Advertisment

শুভ আঢ্যর কবিতা

পড়াশোনার বিষয় অর্থনীতি। জন্ম ও বাড়বৃদ্ধি উত্তর কলকাতায়। শুভ আঢ্যর লেখালিখি মূলত কবিতাকেন্দ্রিক। ছোট পত্রিকা তাঁর চারণভূমি। আজ শুভর কবিতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bengali Poetry Subha Adhya

অলংকরণ- অরিত্র দে

ম্যাড মঙ্ক / 

Advertisment

 ২৫

সেই মেয়েটিকে গ্রিগরি দেখেছে, চূড়ান্ত সংযমের মাঝে

অথচ তারও তো স্তন বলে বুকের ওপর কিছু

আছে, আছে তো তারও জ্বলে ওঠা বাড়ি ছেড়ে

পালানোর প্রত্যয়, উফ ধর্ম, আর পারছি না ধারণ

মেয়েটিকে দেখি, তার ফ্রকের ওপর ঝালরের মাঝে

কাম, খোলা মাঠের মতোই যেন সোনালী শস্য আসার

কথা ছিল শীতের সাদার আগে, বেসিক্যালি ছিঁড়ে নেওয়া

ওই ফুল আর বুকে রাখতে কে কবে দিয়েছে!

তুমি এসবের কি বোঝো হে ব্রাদার ম্যাকারি, জানো,

এই দৃশ্যটুকুই ঈশ্বর, কামার্তের কাছে এটাই স্বর্গ আর

কিউপিড সেখানেও তো, অন্ধ বাগান এভাবেই তো

ভরে যায়, ফুলে, ফলে ওঠে... এতটুকু চোখ দাও

দাও গ্রিগরিকে বিঘৎ পরিমাণ স্থান, এসো ধর্ম ভুলে

সেই বুকের ক্যারল শুনি, ভায়োলিন বাজুক আমারও

এ এক যথেষ্ট বৈকল্য, এভাবে আমাকে খিদে নিয়ে

মরে যেতে হবে, পোকারোভস্কোয় ফিরে ফিও'কে দেখার

আগেই যেতে হবে মরে, তবু সেও তো জ্বলে ওঠা কাঠের

শরীর নিয়ে তামাম অপেক্ষা আমাকে জানিয়েছে

আরও বাংলা কবিতা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে

২৬

অপসারী রশ্মিগুলো ভাঙে, বস্তু আসলে সত্যের মত

অন্ধকার, তার ওপর আলোটুকু আমাদের দেখায় বস্তুটিকে

দেখায় সেটি কোনো টেবিলে রাখা কোনো মহিলার

কুরুশ অথবা কোনো খুনির কুকুরি; যদিও অনুসারী

মহিলারা আসেন, তাঁরা আমার অতীত জানেন না

অতীত এমন এক বিষয়, যা পরিচিতের কাছে বেদনার

কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে - এমন ভেবে তাঁরা আমাকে

খুলে দেখান তাঁদের শোয়ার ঘর, তাঁদের মাসিকের দিন

রমণকালীন শব্দগুচ্ছও, এই আধ্যাত্মবাদ আমার

চামড়ায় মিশে গেছে, মেলানিন কম হলেও ওহ ঈশ্বর

এই গোপনতা, এই সোনার অধিক তাঁদের সরঞ্জামাদি

আমি কোথায় রাখবো? এই অপরিসীম অভিনয়

আমার ভেতর, আমি তাঁদের ফিরে যেতে দেখি অতীতে

যেন তাঁরা আবার পুরোনো প্রেমিকের ঠোঁটে চুমু খেয়ে

সেই খেতের ধারে শুয়ে আছেন, সত্য তাই... কেবল এই

আমার সামনেই দমপুতুলের মতো তাঁদের অবস্থান

মানুষ অতীতেই বাঁচে, বর্তমান এক প্রক্রিয়া যা যতক্ষণ

