, বহু পুরোনো ম্যাগাজিন। সবচেয়ে মজার কথা, এই যে এত এত বই, এদের কোথায় রাখা হয় জানেন?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

এই সেদিন পর্যন্ত দেশ বিদেশের পর্যটক এখানে আসত স্ট্রবেরির চাষ দেখতে। স্ট্রবেরির বাগানে এবার নতুন সংযোজন, হাজার পনেরো বই। বলছি মহারাষ্ট্রের এক গ্রামের কথা। সাতারা জেলার ভিলার গ্রাম। ভারতে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। টোকিও, ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া, মিনেসোটার মতো শহরে এই ভাবনা নতুন না, কিন্তু খোদ নিজের দেশে বই-পোকাদের কথা ভেবে আস্ত একটা গ্রাম। ভাবা যায়?

Advertisment

পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট এই গ্রামে রয়েছে মারাঠি সাহিত্যের বিরল কিছু বই, বহু পুরোনো ম্যাগাজিন। সবচেয়ে মজার কথা, এই যে এত এত বই, এদের কোথায় রাখা হয় জানেন? ভাবছেন নিশ্চয়ই সরকার থেকে আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোটেও না। পুরনো স্কুল, মন্দির, কমিউনিটি হল, গ্রন্থাগার এমনকি গ্রামবাসীদের নিজের বাড়িতেও থাকার বন্দোবস্ত হয়েছে ওদের। নতুন করে বানাতে হয়নি কিছুই।

বেশির ভাগ বই ভিলারের নানা পরিবার সরকারকে দান করেছে খুশি মনে। মারাঠি সাহিত্যের পাশাপাশি আগামী দিনে হিন্দি আর ইংরেজি সাহিত্যও স্থান পাবে এই বই-এর গ্রামে, বলছেন বাসিন্দারা। সাকুল্যে ৫০০০ লোকের বাস, অথচ বই রয়েছে ১৫ হাজারের বেশি। ইন্টারনেটের যুগে বই পড়া তো কমেই আসছে ক্রমশ। উপহার হিসেবেও কদর কমেছে। তবু কালো কালো ছাপা অক্ষরগুলো নিয়েই এখনও স্বপ্ন দেখছে কিছু মানুষ।

আরও পড়ুন, বিশ্ব বই দিবস: ছুটির মেজাজে কি বাঙালি কিঞ্চিৎ বই-মুখো?

পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে মানুষ বই-এর টানেই আসবে এখানে, আশাবাদী ভিলারবাসী। টান অবশ্য আগেও কিছু কম ছিল না। পাহাড়ে ঘেরা সবুজ গ্রাম, স্ট্রবেরি ক্ষেত, কাছেই মহাবালেশ্বর-পাঁচগানি, মোটের ওপর প্রকৃতি কিছু মাত্র কার্পণ্য করেনি। বিপুল বই-এর সম্ভারে এবার চোখের সঙ্গে মনও জুড়োবে বাইরে থেকে ঘুরতে আসা মানুষের।

সাহিত্য আর শিল্পকে বোধহয় আলাদা করা যায়নি কোনোদিনই। ভিলারও তার ব্যাতিক্রম নয়। সারা গ্রামে ২৫টা জায়গাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল বই-এর ঘর হিসেবে। সেখানে বুঝি যেমন তেমন করে বই রাখা হবে? প্রতিটা বাড়িতে নিজেদের শিল্পকর্মের ছাপ রেখেছেন ৭৫জন শিল্পী। বাড়ির দেওয়াল জুড়ে কোথাও আঁকা হয়েছে মারাঠাদের গৌরব গাঁথা, কোথাও জীবন্ত হয়ে উঠেছে ইতিহাস।

তবে হ্যাঁ, বই পড়তে হলে ওখানে বসে পড়তে হবে। পড়া শেষে যেখানকার বই, সেখানে রেখে যাওয়াই নিয়ম। সম্পূর্ণ নিখরচায় পড়তে পারবেন আপনার পছন্দের সাহিত্য। আর রক্ষণাবেক্ষণের যা খরচ, গ্রামবাসী স্বেচ্ছায় তুলে দিচ্ছে তা। বৃষ্টির জায়গা ভিলার, আর্দ্রতা থেকে বাঁচাতে হবে হাজার পনেরো বই। বহু যত্নে বেড়ে ওঠা স্বপ্নগুলোকে ভিজতে দিলে চলবে না যে!

Advertisment