অবশেষ
বিরাগের সমস্ত সম্বল দাহ্যতার তালিকা ধরে নিঃশেষ হয়
স্থাবর জঙ্গমের স্বত্ব তুলে দেয়া থাকে ভুল অগ্নিকাণ্ডে
ছাইয়ের মধ্যে থেকে উঠে আসা হাতে কত সহজে
মহাকর্ষহীনতার কাঠামো চেনা হয়ে যায়
অন্ধত্ব বধিরতার কাছে খোলসের আকৃতি নিয়ে
যা যা রয়ে গেল, তার পরে নিরুত্তর ছাড়া অনুমোদন নেই
বুদবুদ হয়ে ভেসে আসবে দাহ্যদের তীক্ষ্ণ উপহাস
অন্ধকার চেপে বসছে ধীরে, শিখার সংক্রমণে সমাপ্ত স্বাক্ষর।
টান
চোখ আদতে বাঁধাই আছে, নিজেদের কক্ষে ঘুরতে ঘুরতে
হঠাৎ হেঁয়ালির পর্দা সরে উন্মনা উত্তরের কাছে
এসে পড়ি সুপারমুনের তুঙ্গশিশির যোগে
মুখ ফেরানোর অঙ্গীকার ভেঙে পিঠে পিঠ লেগে যায়
অবসাদের লজেন্স কেঁদে ওঠে জিভে একে অপরের
অশ্রুর দিনে বহুদূরবর্তী গাল ঠিক মোহনা হয়ে যাবে
গাঢ় লাল ভ্রূণ মিলিত বুকের ইনকুবেটরে শিখে নেয়
ঝিনুক কুড়োনোর ছেলেমানুষি, সে ভাষারই সান্ধ্য অক্ষরেরা
শীতার্ত হয়ে খুঁজে চলে চোখ বুজে এগিয়ে আনা
পরিপূরক আঙুলের মিল, যে প্রয়াগের কথা উৎস জানে না
শুধু বিমুখ সুতোর একলা সেলাইয়ের দিনলিপিতে
কোথাও বারবারই টান পড়ে গিঁটে অনিবার্যভাবে।
আরও বাংলা কবিতা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে
আলো-অন্ধকারে
দশাসই প্রতিমার মুখে পড়ে কৌতূহলী ফ্ল্যাশ
ঝুলন সাজের ভিড়ে, পুরস্কার সে ঝলকে রচে
ঘামতেলে মরীচিকা, অপূজিতা নিরুদ্ধ প্রপাত
অপ্সরা তোমার পিতা নেই, গ্ল্যামারের রীতি মেনে --
পদতলে চিরকুটে গলা চাপা কাশি ঢেকে দেয় মজুরীতে
যেন-বা মেকাপম্যান, অন্য পাশে কন্যা তাঁর ছোট প্রতিমাটি
জবার মালার নিচে দ্বিধা বুক ওঠে নামে কুমোরের শ্বাসে
আইফোন পিছলানো অবজ্ঞা আশ্রয় খোঁজে বেলপাতা স্তূপে
দুজনের দেখা হবে জলের তলায়, মাটি গলে যেতে যেতে
অপ্সরা জড়িয়ে ধরে তাকে, যদি বিলীনের মুহূর্ত আগেও
পিতৃস্পর্শ মেখে নেয়া যায় তিলমাত্র তার সাথে ভাগ ক'রে
উদ্যোক্তারা এ সমস্ত জানেনি কখনো, ঠিক যেভাবে অজ্ঞাত,
উৎসব ফুরোলে ছোট প্রতিমার অবিকল দেখতে একটি
ফ্রকপরা কালো মেয়ে হেঁটে যায় কুমোরের বাড়ি
খোড়ো বারান্দায় বলে ওঠে কেউ, ' বেলা হয়ে গেল
চাল যে বাড়ন্ত, আজ কষ্টেসৃষ্টে চলে যাবে রে মা... '
মাঝি
নিমন্ত্রিত কারা যেন বসে আছে, রান্না বাকি প'ড়ে
সাধিত বাস্কেট টেনে সেই কয়েকটা ধ্বসা আলু
পোকা ধরা বেগুনের সম্বল, ঠেকনা খুন্তি ছাড়া
সংশোধনের কিছু চেরা লঙ্কা, গরমমশলা
পাঁচফোড়নের ছিটে, ফুটন্ত তেলের শব্দ জানে
তোমার রেসিপি মেনে আমার ভেতর ঝোড়ো হাওয়া
মেঘ সরে সরে ফোটা মর্বিড আলোতে বিঁধে দেয়
পাশে বসে বলা কিছু গোধূলির রাংতা জড়ানো
সপাট কথায়, সেই সয়াসস ওতপ্রোত মিশে যায় রোজ
প্রতি সাধারণ পদে, কালবৈশাখীতে উড়ে আসা এঁটো পাতা
কাছাকাছি শ্মশানের ভাসমান কালো ছাই, সমস্ত আড়াল
হয়ে যায় যে অর্জিত করতলে তার নিচে জেগে উঠেছেন
নিজ দেহসীমাপারে সেই লম্বা মাঝিমানুষটি,
ব্যাকস্টেজে নিবু সীসে ঋজু ছায়াস্কেচ
হেঁশেলের দোর এঁটে আবার ঢুকিয়ে রাখি গোপন দেরাজে
একত্রিত ভূর্জপত্র, সুসমাচারের ভাঁজ খুলেছে নির্জনে
জানলার ঠান্ডা গ্রিল বেয়ে চলে লাল পিঁপড়েরা
বাক্যের অতীত, যাকে শুধুমাত্র বাল্ব নিভে গেলে দেখা যায়।