চিরকালই আতঙ্ক উদ্রেককারী নাম ক্যান্সার। দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে এই মারণ রোগের নিষ্ঠুর অত্যাচার। কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সার যতটা না মারাত্মক, তার চেয়ে বেশি আতঙ্কের। কোনো একদিন ছোট্ট কোনো রোগের উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে জানা যায় অগোচরে বেড়ে ওঠা দুঃসংবাদটির কথা। তখন আফসোস হয়, কেন কয়েকদিন আগে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হইনি। তাই এই মুমূর্ষু সময়ে পৌঁছনোর আগে সবারই জানা প্রয়োজন, ক্যান্সারের ঝুঁকি কতটা, কী কী উপসর্গ দেখা দিলেই সতর্ক হয়ে উঠবেন আপনি।
গলায় অথবা মুখ, টনসিল, লালা গ্রন্থি, সাইনাস, নাক এবং ঘাড়ের লিম্ফ নোডে প্রথম ধাপে ক্যান্সার ধরা পড়লে তা থেকে মুক্তির পথ মিলতে পারে।
আমেরিকার ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রের মতে, "এই রোগটি সাধারণত ল্যারিনক্স (ভয়েস বক্স) বা ফ্যারিনক্স (গলা) কে বিশেষভাবে আক্রমণ করে। সাধারণত ল্যারিনক্স, এসোফ্যাগাস, ফুসফুস বা গলায় ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। চিকিৎসা শেষ হওয়ার পরে দেখা যায়, কিছু রোগের ক্ষেত্রে ফুসফুস, মুখ, গলার পার্শ্ববর্তী অংশে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে।
গলায় ক্যান্সারের সংক্রমণ নির্দিষ্ট অবস্থানের উপর নির্ভর করে। রোগের লক্ষণ কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে আসে না। যার ফলে সবসময় শনাক্ত করাও সম্ভব হয় না। কীভাবে বোঝা যেতে পারে কোপ বসিয়েছে ক্যান্সার, তার ব্যাখ্যা দিলেন দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের সিনিয়র পরামর্শদাতা ডাক্তার রমেশ সরিন।
গলায় আলসার বা গলায় ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ একই। প্রথমত, ক্ষতিকারক খাবার খাওয়ার কারণে হতে পারে। তবে তার জন্য ভুগতে হবে দুই থেকে তিন সপ্তাহ। কিন্তু যদি দেখা যায়, চার থেকে ছয় সপ্তাহ পার করে যাওয়ার পরও একই সমস্যা রয়ে গেছে, তাহলে অবশ্যই চেকআপের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাঃ সারিনের মতে, আলসার অতটা যন্ত্রণাদায়ক নয়, কিন্তু তাকেও গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।
ধূমপান সর্বদা গলার ক্যান্সারের শীর্ষ কারণ। যাঁরা তামাক, পান মসলা অথবা মদ ও তামাক একইসঙ্গে সেবন করেন, তাঁদের গলায় ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
মুখের ভিতরে সাদা দাগ হওয়া, জিহ্বার আস্তরণে জ্বালা বা অভ্যন্তরীণ গালের জ্বালা ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি। জিহ্বায় ছোট ফুসকুড়ি হওয়াও অন্য উপসর্গ।
আরো একটি উপসর্গ হলো, কন্ঠস্বরে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দেবে, অর্থাৎ গলা ভেঙে থাকবে বা কথা বলতে অসুবিধা হবে। যদি তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এই সমস্যা থাকে, তবে এটি ল্যারেনজিয়াল ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
ঘাড় বা মুখের কোনো অংশ যদি অস্বাভাবিক ফুলে যায়, বা মাংস পিন্ড জমাট বেঁধে যায়, এবং তা যদি তিন সপ্তাহের মধ্যে না সারে, তাহলে তাও ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
Read the full story in English