Advertisment

শিবাশিস দত্তের এক গুচ্ছ কবিতা

চার দশক ধরে লেখালিখি, দীর্ঘদিন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেছেন শিবাশিস দত্ত। একাধিক বই, বহু পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি। আজ শিবাশিসের এক গুচ্ছ কবিতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অলংকরণ- অরিত্র দে

কবিতার জন্ম 

Advertisment

আমি আচমকা দিকচিহ্নহীন এক বন্দরে পৌঁছে গেছি...অন্ধকারময় এবং সঙ্গীহীন কোনো হৃৎপিণ্ড যেন আমার বুকের ভেতর খলবল করছে

এখানে বিড়ম্বিত জীবনের ছায়াপট নেই,

তুচ্ছতা দিয়ে ঘেরা কোনো প্রণয়পীড়া নেই

কবিতার জন্ম কীভাবে হয়

আমি সে বৃত্তান্ত জানতে এসেছি--

কোন শুক্রাণু আর কোন ডিম্বাণু মেশে,

কার গর্ভে বেড়ে ওঠে কবিতার হাত-পা

সেকথা বলে যাও দিকি নলজাতকের মা--

অবসাদঘন রাত্রি, কালো মানুষের দল ঢাকের বাদ্যি বাজাচ্ছে...চিন্তা আর বুদ্ধির প্রয়োগ নেই বলে

শুধু হাসি আর গান দিয়ে সংযমহীন জীবনের কাহিনি লেখা হয়েছে

অথচ তুমি আমার সেই আটটা-নটার সকাল,

সচ্ছলতায় ভেংচি কেটে বেমালুম পাশের ফ্ল্যাটে সরে পড়েছ .... আর এ সময় সিঁড়িতে মাথা রেখে

ঘুমিয়ে গেছে দ্বিপ্রাহরিক নীরবতা,

অস্থিরতা আর অপমানে বড়োবাড়ির উঠোন

ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে

জটিল প্রতিভার মাথা, ঘাড় আর পিঠ বেয়ে নামছে

রঙিন সরলতা

পিছু পিছু হেঁটে চলেছে

দু-দুটো জামরুলগাছ আর ধূলিকণামুক্ত কুয়োতলা

আরও বাংলা কবিতা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে

অভিসন্ধি

এও কোনো এক শিশুসুলভ প্রয়াস,আশ্চর্য মেঘের ঘ্রাণ নিয়ে, নিষ্পত্র বৃক্ষের সমর্থন আদায় করে নেওয়ার পর ছিটানো জলের মাঝে মুদ্রিত হয়ে আছে।

উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম--সমস্ত দিকই এখন অনুমান, সংশয় আর বিড়ম্বনায় ঘেরাও হয়ে আছে।

তুমি তবে কোনদিকে যাবে?

ভ্রাম্যমাণ এক স্বপ্ন বয়ে চলেছে শহরের এক প্রোষিতভর্তৃকা

পরিতাপ যা কিছু  সমস্তই বিঁধে আছে বাতাসে

ক্ষমতার আগুন জ্বলে ওঠে, শ্মশান ডুবে যায় জলে,

রোমশ মাটির বুকে লুকিয়ে থাকে এক তৃষ্ণা।

সমুদ্রভীতি নিয়ে আস্তানায় ফিরে গেছে গৃহপালিত পশুদের কেউ কেউ

জ্ঞানের উৎস তবে কী? ছোঁয়াচে অভ্যাস নিয়ে কার ঘরে যাবে?

অসুস্থ জলের পাশে আটচালা ছুঁয়ে থাকা সূর্যের আলো বেহিসেবি কোনো অভিসন্ধি বলেই মনে হয়

শেয়ার করুন 

কে বা কারা ভূকম্পন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঘরে ফেরার পথ ভুলে গেছে। অনপনেয় ক্রোধ পাহাড়ি বনের রঙিন পাখিদের মুদ্রাদোষ ভেবে নিয়ে প্রাচীন গাছের কোটরে জমা হয়ে যাচ্ছে। আত্মহত্যার সম্ভাবনা ও তার কারণ ঝাউবনের ছায়ায় লেখা থাকে। সাংবাদিক মনের অসদ্ভাব নিয়ে যে বই লেখা হল, ছাপার পর সে বইয়ের এক ফর্মা বাদ গেল। কত কী কাণ্ড ঘটে যাচ্ছে বল দেখি! হাতের ভাঙা হাড় সেট হয় না(সেটিংয়ের ঝামেলা), অচঞ্চল মন বেড়ে ওঠার কারণ লাল পিঁপড়েদের কাছে দর্শাতে হয়। বোঝো তবে! বৃষ্টির জল যেদিন ঘন হয়ে অপর কোনো গাঢ় তরলে মিশে গেল, সেদিন আমরা বীর্যস্নাত ডিম্বাণুর কথা ভেবেছিলাম। থালায় রাখা ধানদূর্বা, কবিতা লেখার কাগজ, ন্যাপথালিন, সেক্যুলার ভাবমূর্তি-- সবেতেই যে তুমি লেবেল লাগাও। হরি হরি!  রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া বাঘের বাচ্চাকে যিনি বাসায় এনে  প্রতিপালন করেছিলেন সেই লেখককে স্মরণ করো। রাত জেগে থাকার পর পান করো সমুদ্রের জল। দেশ কি তবে লারেলাপ্পাদের হাতে চলে যাবে? তুমি রোমান হরফে বাংলা লেখার উপকারিতা কিংবা অপকারিতা নিয়ে দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখো-- জলপানি মেলে যদি। নাইহিলিজিমের তত্ত্ব  ফিরে ফিরে আসে। আর তখন অর্জিত বিশ্বাস তরলিত হয়ে শেষমেশ জমাট বাঁধা রক্তের মতো ধানক্ষেতে পড়ে থাকে। একমত হলে লাইক দিন, শেয়ার করুন।

bengali poetry Bengali Literature
Advertisment