শারদীয়া উপলক্ষ্যে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় শুরু হয়েছে পুজোর বিশেষ গল্প। আজ, মহালয়া, পিতৃপক্ষের অবসান এবং দেবীপক্ষের সূচনা। আজকের গল্প 'ঘুরপথে'। মূল লেখক - মণিপুরী সাহিত্যিক বিমাবতী থিয়াম অঙ্গবি। অনুবাদ - পূর্বা দাস
থঙ্গল বাজারের মহিলা মার্কেটটি বিশাল এলাকা জুড়ে। মাছের ছোট ছোট দোকানগুলো মার্কেটের একদম মধ্যিখানে। বাজারের হট্টমেলার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। দোকানগুলোয় যেসব ঝুলকালি মাখা তেলের বাতি জ্বলছে, আর তা থেকে যে পরিমাণ কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে তাতে আমার জামা কাপড় তো বটেই, হাত পায়ের অবস্থাও কাহিল করে ছাড়বে। আর সন্ধ্যা বাজারের এই চ্যাঁচামেচি! আমার নাক সুড়সুড় করতে শুরু করেছে। ভাল মাছ কিনে বাড়ির সবাইকে চমকে দেবার ইচ্ছাটা উবে যাচ্ছে খুব দ্রুত।
তিন-চারটে দোকান পেরিয়ে অল্পবয়সী চেহারার একজন মহিলার সামনে দাঁড়ালাম। মাথা ঝুঁকিয়ে ও জল ছিটোচ্ছিল টিনের বড় গামলায় রাখা মাছগুলোতে। বারবার মাছগুলোকে নাড়াচাড়া করছিল, উল্টে পাল্টে দিচ্ছিল। আমি জানতে চাইলাম,
- ঐ দুটো রুই মাছ কত পড়বে?
হয়তো আমার কথা শুনতে পায়নি। উত্তর দিল না। আরেকটু গলা চড়িয়ে বললাম,
- এই মেয়ে, তোমার ঐ রুই মাছের দাম বলো না...
মাছ দুটোকে একটা টোকা মেরে বলল,
- একশ আশি টাকা কিলো। দুটো নিলে দেড়শ করে দিতে পারব।
এখনো ওর মাথা মাছের গামলার দিকে ঝুঁকে রয়েছে।
- বড্ড বেশি বলছ। দুটো মাছ তো এক সাইজেরও না। আমি একশ চল্লিশ করে দেবো।
- তার চাইতে আপনি বরং অন্য কোথাও দেখুন। আমি এর কমে দিতে পারব না।
এবারে ও চোখ তুলে তাকিয়েছে আমার দিকে।
আরে! আমি চমকে উঠেছি। কেরোসিন ল্যাম্পের ঝিকিমিকি আলোতে এখন ওর মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সে মুখেও বিস্ময়ের ঘোর; কিন্তু পূর্ব পরিচয়েরর স্বীকারোক্তি এখন আমাদের দৃষ্টিতে ভোরের আলো ফুটিয়েছে।
- সনাতম্বি!
ও চুপ করে থাকল। হাত তুলে যা বলতে চেয়েছিল তাও উহ্য রইল। ধীরে ধীরে ও হাত নামিয়ে রাখল নিচে। চোখ আনত হল। কোমল স্বরে বলল,
- ব্যাগটা দাও। মাছগুলো দিয়ে দিই।
সনাতম্বি মাছগুলো ব্যাগে ভরছিল যখন, আমি বেশ কয়েকটা একশ টাকার নোট ওর সামনে রেখে দিলাম। নীরবে ও ব্যাগটা ফিরিয়ে দিল আমায়। ফিরে যাব বলে ঘুরেছি, ও ডাকল।
- দাঁড়াও তোমাকে চেঞ্জ দেওয়া হয়নি।
- রেখে দাও।
- না, তুমি তো জানো, প্রয়োজনের বেশি টাকায় আমার লোভ নেই। আর অন্যের টাকায় তো নয়ই।
অন্যের টাকা! ধক্ করে কথাটা বুকে বাজল। একটা ভারী ব্যথা যেন খেলা করে গেল অনেক ভেতরে। আমি বাকি টাকাটা নিয়ে আর একটিও কথা না বলে চলে এলাম ওখান থেকে।
আগেও, যখন সনাতম্বি আমার খুব ঘনিষ্ঠ ছিল, তখনও কোন বিশেষ সুবিধা কারো থেকেই কখনো নিত না। ও এমনই। প্রায়ই বলত,
- আমি কেন অন্যের দয়ায় বাঁচব? আমিও তো মানুষ। আমার সাধ্যমত কাজ করব আমি। শেষ পর্যন্ত ভাল ভাবেই বেঁচে থাকবে আমি, দেখো।
ওর প্রতিটা কথা আমায় ভাবাত। যখন ও আমার সাথে ছিল জীবনের একটা সুন্দর ছন্দ ছিল। কি অদ্ভুত পরিনতি! আমারই একটা কথা সারা জীবনের মতো আমার পরম শত্রু হয়ে রইল। 'আমার পরিবার হয়তো তোমাকে পছন্দ করবে না' মাত্র এই কয়েকটা শব্দ ওকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। সত্যি বলতে, ওর পরিবার ছিল খুব ছোট। ওর মা, ছোট ভাই আর সনাতম্বি। আমাদের পরিবারের থেকে অনেকটাই আলাদা। কিন্তু আমি এক মুহূর্তের জন্য ভাবিনি যে এই ব্যাপারটা আমাদের মধ্যে বিচ্ছেদ আনতে পারে।
