--তুমি সত্যিই কোনোদিন পড়োনি এই কবিতাটা?
--না। সত্যিই পড়িনি।
--জয়ের কবিতাসংগ্রহের ফার্স্ট পার্ট তোমার কাছে নেই?
--না। কাল রাতে বললাম তো...
--একটা মারাত্মক লেখা...
--আরেকবার বলো প্লিজ !
--এই এখন? ভোরবেলায়?
--ওমা! কী হয়েছে তাতে? ওরা এখনও ঘুমিয়ে কাদা...
#
ঝাঁ-চকচকে কাচের লম্বা জানলার গায়ে পুরু কুয়াশা ভেদ করে খুব হালকা ভোরের সূর্যের ক্ষীণ রেখা ফুটে বেরোচ্ছে। সেই অপার্থিব মায়াবী আলোয় একটু একটু করে আবছা ফুটে উঠছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। একটাও শব্দ নেই কোথাও এই নিসর্গ পৃথিবীতে। পাশের বিছানায় একটাই ব্ল্যাঙ্কেটের নীচে ঘুমোচ্ছে আমাদের দুজনের ছেলেমেয়ে। সূর্য আর দিয়া। সূর্য পাঁচ আর দিয়া সাত। আর এপাশের বিছানায় আমার বুকে মুখ দিয়ে আধোঘুমন্ত অবস্থায় জয় গোস্বামীর ‘বকুলবাগান রোড’ কবিতাটা শুনতে চাইছে তৃষা। একটু আগেও ওর ঠোঁট শুষে নিচ্ছিল আমার নীচের ঠোঁট। একটাই কম্বলের নীচে ছিলাটান হয়ে রয়েছে আমাদের দুজনের শরীর। একটা সুতোও নেই যে দুই শরীরে। আমি হাত না দিয়েও অনুভব করতে পারছি উত্তেজনায় ওঠাপড়া করছে ওর ছোট্ট দুটো বুক। জয়ের ‘বকুলবাগান রোড’। সেই কোন ছেলেবেলায় পড়েছিলাম। আজও প্রত্যেকটা অক্ষর প্রায় দাঁড়িকমাসুদ্ধু একইরকমভাবে মনে আছে। আমাদের গত তিনবছরের পথ চলায় আমি এই কবিতাটা অন্তত আট-দশবার শুনিয়েছি তৃষাকে। এমনকী এর আগেও বিছানায় শুয়েও অনর্গল বলে গেছি জয়, অরুণেশ ঘোশ, ফাল্গুনী রায় বা ভাস্কর চক্রবর্তীর বহু অপঠিত, তুলনায় কম-পঠিত কবিতা। আজ কম্বলের নীচে আর একবার তৃষা উঠে আসে আমার বুকের উপর। ওর তপ্ত ঠোঁট নামিয়ে এনে চুমু খেতে থাকে আমার সারা মুখে। জিভে জিভ ঢুকিয়ে দেয়। আমার দম আটকে আসে ...
আরও বাংলা ছোট গল্প পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে
#
--দম আটকে এলে কবিতাটা শোনাব কী করে?
--শোনাতেই হবে। শোনাও। যতোবার বলব ততোবার শোনাবে তুমি। এটা আমার হুকুম।
--হাইকমান্ডের আদেশ না মেনে পারি?
--পারার কথা স্বপ্নেও ভেবো না।
--কবিতাটা বলব। বুকের উপর থেকে সরো প্লিজ...
--না। কোথাও নামব না আমি। এভাবেই বলতে হবে...
#
আমি খেলাটা ঘুরিয়ে দিই। এক লহমায় নিজের শরীরটাকে নিয়ে উঠে যাই ওর উপরে। এখন আমি উপরে, ও নীচে। ওর কপালে আলতো চুমু খাই। বলি :
--এবার শুনবে ?
