আপনার যদি খুব শ্বাস নিতে কষ্ট হয় কিংবা হাঁপানি অথবা অস্থমা রোগী হন তবে ইনহেলার কিন্তু আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী। বিশেষ করে শীতকালে। এবং একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, যে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে প্রচুর মানুষের নতুন করে হার্ট এবং ফুসফুসের সমস্যা শুরু হয়ে গিয়েছে তাই তাদের কাছেও এটি না থাকলেই নয়।
রিপোর্টার মাধ্যমে দেখা গেছে হাঁপানি কিংবা এই শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। যার প্রকোপ প্রায় ৩০ মিলিয়ন রোগী ভুগছেন। শিশুদের মধ্যেও দেখা গিয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ বাচ্চারা এই সমস্যার অন্তর্ভুক্ত। চিকিৎসক বিকাশ মিত্তাল বলছেন, ইনহেলার অনেকেই ব্যবহার করেন, আবার অনেকেই যথেষ্ট ভয় পান কারণ বেশ কিছু ভুল তথ্য মানুষকে এটিকে ব্যবহার করা থেকে দূরে রাখেন। তবে এই শ্বাসযন্ত্র জাতীয় সমস্যার সমাধান করতে ইনহেলারের থেকে ভাল কিছুই নেই।
রয়েছে বেশ কিছু যুক্তি তক্কো গপ্পো! চিকিৎসক বিকাশ সেই সম্পর্কেই খোলসা করে ধারণা দিয়েছেন যাতে মানুষের মনের রটনা একেবারেই মিটে যায়। সেগুলি কী কী?
ধারণা : রোজ ইনহেলার ব্যবহার করলে মানুষের অভ্যাস বাড়তে থাকে
সত্যতা : হাঁপানি কিংবা শ্বাসকষ্টের সমস্যা কিন্তু ভীষণ তীব্র এবং কষ্টদায়ক। এবং সেটিকে সুস্থ করার এই একমাত্র উপায় ইনহেলার। সবসময় এটি ব্যবহার করলেই অভ্যাসে পরিণত হবে এমন নয়। এর ব্যবহারে অনেক সময় মানুষ স্বল্প সময়ের মধ্যে রেহাই পান, আবার অনেকের একটু সময় বেশি লাগে। অনেকের ক্ষেত্রেই রোজের প্রশ্নও থাকছে। তবে চিকিৎসক যদি মনে করেন যে পরবর্তীতে এটির প্রয়োজন নেই, তবে তিনি কিন্তু এটিকে সুযোগ বুঝে বন্ধ করে দিতেই পারেন। সাধারণ সুগার প্রেসারের ওষুধের মতই এটিও আপনার সুস্থ থাকার পাসওয়ার্ড।
ধারণা : ইনহেলারে স্টেরয়েড থাকে, যেটি ক্ষতি করতে পারে
সত্যতা : অনেকেই ভাবেন ইনহেলারে যে স্টেরয়েড থাকে সেটি আপনার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায়। দুর্বল হার কিংবা স্বাস্থ্য বৃদ্ধির মত সমস্যা সৃষ্টি করে। তবে এতে মাইক্রো গ্রামের থেকেও কম স্টেরয়েড থাকে। যেহেতু এগুলি ট্যাবলেট নয় সরাসরি নাকে দেওয়া হয় তাই অল্প পার্শপ্রতিক্রিয়া থাকে। কিন্তু হাঁপানির ক্ষেত্রে এই প্রদাহজনিত ওষুধ দেওয়া খুবই দরকার। হাঁপানির উপসর্গকে কমাতেও এটি কার্যকরী, না ব্যবহার করলে সমস্যা আরও বাড়বে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।
ধারণা : ইনহেলার শুধু হাঁপানির গুরুতর পর্যায়ে ব্যবহার করা হয়
সত্যতা : ইনহেলার ওষুধ থাকে যেটি শুধু সাম্প্রতিক কষ্ট থেকে রেহাই দেয় না বরং দীর্ঘ মেয়াদি হাঁপানি থেকে রক্ষা করতে পারে। এটি দীর্ঘস্থায়ী তবে নিয়ন্ত্রণ যোগ্য। যদি সঠিক সময় চিকিৎসা না করা হয় তবে সমস্যা বাড়তেই থাকে। তাই ইনহেলার এর প্রধানতম চিকিৎসা। নিয়মিত ব্যবহার করলে ক্ষতি হয় না।
ধারণা : সাধারণ ওষুধ ভাল কাজ করে ইনহেলারের থেকে
সত্যতা : একেবারেই নয়! বরং এই জাতীয় ওষুধগুলো কাজ করতে দেরি করে, কারণ সেগুলি ওরাল মেডিকেশন। আর অন্যদিকে এই ইনহেলার সরাসরি মুখের মাধ্যমে পুষ করা হয়, তাই যথেষ্ট পরিমাণে চটজলদি কাজ করে। তাহলে আর ভুল নয়, এবার নিজের সুস্থতা বজায় রাখতে অবশ্যই সঠিকভাবে ইনহেলার প্রয়োগ করুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন