A rewrite of Ayodhya dispute and some deletions: গত সপ্তাহেই বাজারে এসেছে এনসিইআরটি (NCERT)-র দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ের নতুন সংস্করণ। আর, তারপর এই বই নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। কারণ, বইয়ের এই নতুন সংস্করণে বাবরি মসজিদকে 'তিন গম্বুজের কাঠামো' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অযোধ্যা বিভাগটিকে কমিয়ে চার থেকে দুই পৃষ্ঠার করা হয়েছে। আগের সংস্করণে তা নিয়ে বিস্তারিত ছিল। সেই সব বাদ নেওয়া হয়েছে নতুন সংস্করণে।
📌 নতুন সংস্করণে যে বিষয়গুলোকে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হল- গুজরাটের সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত বিজেপির রথযাত্রা; কর সেবকদের ভূমিকা; ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রেক্ষিতে সাম্প্রদায়িক হিংসা; বিজেপিশাসিত রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি; বিজেপির প্রতিক্রিয়ায়, 'অযোধ্যার ঘটনার জন্য অনুশোচনা'। এর আগে গত ৫ এপ্রিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছিল, এনসিইআরটি বেশ কিছু পরিবর্তন করতে চলেছে। কিন্তু, কোন বিষয়গুলো কতটা পরিবর্তন করবে, সেটা তখনও স্পষ্ট ছিল না। সেটাই এবার স্পষ্ট হয়েছে।
📌 ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই নিয়ে চতুর্থবার পাঠ্যবইয়ের সংশোধন করল এনসিইআরটি। ২০১৭ সালে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি যুক্ত করতে সংশোধন করেছিল। ২০১৮ সালে সিলেবাসের বোঝা কমাতে সংশোধন করেছিল। আর, এবার বাবরি মসজিদকে বলা হয়েছে তিন গম্বুজের একটা কাঠামো। আর, ২০১৯ সালে বাবরি ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে বলা হয়েছে, ঐক্যমত্যের সেরা উদাহরণ।
মূল পরিবর্তনগুলো:
📌 পুরানো পাঠ্যপুস্তকে বাবরি মসজিদকে ১৬ শতকের একটি মসজিদ হিসাবে পরিচয় দেওয়া হয়েছিল। যা মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপবতি মির বাকি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এখন, সংশোধিত অধ্যায়ে বলা হয়েছে, মসজিদটি 'একটি তিন গম্বুজের কাঠামো (যেটি), ১৫২৮ সালে শ্রীরামের জন্মস্থানের জায়গায় নির্মিত হয়েছিল। তবে কাঠামোটির ভিতরের পাশাপাশি এর বাইরের অংশে হিন্দু চিহ্ন এবং ধ্বংসাবশেষের নমুনা দৃশ্যমান ছিল।'
📌 পুরানো পাঠ্যপুস্তকে দুই পৃষ্ঠারও বেশি জায়গাজুড়ে ফৈজাবাদ (বর্তমানে অযোধ্যা) জেলা আদালতের নির্দেশে ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মসজিদের তালা খোলার পরে 'উভয় দিকে' সমাবেশের বর্ণনা দেওয়া ছিল। পাশাপাশি, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা, সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত সংগঠিত রথযাত্রা, ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা করসেবা, মসজিদ ভেঙে ফেলা এবং পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে সাম্প্রদায়িক হিংসার উল্লেখ ছিল। তাতে উল্লেখ করা ছিল যে কীভাবে বিজেপি 'অযোধ্যার ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে' এবং 'ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর বিতর্ক' কথাটিরও উল্লেখ ছিল।
আরও পড়ুন- গ্রেস মার্কস বাতিল, ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে ফের দিতে হবে NEET, জানুন নতুন তারিখ
📌 তার বদলে নতুন সংস্করণে লেখা হয়েছে: '১৯৮৬ সালে, তিন গম্বুজের কাঠামো সম্পর্কিত পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য মোড় নেয়। ফৈজাবাদ (বর্তমানে অযোধ্যা) জেলা আদালত কাঠামোটি খুলে দেওয়ার রায় দেয়। সেখানে লোকেরা উপাসনা করার অনুমতি পায়। বিরোধ বহু দশক ধরে চলছিল। কারণ, এটি বিশ্বাস ছিল যে একটি মন্দির ভেঙে শ্রীরামের জন্মস্থানে তিন গম্বুজের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। তবে মন্দিরের জন্য শিলান্যাস করা হলেও পরবর্তী নির্মাণ নিষিদ্ধ ছিল। হিন্দু সম্প্রদায় শ্রীরামের জন্মস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। আর, মুসলিম সম্প্রদায় ওই কাঠামোর ওপর অধিকারের দাবি করেছিল। পরবর্তীকালে, ওই জায়গার মালিকানা নিয়ে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। যার ফলে অসংখ্য বিরোধ এবং আইনি দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। উভয় সম্প্রদায়ই দীর্ঘদিনের সমস্যাটির একটি ন্যায্য সমাধান চাইছিল। ১৯৯২ সালে, কাঠামোটি ধ্বংসের পরে, কিছু সমালোচক দাবি করেছিলেন যে এটি ভারতীয় গণতন্ত্রের নীতির ক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।'