কাঙ্ক্ষিত বর্ষা
নিবিড় ঈশ্বর জানে
আলো চলে গেলে গভীর উজানে
উঠে আসে কাছিমের ডিম
মানুষের উঠোনের পাশে
সুপ্ত যত মন্ত্রকথা নিয়ে।
তিমির-কন্যার মতো একদিঘী জল
পাড়ের ছায়াদের রাখে
বুকের গোপন তটে ঝিনুকের শুক্তির মতো।
গোপন আঙুল ছুঁলে
দিঘীদের ঘুম ভাঙে,
অকাতর রমণের মতো
মানুষের ঘাম এসে মেশে
কাঙ্ক্ষিত বর্ষার সাথে।
তোমাকে মুক্তি দিলে
তোমাকে মুক্তি দিলেই জানি
চলে যাবে পিছনের দ্বারে।
অতীতের চর্যাপদ যত,
সব কিছু ধুয়ে নিয়ে বহমান জলে
তুমিও বিছিয়ে নেবে অনন্ত খাট
কোনো এক চিতার উঠোনে।
তোমাকে মুক্তি দিলেই জানি
সুজল হরিণের মতো
নামিয়ে নেবে ঠোঁট
নদীর বিছানো বুকে একান্তে শিশুটির মতো।
বড় বেশি ভয় পাই জানো
ছেড়ে যেতে পৌষের তিমির-শিশির।
বটমূলে অজস্র পংক্তির মতো
পড়ে থাকে পাতাদের বিমূঢ় শরীর।
ভালবাসা দিলে তারা শুধু বধিরতা জানে;
সামান্য চুমুতেও আজ বিতরাগ তারা।
কত আর বয়ে নিয়ে যাব, বলো,
তাদের ভরন্ত স্মৃতি অশ্রুমান ঘরে!
তোমাকে মুক্তি দিলে
আমিও যে সাঁঝের চড়াই;
নিহত ডানার পিঠে লিখে নেব
প্রস্থানের গুপ্তময় কথা।
আরো কত
আরো কত দূরে গেলে ভালো –
সময়ের পলি ঠেলে জেগে ওঠা চর
হয়তো বা বলে দেবে মাটির ইশারা,
বেনোজলে ডুবে যাওয়া তীর।
আরো কিছু কাছে আসা যায় –
এলোমেলো পায়চারি হাওয়ার,
সন্ধ্যার আজানকে ছুঁয়ে ঘরে ফেরে
বিনাশী তিমির।
আর কত দূরে গেলে কাছে আসা যায় –
বলা যায়, আর নয়,
এইবারে থামো,
থিতু হয়ে দেখে নাও চারপাশে ঘুমন্ত শিশির।
যেতে যেতে হাটচালা শেষ –
হেমন্তের ওম নামে প্রাচীনের মাঠে...
আরও বাংলা কবিতা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে
আঙুলে
আঙুলে রেখেছি তার
তিলমাত্র দাগ,
বসন্ত - পরাগ
দ্যাখো মুহূর্তের নামে
অবসন্ন রাত্রের ঘামে
মেশালো সুবচনী কথা।
একা-একা বালিয়াড়ি কাঁথা
লিখেছিল বৈভব যত
অজস্র কত
সন্ধ্যার
হঠাৎ-নিশ্বাস চেনা আলো ।
তিমির ছুঁয়েছে বলে কালো
কবেকার
প্রান্তহীন তীক্ষ্ণ ভালবাসা
ঘন্টা-পল-মিনিটের ভাষা
সবকিছু ছেড়ে
মাঠের সীমান্ত থেকে দূরে
শয্যাকে চেনে।
হারটুকু বিধিবদ্ধ মেনে
উচ্চৈঃশ্রবা আবার হ্রেষায়,
সমুদ্র-বদ্বীপ
জোয়ারের এলোমেলো চড়ায়
জাগায় আচমকা টিপ
গভীর জাগার মত লাল।
আঙুলে বুনেছি দ্যাখো
নৌকার দেশান্তরী পাল।
পড়ুন, পুস্তক সমালোচনা যুদ্ধের দর্শন, যুদ্ধের রাজনীতি
হয়তো আসবে তুমি
হয়তো আসবে তুমি
জানলার পাশে ,
সাঁঝের তিমির-ভ্রূণ নিয়তির মত
আকাশের শিরা থেকে
নেমে আসে যতিহীন কবিতার লয়ে ;
তোমার আঙুলে জাগে কলমের শব
হলুদ পোকার মত
উলকি খাতায়
নিজেদের আঁকিবুকি রেখে গেছে আগে
সকালের জল থেকে কথা রাখে যারা
শরীরের ভাঁজে ভাঁজে
রুটিন- নিয়মে ।
জানলার পাশ ঘেঁষে নিজের আড়ালে
নিভে যায় বড় চুপে
সবিতা-সকাল;
অরণির গান যত গাছেদের কাছে
দুহাত বাড়িয়ে তবু
তোমাকেই নেবে,
অমর শব্দে যত ফাগুনের চেনা
কার্নিস বেয়ে এসে
উত্তাপ কিছু
লতানো সাপের মত শোনাবেই ডাক ।
হয়তো তবুও তুমি দাঁড়াবেই এসে
সবকিছু মেনে নিয়ে
একক আগুনে ।
খামতি
না হয় খানিক খামতি হলই
কাব্যে
দুপুরের রোদে আবছায়া বলে
না হয় সেদিন ভাববে ।
ডালপালা মেলে সময়ের চিতা
জ্বলবে
রক্তক্ষরণে নিজের সাথেই
নিদারুণ কথা বলবে ।
রূপক - যমক, দ্বিত্ব-বাহার ক্লান্তি
হারামন-গলি ঠিকানায় চিঠি ভ্রান্তি ।
কবিতার ভাষা ফুটপাথে নেই মেলানো
আকাশের বুকে রোদ্দুর দ্যাখ হ্যালানো ।
ঘষটানো শীতে চাদরে জীবন
উষ্মা
পায়ের শিকড়ে এজাহার নিয়ে
রূপকথা আনে প্রতিমা ।
সেদিন সেখানে মোমবাতি মেলে
রাত্রি
বেপরোয়া ঘাসে পাইকারি লাশে
ডাকছে তিমির- যাত্রী ।