"I was born there on 13 May 1857- three days after the outbreak of the outbreak of the Great Indian Mutiny" - এর বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায় সিপাহী বিদ্রোহ যেদিন শুরু হয় তার ঠিক ৩ দিন পর অর্থাৎ ১৮৫৭ সালের ১৩ মে আমার সেখানে জন্ম হয়। - এমন ঐতিহাসিক সময়ে ভারতের মাটিতে জন্ম হয় নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী রোনাল্ড রসের। যিনি অ্যানোফিলিস মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ার জীবাণু আবিষ্কার করেন। তাও আবার একটা মশার পেট কেটে। বিশ্ব মশা দিবস উপলক্ষে আসুন তাঁকে একটু স্মরণ করা যাক।
১৮৯৭ সালের ১৮ জুন বিজ্ঞানী রোনাল্ড রস তৎকালীন মাদ্রাজের সেকান্দ্রাবাদে ১৯ তম মাদ্রাজ ইনফ্যান্ট্রিতে তাঁর নির্দিষ্ট পদে যোগদান করেন। এখানে কাজ করতে করতেই ১৮৯৭ সালের ২০ অগস্ট মশার পাকস্থলিতে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন ম্যালেরিয়ার এই জীবাণুকে। যদিও এই আবিষ্কার করার জন্য তাঁর কাছে বড় সাহায্য হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী স্যার প্যাট্রিক ম্যানসন। উনি রোনাল্ড রসকে ম্যালেরিয়ার জীবাণুগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তবে সে যাই হোক, এ কাজে বিজ্ঞানী রোনাল্ড রসের এই আবিষ্কারের অবদান আলাদা করে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এই আবিষ্কারের জন্য তিনি নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন।
এটা ছবির পরের প্য
কে এই রোনাল্ড রস? কী সম্পর্ক তাঁর ভারতের সঙ্গে? রোনাল্ড রসের জন্ম ভারতের আলমোড়া অঞ্চলে। ইনি বিজ্ঞানী হিসাবে পরিচিতি পেলেও তাঁর মনেপ্রাণে ইচ্ছে ছিল যে তিনি একজন লেখক হবেন। তাই হয়তো ‘Memoirs, with a Full Account of the Great Malaria Problem and Its Solution Ronald Ross’ এর ভূমিকায় তিনি জানিয়েছিলেন, এই বইটা তিনি শুধুমাত্র চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত মানুষদেরই নয়, সাধারণ পাঠককেও উদ্দেশ্য করেছেন। আর তাই তিনি এটা ‘মেময়ার’ বা স্মরণিকার ঢঙে লিখেছেন। যাইহোক, ইংল্যান্ডে চিকিৎসাবিদ্যার পড়াশুনা শেষ করে তিনি ফিরে আসেন ভারতে এবং ১৮৮১ সালের ৫ এপ্রিল তৎকালীন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল সার্ভিসে সার্জেন হিসাবে যোগদান করেন। সেই শুরু। এরপর ধীরে ধীরে তাঁর কর্মজীবন যত এগিয়েছে ততই তিনি এগিয়েছেন তাঁর যুগান্তকারী আবিস্কারের দিকে।
আরও পড়ুন- ডায়াবেটিসে মদ্যপান করা উচিত নাকি নয়? জেনে নিন
বিজ্ঞানীর লেখা ‘মেময়ার’ অনুসারে ১২৫ বছর আগে ২০ অগস্ট সেকান্দ্রাবাদে মশার পেট কেটে তার পাকস্থলীর মধ্যে তিনি খুঁজে পান পরজীবী জীবাণু প্লাসমোডিয়ামকে। শুধু তাই নয় তিনি এই জীবাণুর সমগ্র জীবনচক্রকেও আবিষ্কার করেন। তবে ‘দি লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন’ এই দিনটাকে বিশ্ব মশা দিবস হিসাবে পালন করতে শুরু করে ১৯৩০ থেকে। সবশেষে এই বলতে হয় এই আবিস্কার করে বিজ্ঞানী রোনাল্ড রস যেমন শত বছর আগে ম্যালেরিয়া চিকিৎসার দিগন্ত খুলে দিয়েছিলেন এবং সর্বোপরি মানুষকে মশাবাহিত রোগ এই থেকে সাবধান করেছিলেন তেমনই আজও এই দিনটা পালিত হয় এই উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখেই। আজও প্রতিকারের চেয়ে সাবধানতাই শ্রেয়। তাই যখন কলকাতায় বর্তমানে পুনরায় ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রভাব দেখা দিচ্ছে তখন বিশ্ব মশা দিবস উপলক্ষে আমাদের উচিত মশার কামড় থেকে যতটা পারা যায় সতর্ক থাকা ও সাবধানতা অবলম্বন করা।
তথ্যসূত্র: Ross, Ronald, Memoirs, with a Full Account of the Great Malaria Problem and Its Solution Ronald Ross, উইকিপিডিয়া