দাগ
গতির নেশায় আমি এফোঁড় ওফোঁড় করেছি হাইওয়ে।
জঞ্জাল ভিড়ে ভরা ধোঁয়া ধুলো
বিনা প্রতিবাদে মেখে নিচ্ছি মুখময়
মাঝে মাঝেই দুঃখ সমান গর্ত ঝাঁকিয়ে দিচ্ছে পাঁজর কপাট।
এ সবই তো আপনারই বদান্যতায় প্রভু
তবু
অ্যাদ্দিন আপনার তেল খাচ্ছি সত্যি কথাই বলি
যে কোনো দিন, ধরুনগে কালকেই
সুইসাইড স্কোয়াডের মত, দিগভ্রান্ত
আপনি বা আপনাদের নিয়ে বেসামাল
গড়িয়ে যাব শূন্যতার মাধ্যাকর্ষণে.....
এসব ভাবতে ভাবতেই যেদিন অন্যমনস্ক ঘষা খেলাম
ওই শালা গাম্বাট ট্রাকটার দেমাকি বাম্পার
আপনি নাওয়া খাওয়া ভুলে কতক্ষণ ধরে সেই দাগ দেখলেন
হাত বোলালেন যেন আপনারই নুনছাল।
সেই থেকে কেনা হয়ে আছি, সুখী তো বটেই
তেলে জলে কড়াতে ছায়াতে, যখন যেমন।
মাঝে মাঝে ফোনালাপ শুনতে পাই, স্টিয়ারিং হাতে
দাম কম পাবার ভয়ে আপনার গলাটা কেমন ভীতু ভীতু
সেই থেকে লজ্জায় মুখ গুঁজে আছি, ডাকলেও উঠছিনা আর
সে ওরা যতই ব্যাটারি ডাউন বলুক না কেন !
আরও পড়ুন, দুটি কবিতা: ফেরদৌস নাহার
ছবি চিন্ময় মুখোপাধ্যায়
এই আমরা
আমরা যাদের দুঃখচালেও ফুটত তাজা কাব্য
ফাটত নোবেল, উত্তরেতে “আচ্ছা পরে ভাববো”
আজকে তাদের রাতের বেলা একলা মদন আর্তি
সামলাতে ইনবক্সে খোঁজা বৈবাহিকের বাড়তি।
এখন সটান বাবড়ি চুলে খচাক সময় জঙ্গির,
গোলায় ঢেঁকুর তবুও বাসে অ্যাক্রোব্যাটিক ভঙ্গি
চোখের নিচে কাগের ঠ্যাঙে ঘনিয়ে আসে চালশে
এবং ক্রমেই পাতের থেকে সরছে আমিষ লালচে।
সেদিন যারাই টিকিয়ে বেবাক অন্য পাড়ার মাস্তান
আজকে গোপন কিউবিকলে রক্ত চাপের দাস্তান
মোটের ওপর মধ্য যামে হিসাব খাতার দিক ভুল
গুলিয়ে গেছে, সুখ তলাতেও মরচে পেরেক সংকুল।
-
যারা সামলে এত অস্ত্র ক্ষেপণ বাঁচছে ভীষণ ফোর্সে
তাদের জন্য আর কিছু না –হাততালি হোক জোরসে।
আরও পড়ুন, সুমন মান্নার দুটি কবিতা
ছবি চিন্ময় মুখোপাধ্য়ায়
একটি দিনের অপমৃত্যু
চক্রাকারে পাক খায় সাথীহারা নামহীন পাখি
ঘন্টা -শঙ্খ, তুলসীমঞ্চ ইতস্তত ঘিরেছে জোনাকি
দিনের শ্বাস উঠে গেছে -আকাশেতে রাজ রোগ টীকা
বহু জন্মের পারে কোন চরাচর ব্যাপী নীহারিকা।
বয়স্ক নক্ষত্ররাজি, গন্তব্য বলিরেখাতুর
পদচারণায় রত- প্রেক্ষাপটে বেহেস্তের নূর।
হেমন্তের হিম ঝরে, সমস্ত উত্সবের শেষে
বিষণ্ণ ফানুসের ভাসা, আকাশের এক কোণ ঘেঁষে
কিশোরীর মৃগ মাংস চেনে –শিকারীর লবণাক্ত ঘ্রাণ
অযাচিত পতন চিহ্ন বুকে রাখে পিছল সোপান
বাতাসে অগুরু চন্দন উড়ো খই শুভেচ্ছা প্রীতি
অনন্ত জ্যোৎস্নায় স্থির-দ্রুত তালে মুছে যায় স্মৃতি।
এইসব ছায়াদৃশ্য খেলা করে- মুষ্টি ভিক্ষা শূন্য ঝুলি
আর
তোমার গভীরে সূর্যাস্ত! জানি এবারেও স্নান হবে না আমার।