#
ও আমাকে দু’হাতে প্রাণপণে নিজের বেষ্টনীতে টেনে নেয়। জিভ বুলিয়ে দেয় আমার গালে। আমি টের পাই ‘বকুলবাগান রোড’ কবিতাটা উচ্চারণ করার অমোঘ মুহূর্ত এটাই। বস্তুত, এই মুহূর্তে যদি আমি এই কবিতাটা না বলতে পারি, ইতিহাস ক্ষমা করবে না আমায়। একবার পাশ ফিরে দেখে নিই, বাচ্চাদুটো জেগে গেল কীনা । না, ওরা কোন্ এক ঘুমপরির স্বপ্নের দেশের বাগানে ভেতর ঘুরে বেড়াচ্ছে এখন। হাতে হাত ধরে। এটাই সেই নির্দিষ্ট মুহূর্ত কবিতাটা উচ্চারণ করার। আমি, একটু থেমে বলে উঠি :
#
রাত্তিরে ভয় অনেক,
আমায় বলল জনে জনে
তবু কথায় কান দিইনি ওদের...
#
রাত্রি জাগার রীতি
কেবল জানত সে বাড়িটি
সাতাশ নং বকুলবাগান রোডের...
#
হঠাৎ চিলেকোঠার
খুলে জানলাখানি, ও তার
মুখ বাড়িয়ে ডাকল, বলল, “শোনো,
#
সেই প্রথমদিন দুপুরবেলায়
যেদিন আমরা এলাম
হাওয়া ছিল না একটুও, বর্ষণও
#
একটি গাছ, স্থানীয়
ওগো মানুষ, ওদের জানিও
দাঁড়িয়ে ছিল আমারই পাশে, রোদে
#
রাত্তিরে তিনস্রোতা
সেই আগুন ছিল কোথায়
লাগল এসে এই আর্ত দেহে...
#
বনানী যখন দীপ্ত-র হাত ধরে আমায় ছেড়ে চলে যায়, তখন আমাদের ছেলে সূর্য-র বয়স দুই। বিয়ের প্রথমদিন থেকেই ওর অসাচ্ছন্দ্য ছিল আমাকে নিয়ে। সেটা ও একাধিক বার যেমন মুখে বলেছিল, শেষদিকে প্রত্যেকটা আচরণ দিয়ে আমায় বুঝিয়েও দিত সেটা। বিয়ের ছ’মাসের ভিতরেই দীপ্ত-র সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ও । তারপরেও কেন ও সন্তানধারণ করল আমার কাছে তা এক রহস্য। আমি পরে ভেবে দেখেছি, যখন কনসিভ করছে, তখন ও রীতিমতো ইনভলভড অন্য পুরুষের সঙ্গে। একজন মা যখন তার দু’বছরের শিশুসন্তানকে ফেলে অন্য লোকের সঙ্গে চলে যায়, বুঝতে হবে সে জাত-স্বৈরিণী। আমি অবাক হয়ে ভাবতাম এরকম একটা বিষাক্ত সাপের সঙ্গে বিয়ের আগের দু’বছর আর বিয়ের পরের তিনবছর কীভাবে ঘর করেছিলাম আমি! আর কীভাবে একজন সিঙ্গল ফাদার হিসেবে একটা দু’বছরের বাচ্চাকে বড়ো করে চলেছি আজও, তা ভাবলেও নিজেই বিস্মিত হয়ে যাই আমি। অবশ্য, তৃষা পাশে না থাকলে আমার পক্ষে পথ চলা মোটেও সুবিধার হত না। ওর স্বামীর বিজনেস ছিল নর্থ-ইস্টে। অরুণাচল প্রদেশে এক মারাত্মক রোড অ্যাক্সিডেন্টে স্পট ডেড হয় সে । গোটা শরীরটা থেঁতলে গিয়েছিল। তখন ওদের মেয়ের বয়স মাত্রই চার বছর। আমাদের কারোরই সেভাবে কোনো ফ্যামিলি সাপোর্ট ছিল না। আমরা দুজনেই কলকাতায় বহিরাগত। ওর অরিজিনাল বাড়ি শিলিগুড়িতে। আর আমি বহরমপুরের ছেলে। আমার বৃদ্ধ মা এখন চলৎশক্তিহীন। ভাইয়ের সংসারে থাকে। আর, তৃষার বাবা-মা কেউই বেঁচে নেই। তৃষা ইতিহাস পড়ায় দক্ষিণ কলকাতার একটা নামী কলেজে আর আমি একটা মাঝারি খবরকাগজের বার্তা বিভাগের চিফ এডিটর। বিগত তিনবছরের পথচলায় আমরা একে অপরের সঙ্গে মিশে গিয়েছি। অফিসিয়ালি বিয়ে করিনি আমরা। কিন্তু তৃষার বাইপাসের ফ্ল্যাটেই একসঙ্গে থাকছি আমরা গত দু’বছর ধরে। আমাদের ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে ভাইবোনের মতোই বেড়ে উঠছে। নির্ভরতা, বিশ্বাস, আকর্ষণ সব কিছু মিলেমিশে আজ এরকম জায়গায় পৌঁছেছে যে, তৃষাকে ছাড়া নিজের জীবন কল্পনাও করতে পারি না আমি। তৃষাও অন্ধের মতো বিশ্বাস করে আমায়। ওর শরীরে নিজেকে মিশিয়ে দিতে দিতে আমি টের পাই আমার বুকের ভিতরের জমাট-বাঁধা কান্না ধুয়ে যাচ্ছে। উথাল সমুদ্রের ঢেউয়ের বুকে এসে মিশছে স্বাতীনক্ষত্রের একফোঁটা জল। এবার বছরের এই মাঝখানে আলটপকা কয়েকদিনের ছুটিতে আমরা এসেছি নর্থ বেঙ্গল। দার্জিলিং আর কালিম্পং-এর কয়েকটা রিমোট স্পটে হোম-স্টেতে থাকব আমরা। এই মুহূর্তে আমরা রয়েছি সেলারিগাঁও বলে একটা ছোট্ট জায়গায়। যেন বিজন সভ্যতার বাইরে এক কুয়াশাচ্ছন্ন, বৃষ্টিভেজা পাহাড়ি গ্রামের ভিতর আমাদের মতো দুটো তুচ্ছ মানব-মানবীর এই আদি-অকৃত্রিম পথ-চলায় ফুটে উঠেছে এক আদিম ছন্দ। আমাদের ছেলে-মেয়েরা বেড়ে উঠছে সেই তীব্র প্যাশনেট ভালোবাসার বাতাবরণে। সূর্য-কে নিজের সন্তান হিসেবে প্রথম দিন থেকেই মেনে নিয়েছিল তৃষা। আর, আমার, বহুদিনের কন্যাসন্তানকে বড়ো-করে-তোলার স্বপ্ন পরিপূর্ণ হয়েছে দিয়াকে কাছে পেয়ে। ওরা দুজনেই যেহেতু বয়সে খুব ছোটো ছিল মা এবং বাবা-কে হারাবার সময়, তাই হয়তো আমাদের এতো সহজে ও সচ্ছন্দে মেনে নিতে ওদের কোনো সমস্যা হয়নি। আজ আমি নিঃসংশয়ে বলতে পারি, অন্য যেকোনো মন্ত্রপূত স্বামী-স্ত্রীর চেয়ে অনেক গভীর আর মানবিক সম্পর্কে জড়িয়ে আছি আমি আর তৃষা। আমি যেকোনো মূল্যে এই ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে বদ্ধপরিকর । আমার ধারণা, তৃষাও তাই।
#
আমরা সেলারিগাঁওতে পৌঁছনোর পরদিন থেকেই গোটা পাহাড় জুড়ে অনির্দিষ্টকালীন বন্ধ আর লাগাতার অবরোধ ডেকেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। আমি কাল রাতেও আমাদের হোম-স্টের ডাইনিং রুমে বসে টিভি-তে দেখলাম কীভাবে হাজার হাজার মোর্চা সমর্থক ম্যাল-এ বিশাল জমায়েত করছে। যেখান থেকে মোর্চা নেতৃত্ব ঘোষণা করছে আলাদা স্বাধীন গোর্খাল্যান্ড না পাওয়া পর্যন্ত ওদের এই আন্দোলন আর অবরোধ চলবে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে মিটিঙে কোনো সমাধান-সূত্র বেরোবে না, আমার এতোদিনের সাংবাদিক দূরদৃষ্টি থেকে বুঝতেই পারছিলাম। শুধু মাঝখান থেকে আটকা পড়লাম আমাদের মতো ছা-পোষা মানুষেরা, যারা, আকস্মিক ভাবেই এসে পড়েছিলাম এই অফ সিজনে। আমি আজও জানি না কীভাবে