নীলপাখি সিরিজ
১৮)
আমার হাত ফাঁকা
পেটে টান পড়লে চুরি করা ছাড়া আর কোন বিদ্যে জানা নেই
আমি তাই দিবালোকে শব্দ চুরি করি
সাজিয়ে সাজিয়ে লিখে রাখি কবিতার মত করে
নিঃশব্দে কাজ হাসিল করার বিদ্যে আমারই অর্জন
রাত হলে গলা খুলে ডাকি সেই নীল পাখিকে
ও আসে,
চুপ করে বসে।
আমি আর নীল পাখি একই দাঁড়ে পা আটকিয়ে বসে দুলতে থাকি
আমাদের ওড়া হয় না
ডেকে ওঠা হয় না
গান গাওয়ার কথা মনে এলে আমরা
ভাষার আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে পড়ি।
১৯)
চাপা হাসির মত একটা আভাস মুখে ছড়িয়ে পড়েছে
গালে হাত বুলিয়ে দেখে নিই মাঝেমাঝে
শূন্যতার ভেতরে দাড়ির জন্ম হয় কিনা, মৃত্যু হয় কিনা
ব্লেডের প্রান্ত ধরে ঝুলে আছে ওই যে বাসনা,
তাদেরও রক্তের স্বাদের অভিলাষ থাকে
এই স্বেদ, রক্ত, এই শরীর, এই হাসি ও কান্না
এদেরই কাছে জমা রেখেছি গোপন পুঁজি
হারাতে হারাতে যাদের কিছু এখনও অবশিষ্ট পড়ে আছে
চাপা হাসির মত উদ্ভাস থেকে, ছড়িয়ে যাওয়া আভা থেকে
আজও গালে টান পড়ে
চোয়ালের নড়ে ওঠা দেখে বুঝি,
কোমল হয়ে এসেছে লোহার মরচে
ঝরিয়ে দেবে বলে এগিয়ে আসবে কোন অদৃশ্য হাত
তার আয়ুরেখা ধরে চলতে থাকব –
পথের ধারণায় আজ বদল এসেছে।
২০)
তবুও স্মৃতি আসে
শজারুর কাঁটার মত ঝমঝম করে আছড়ে পড়ে লোহার হাতে
ছুঁচলো মাথা ভেঙে যায়
তবুও বিদ্ধ করে
আচ্ছন্ন করে
শূন্যতার কাছে এসে বসে স্মৃতির খাঁখাঁ কামরা
এ হাত ভারী ও অবশ
এ হাত শূন্যের রেলিঙে হাত রেখে নিশ্চল -
দূর থেকে দূরে চলে যাওয়া স্মৃতিদের ছুঁয়ে থাকে।
বেড়ালের আত্মার নিঃশব্দ পদচারণায় এই হাত কেঁপে ওঠে এক মুহূর্তে
রক্তমাংসের হাতের স্মৃতি ফিরিয়ে এনে
শজারুর কাঁটা বিঁধে রক্ত চলকে ওঠে খানিক-
২১)
স্মৃতির হাত থেকে বাঁচতে চেয়েছি
হাত বাড়িয়ে দিতে চাইছি তার দিকে
শিখণ্ডীর মত দাঁড়িয়ে আছে যে
শুধু আমাকে বাঁচানোর জন্য যার জন্ম হয়েছে
আমাকে বাঁচাতে গিয়ে যে মরে গেল –
প্রয়োজনে যাকে একান্ত ভেবেছি
এভাবেই বেঁচে গেছি বারবার
কৃতঘ্নের মত যেভাবে মানুষ এতদিন বেঁচে আছে