Advertisment

গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী সমস্যা হতে পারে? জানুন

গর্ভাবস্থায় কী সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে জিকা ভাইরাস? জেনে নিন এর কারণ, উপসর্গ এবং চিকিৎসার উপায় সম্পর্কে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Zika virus, Zika virus prevention, Zika virus cause, জিকা ভাইরাস

জিকা ভাইরাস

মশাবাহিত নানান ভাইরাসের শিকার মানুষ আগেই। এবার তার দোসর হয়েছে জিকা ভাইরাস। ৮ই জুলাই কেরালাতে প্রথম এক গর্ভবতী মহিলার শরীরে এই ভাইরাসের খোঁজ মেলে। পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, জিকা ভাইরাস মূলত এডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশা কামড়ানোর ফলে হতে পারে। সাধারণত সকালে এবং বিকেল এর প্রারম্ভেই এই মশা কামড়ানোর আশঙ্কা বেশি ।

Advertisment

কী কী কারণে হতে পারে?

জিকা ভাইরাস একেবারেই ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়ার মতো নয়। যদিও বা নির্দিষ্ট প্রজাতির মশার কামড়ের ফলেই এর সূত্রপাত তবে মূলত, রক্ত, প্লাজমা এমনকী অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় মায়ের থেকে সন্তানের শরীরেও এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই।

উপসর্গ: ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর প্রায় ৩ থেকে ১৪ দিনের মাথায় এর উপসর্গ পরিস্ফুট হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আবার সকলের উপসর্গ যে সমান হবে, এমনও নয়। সেই ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনেকের মধ্যেই ভাইরাসের কোনও উপসর্গ নেই, আবার অনেকেই জ্বর, অ্যালার্জি এবং গা-হাত-পা যন্ত্রণায় ভুগছেন। অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পেলে, ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে মাথা যন্ত্রণা এমনকি চোখের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত ৮০ শতাংশ মানুষই উপসর্গহীন।

গর্ভাবস্থায় কী ধরনের সমস্যা ঘটতে পারে ?

গর্ভাবস্থায় মূলত যে দুটি সমস্যা হতে পারে, তার মধ্যে প্রথম গর্ভপাত এবং দ্বিতীয় বাচ্চার শরীরে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাইক্রোসিফালি এবং কিছু স্নায়বিক সমস্যার সংমিশ্রণ জন্মগত জিকা ভাইরাস-এর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য, রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক অবস্থায় জিকা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটার আশঙ্কা বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে স্নায়ুজনিত সমস্যা জিকা ভাইরাস সংক্রমণে বৃদ্ধি পেতে পারে। এমনকি, যে শিশুরা জন্মগত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের মধ্যে চোখের অস্বাভাবিকতা এবং শ্রবণশক্তি হ্রাস-সহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। আনুমানিক ৫ থেকে ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে এমন শিশু রয়েছে যারা এই ভাইরাসে জন্মগত আক্রান্ত। যদিও বা শিশুদের মধ্যে পরবর্তীকালে এই ভাইরাসের উপসর্গগুলি লক্ষনীয়। এই ভাইরাস থেকে আর কী কী সমস্যা গর্ভাবস্থায় বা পরবর্তী কালে হতে পারে সেই নিয়ে নানান গবেষণা চলছে।

চিকিৎসার উপায়

এই ভাইরাসের আপাতত কোনও টিকা নেই। সাধারণত প্যারাসিটামল, হাইড্রেশন এবং বিশ্রামের ওষুধ দেওয়া হয়। তবে ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগ বা ব্যথা উপশমকারী ওষুধগুলি এই ক্ষেত্রে এড়ানোর পরামর্শই দেওয়া হয়। যে সকল মহিলারা গর্ভাবস্থায় এই ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের অবশ্যই চিকিৎসা করানো উচিত।

<আরও পড়ুন: একঘেয়েমি তাড়াতে চান? শরীর-মন চাঙ্গা রাখতে মোক্ষম দাওয়াই চা, রইল হরেক রেসিপি>

প্রতিরোধ:
যেহেতু এটি মশাবাহিত রোগ , তাই সেই বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। যেমন-
• ক্রিম জাতীয় কিছু জিনিস ব্যবহার, যা মশাদের থেকে বাঁচাতে পারে।
• প্রয়োজনে ফুল হাতা জামাকাপড় পরে বাইরে বেরোনো।
• পার্টনার যদি এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয় তবে তার থেকে শারীরিক দূরত্ব রাখা এবং প্রয়োজনে গর্ভনিরোধক ব্যবহার করা।
• মশারি টাঙিয়ে রাত্রিবেলা ঘুমানো উচিত।
• দরকার পড়লে বাড়ির জানলায় নেট লাগিয়ে নেওয়া ভালো।
• বাড়ির ধারে কাছে জল জমতে না দেওয়া এবং পরিস্কার রাখা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক জানানো হয়েছে, প্রথম ১৯৪৭ সালে উগান্ডাতে বাঁদরের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। এবং পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে উগান্ডা এবং তানজানিয়ার বাসিন্দাদের দেহে এই ভাইরাসের খোঁজ মেলে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

health Health update Zika Virus
Advertisment