এখান থেকে বেরিয়ে যাব আমরা। শুধু আশায় আছি, ট্যুরিস্টদের পাহাড় থেকে সমতলে নামায় নিশ্চয়ই ছাড় দেবে ওরা। এমনিতেই খোদ দার্জিলিং শহর রীতিমতো জ্বলছে এখন। জায়গায় জায়গায় টায়ার পুড়ছে। ব্যারিকেড করে আটকে দেওয়া হচ্ছে সরকারি যানবাহন। কাল রাতে বেশ কয়েকটা সরকারি অফিসে আগুন জ্বালিয়ে ভাঙচুর করেছে ক্ষিপ্ত মোর্চা সমর্থকেরা। গতকাল সন্ধেয় রোশন গিরি প্রেস কনফারেন্স করে ঘোষণা করেছেন এই লড়াই গোর্খা জাতিসত্তার আমরণ স্বাধীনতার লড়াই। এখন, এই মুহূর্তে, গোটা পাহাড়ের জনগণ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পাশে রয়েছে। কিন্তু, অনির্দিষ্টকালীন বন্ধ ও অবরোধ চলতে থাকলে, নীচের সমতলের সঙ্গে সাপ্লাই লাইন বন্ধ হয়ে গেলে, বিশেষত, ট্যুরিস্ট আসা স্তব্ধ হয়ে গেলে, সবচেয়ে বড়ো অসুবিধায় পড়বে এখানকার পাহাড়বাসীরাই, যাদের সিংহভাগ মূলত পর্যটন ব্যবসার উপরেই নির্ভরশীল। আমি এইসব নিয়ে ভাবছিলাম না। এই মুহূর্তে আমার একমাত্র দুশ্চিন্তা কীভাবে তৃষা আর আমাদের দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে আমি এনজেপি পৌঁছব। নির্দিষ্ট দিনের টিকিট কাটা আছে। আরও বেশ কয়েকটা নতুন স্পটে যাবার কথা ছিল, হোম স্টে বুকিং করাও ছিল। কিন্তু আর একদিনের জন্যও রিস্ক নেওয়া সম্ভব নয়। কাল ভোরেই নীচে নামার ব্যবস্থা করতে হবে। এক আকস্মিক অবরোধের মধ্যে পড়ে দিশেহারা লাগছে আমার এই মুহূর্তে।
#
তৃষার দুহাতের নখ আমার নগ্ন, খোলা পিঠে বসে যাচ্ছে। এতো নরম, এতো নিখুঁত পেলব শরীর ওর, যেন মনে হয়, ও আমার সেই কবেকার কৈশোরে-হারিয়ে-যাওয়া স্বপ্নের জলকন্যা। ও যে আমার মতো একটা অসহায় মানুষকে এতোটা ভালোবাসবে, এতোটা আপন করে নিতে পারবে, প্রথমটায় আমি কল্পনাও করতে পারিনি। বিশেষত, বাঙালি মেয়েরা অন্যের সন্তানকে কোনোদিন আপন করে নিতে পারে না, এই বহুকাল ব্যাপী শুনে আসা মিথ ও আমার জীবনে ভেঙে দিয়েছে। আমি শুধু সেই কারণেও কৃতজ্ঞ থাকতেই পারি ওর কাছে। কিন্তু, কেবল প্রয়োজনের জায়গা থেকেই নয়, আমি ওর কাছ থেকে যে মনোযোগ, সম্মান পেয়েছি, যে অ্যাফেকশন ও আমায় দিয়েছে তা আমার মতো নোঙর-হারানো, বন্যায়-ভেসে-যাওয়া মানুষের কাছে অনেক বেশি পাওয়া। যেটা ও হয়তো জানেও না, সচেতনও থাকতে চায় না এরকম সামান্য মুগ্ধতাবোধ নিয়ে।
#
রাত ফিকে হয়ে আসছে। পাশের খাটে ঘুমিয়ে কাদা হয়ে রয়েছে দুটো নিষ্পাপ মুখ। আমার নীচে, শরীরের ভিতর মিশে রয়েছে এক উদ্ভিন্ন নারীর শরীর। আমি থামিনি, জয়ের কবিতার পরবর্তী লাইনগুলোও আমার মুখ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বেরিয়ে আসছে তখন :
#
জ্বলে উঠল বাড়ি
আমি কি আর ঘুমোতে পারি?
