আপনি কি বইপ্রেমী? বিশেষ করে বাংলাদেশের বই পড়তে ভালবাসেন? তাহলে হাতে রইল মাত্র একটা দিন। কলেজ স্ট্রিট বইয়ের আড়ত হলেও বাংলাদেশ বইমেলার জুড়ি মেলা ভার। গোটা কলেজ স্কোয়ার জুড়ে শুধুই বই, এপার বাংলা-ওপার বাংলা...কোনটা চাই আপনার?
বাংলাদেশ বইমেলা উৎসবের দশম বছর এটি। সাজো সাজো রব কলেজ স্কোয়ার জুড়ে। কোন বই চাই? সবই রয়েছে! শুধু একটু খুঁজে নিতে হবে। বাংলাদেশের বই মানেই তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস, থেকে সিনেমা এবং হুমায়ূন আহমেদ ও সাদাত হোসাইন। পুরনো প্রকাশকদের সঙ্গেও এবছর এসেছেন নতুন অনেকেই। অন্যপ্রকাশের স্টলে যারাই আসছেন তাঁরা খুঁজছেন সাদাত হোসাইনের 'তোমার নামে সন্ধ্যে না'। আবার কেউ হাতে তুলে নিচ্ছেন হুমায়ূন আহমেদের 'দেয়াল'। সেই স্টলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যের বক্তব্য, "এবছর বইমেলায় হুমায়ুন এবং সাদাত হোসাইন ছাড়াও সেদেশের ইতিহাস কিংবা শিকড়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যে বই সেটিও বিক্রি হচ্ছে"।
বিশেষ করে সাদাত হোসাইনের বইয়ের পাতায় উঁকি দিয়ে যাচ্ছেন সকলে। 'সে এখানে নেই' এই বইটিও রয়েছে সেই তালিকায়। হিমু সমগ্র কিনছেন অনেকে। তুলনামূলক হুমায়ূন সাহেবের উপন্যাসের বেশি চাহিদা। ভক্তিগীতি থেকে, ধর্মীয় উপন্যাস আবার বেশ কিছু ট্রান্সলেশন সবকিছুই রয়েছে। সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে ফটো ফিচার চোখে পড়বে। জাগৃতি প্রকাশনীর মিশরীয় মিথলজি অনেকেই পছন্দ করছেন। আবার, নতুন প্রকাশনীর সঙ্গে এবার প্রথমবার এসেছে নালন্দা। বইমেলার ইতিহাসে নালন্দার উপস্থিতি, যেন অন্য মাত্রা ছুঁয়ে দিয়েছে। এবার নালন্দার প্রধান আকর্ষণ ফারজানা মিতুর বেশ কিছু বই। স্টলে নিজেও উপস্থিত ছিলেন লেখিকা।
থ্রিলার, রহস্য এবং রোমাঞ্চ - সব মিলিয়ে লেখিকা নিজেও বেশ উত্তেজিত। কলকাতায় এসেছেন, একেই বইমেলার আনন্দ। তাঁর সঙ্গে, ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করলেন লেখিকা। তাঁর বক্তব্য, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যখন নিউমার্কেটটা দেখি, মনে হয় এখনও ঘুম ভাঙ্গেনি এদের? চারিপাশটা খুব সুন্দর। যদিও এরপর নালন্দা প্রকাশনী ফিরে যাবে বাংলাদেশে। আগামীতে নিউটাউন বইমেলায় কেউ কেউ যাবেন আবার কেউ কেউ না। কিন্তু, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় থাকবেন সকলেই।
সামনেই ২১ ফেব্রুয়ারি, অনেক কাজ। তাই, প্লানিং রয়েছে প্রচুর। সেদিক সামলে বইমেলায় ভাগ নেবেন সকলে। তবে, সমস্যা একটাই! অনলাইন পেমেন্ট এর বন্দোবস্ত নেই। তাই সঙ্গে ক্যাশ টাকা না রাখলে খুব মুশকিল। শহরে বাংলাদেশ বইমেলা চলছে, তাই একসঙ্গে দুই বাংলার মানুষ যথেষ্ট আনন্দ করছেন। আর কিছুদিন পরেই ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল শুরু, তাঁর আগেই নিজেদের তাক ভর্তি করতে ব্যস্ত কলকাতাবাসী।
চলছে নানান অনুষ্ঠান। গতকাল সন্ধ্যায় হাজির হয়েছিলেন উর্মিমালা বসু। পাঠ করলেন শ্রুতি নাটক 'অর্পণ', যাকে রূপ দিয়েছেন বনানী মুখোপাধ্যায়। যদিও শিল্পীর বাপের বাড়ির পাড়া এই উত্তর কলকাতা, তারপরেও এই গুরুত্বপূর্ন মঞ্চে আসতে পেরেই যেন ভীষণ খুশি তিনি।