না অতীত হচ্ছে, মানুষ তাকে বুঝে উঠতে পারে না

তার পিঠে সওয়ার হয়ে কারও ভেতর ঢুকে পড়ার কথায়

অনীহার আঙুল তাকে দরোজার বাইরে আটকে দেয়

২৭

আমার সংস্রব তোমাদের গোপন করে, যা নৈতিক,

তোমরা তোমাদের অতীতের সামনে

যখন দাঁড়াও তোমাদের পা গেঁথে যায় আমার চোখে

আমার চোখের পাতার নীচ থেকেও তোমরা সেই দিনের

শেষ কফিটুকু পান করে উঠতে পারো না, তোমাদের

বাবাদের থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে তোমরা শিহরিত হও

অথচ তা সাময়িক, তার গান তোমাদের কানে এখনও

আলো ফোটায় যেন দুল, যেন গোপন অঙ্গের গোড়ায়

একটা ফুল কেউ রেখে গেছে অচেনা যাদের তোমরা

ভবিষ্যতে চিনে ফেলবে যখন আর তোমাদের সে ফুলের

রঙ, গন্ধ কিছুই মনে থাকবে না, আমি এটুকুই চাই

আমার সামনে তোমরা জীবন্ত হও, তোমাদের তার পরের

মৃত্যুকেও চাই ঘটুক সামনে আমার, এ সংসর্গ গোপন

তোমাদের প্রত্যেকের অতীন্দ্রিয় আটটি কুঠুরির ভেতর

অতীত আমি লালন করছি মুখের ভেতর, পবিত্র এই

লালা, গ্রিশকা বলছে এ কথা যে পাপের ভেতর আরও

অনেকটা ঢুকে পবিত্র হয়ে এসেছে অতএব, হে নারী

তোমাকে গোপনতা শেখায় আমার সঙ্গ, যদিও খোলা

বইয়ের মতো তোমরা একটার পর একটা উড়ছ এখানে

২৮

দেহ স্বীকার্য, তার ভেতর জমে থাকা রক্ত, পুঁজও

যদিও তাকে মানুষ বর্জ্য হিসাবে এড়িয়ে চলে

আর অন্তঃপুরে রেখে দেয়, তবু সেই ক'টা দিন যখন

প্রবেশ নিষেধ করে রেখেছ কারোর, সে দিনগুলোয় কি

নিজের শরীরকে অস্বীকার করো? সে দেহগুলোয় ফুল

ফোটে তো সেদিনও, এই যৌনাচার নিকৃষ্ট, যদিও তা থেকে

তোমাদের মস্তিষ্ক গঠিত হয়েছে, তোমাদের বোধও এর

বাইরে নয়, অস্বীকার করো ঈশ্বর, কামনা তো

এদের শরীরের বাইরে থেকে যাওয়া অতিরিক্ত অঙ্গ

যা এরা শুধুই জননপ্রক্রিয়ায় ব্যবহার করে, হাঃ!

আমি খিলিস্ট কিনা জানি না, বিশ্বাস করি এই আগমন

সত্য যেমন ততটাই আমাদের দেহের খিদে, ওহ, তোমাদের

সততা, তোমাদের গোপনতা আমার পায়ের মাঝে

জননাঙ্গকে অস্বীকার করা শেখাতে পারবে না, মুক্তি এইই

স্খলনের পর পরিতৃপ্তিই তো চরমদশা যা ঈশ্বর দেখাতে

চান তোমাদের অথচ তোমরা স্বীকার করো না, যেন

ভানের ভেতর তোমাদের মিথ্যা সবটুকুই, এমনকি

নিষেধ করে রেখেছ নিজেকে, ঈশ্বরের থেকেও

(খিলিস্ট - একটি আন্দোলন, পুরোপুরি ধর্মীয় বলা যায় কি না দ্বিমত আছে, এখানে নিকৃষ্টতম যৌনতাকে মুক্তির পথ হিসাবে প্রাধান্য দেবার কথা বলা হয়েছে)

bengali poetry Bengali Literature
Advertisment