ও যে বলল, কী আছে তোর, দে...
#
আমি ও ছোড়দি, তখন
দুজনে দোর দিই
ভিতরে নেমে গহন প্রতিশোধের
#
তারপরও ভয় অনেক,
এমন বললেন সজ্জনে,
কেউ ফেরাল ঘৃণায় মুখ, কেউ ফেরাল ক্রোধে
#
বয়সটা খুব খারাপ, তোমায়
বলেছিলেন যারা,
তারা কি যান, বকুলবাগান রোডে ?
#
মন্ত্রমুগ্ধের মতো অমোঘ পঙ্ক্তিগুলো শুনতে থাকে তৃষা । এবার যন্ত্রচালিতের মতো আমি প্রবেশ করি ওর শরীরে । দুটো যুগনদ্ধ শরীর একে অপরের সঙ্গে মিশে যায় । আড়চোখে তাকিয়ে দেখি জানলার কাচে লেগে
থাকা পুরু কুয়াশা। এই শেষরাত্রি, এই অবর্ণনীয় শরীরী মিলন, এই অপার্থিব রতি উদ্যাপন, এই পাহাড়ের দূর সীমারেখা ভেঙে হালকা ভোরের আলোর বর্ণালি, এই ঘুমন্ত দুই শিশুর মুখ, আমার বাহুবন্ধনে এই পরাবাস্তব নারী, সব কিছু ছাপিয়ে আমাদের আত্মায় মিশে যাচ্ছে জয় গোস্বামীর কবিতার এই অন্তর্গত দৈহিক উদ্যাপন ও সন্ত্রাস, ভায়োলেন্স, আমি নিজেই জানি না পরবর্তী মুহূর্তে কী ঘটবে, বিশেষত এই হঠাৎ-ঘনিয়ে ওঠা রাজনৈতিক ডামাডোলে আমাদের মতো তুচ্ছ মানুষ কীভাবে ঘরে ফিরব, তাও অনিশ্চিত । আমি আরো তীব্রভাবে আঁকড়ে ধরি তৃষাকে।
#
ভোর হচ্ছে । আকুল সঙ্গমের পর ঘুমিয়ে পড়েছে তৃষা । আমি গায়ে চাদর জড়িয়ে বারান্দায় আসি । রোদ উঠছে । যেন সমস্ত বিপর্যয় মুছে ফেলে হাসছে এই গম্ভীর পাহাড় । অনিশ্চয়তাই একেক মুহূর্তে হয়ে ওঠে সমস্ত সৌন্দর্যের জননী ।
#
হালকা, তিরতিরে হাওয়ায় কাঁপছে সামনের পাহাড়ি ঢালে ফুটে-ওঠা রডোডেনড্রন-গুচ্ছ । আর একটু বাদে, রোদ উঠলে, তার রঙিন আগুনের মতো আভা পুড়িয়ে দেবে আমাদের অজানা ভবিষ্যৎ...