পরের দিন কিছুতেই অফিসের কাজে মন বসাতে পারছিলাম না। খুব তাড়াতাড়ি সব শেষ করতে চাইছিলাম। ঘড়িতে চারটে বাজল। সহকর্মীরা একে একে ঘরমুখো হল। প্রবল ইচ্ছা সত্ত্বেও আমাকে আরো কিছুক্ষণ আটকে থাকতে হল। অবশেষে একসময় কাজ শেষ হল। আমি আমার মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম আমার এতক্ষণের ভাবনার উৎসের দিকে।
দুজন মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল সনাতম্বির দোকানের সামনে। আজও মাথা নিচু করেই ও দরদাম করছিল। আমি এক কোনে দাঁড়িয়ে ওদের লক্ষ্য করছিলাম। ওই দুজনের মধ্যে একজনের চোখের দৃষ্টি আর ভাবভঙ্গি আমার একদম ভাল লাগছিল না। কথা বলার ধরনটাও বেশ অভব্য। সনাতম্বি চুপচাপ ওর মাছেদের পরিচর্যায় ব্যস্ত। সেই লোকটি বলল,
- দেড়শ টাকাতেই দিয়ে দাও মাছগুলো। তোমার মত সুন্দরী মেয়েরা সবসময়ই খরিদ্দারের সাথে সদয় ব্যবহার করে, তাই না?
সনাতম্বি এবার খর চোখে ওদের দিকে তাকাল।
- শুনুন, শুধু শুধু কথা বাড়াবেন না। আমার সময় নষ্ট হচ্ছে। যান, আমাকে কাজ করতে দিন।
ও মাছগুলো খুব দ্রুত এক টুকরো কাপড় দিয়ে ঢেকে দিল। লোক দুটি আশা করেনি এ ধরনের উত্তর আসতে পারে। কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল, তারপর অন্যদিকে হাঁটতে শুরু করল ওরা।
লোকদুটি চলে যেতে সনাতম্বি একটা চেপে রাখা নিঃশ্বাসকে বেরিয়ে যেতে দিল। চারপাশের ভীড়ে ও সন্ধানী চোখে তাকাল পরবর্তী খরিদ্দারের আশায়। এবার আমি ধরা পড়ে গেলাম। কিন্তু ও কিছুতেই আর চোখ তুলে তাকাল না। আমি ওর ছোট্ট দোচালার সামনে এসে খুব মৃদুস্বরে ডাকলাম,
- সনাতম্বি!
ও উত্তর দিল না। সনাতম্বি কে এভাবে এখানে মাছ বিক্রি করতে দেখব, এ আমার কোন গভীর দুঃস্বপ্নেও ছিল না। ওর সম্পর্কে আরো অনেক প্রশ্ন আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। আমি আরো একটু ঘন হয়ে এলাম।
- সনাতম্বি, তুমি কি আমি আসাতে অসন্তুষ্ট হয়েছ?
এবারেও ও নীরব। কিন্তু মাথাটা আরো ঝুঁকে পড়ল মাছের গামলার দিকে। আমি বলে চললাম,
- আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না, তুমি... এখানে, এই অবস্থায়...
- হমম্
- তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে না? ফিরবে না তুমি?
- সব মাছ বিক্রি না করে ফিরি কি করে? বিক্রি না হলে এই ভেড়ির মাছগুলো সকালে সব নষ্ট হয়ে যাবে।
-সে তো ঠিকই। কিন্তু সব মাছ বিক্রি হতে হতে তো অনেক রাত হয়ে যাবে। ও কি তোমাকে নিতে আসবে?
আবার নীরবতা। ওর চুপ করে থাকা বিব্রত করল আমায়। আমি কি এমন কিছু বলে ফেলেছি, যা বলা উচিত নয়? আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
- সনাতম্বি, কিছু ভুল কথা বলে ফেললাম নাকি?
- না, ভুল আর কি? তবে তাইচউ, তুমি সম্ভবত জানোনা দু বছরের বেশি হল, ও আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।
এবার চুপ করে থাকার পালা আমার। কথা হারিয়ে ফেলেছি, কিন্তু অবাধ্য চোখ সরিয়ে নিতে পারছি না ওর মুখ থেকে।
- এই মাছ দুটো কত নেবে ?
এক মহিলা খরিদ্দারের প্রশ্নে চমকে উঠলাম।
- একশ আশি।
- একশ চল্লিশ দেব।
- আমার কেনা দামও নয় এটা। একশ পঞ্চান্ন টাকা দিতে হবে।
- আচ্ছা দেড়শ নাও।
- বড্ড দেরি হয়ে গেছে আজ... ঠিক আছে, তাই দিন।
মহিলা নিজের দরদামের কৃতিত্বে বেশ খুশি হয়ে মাছ নিয়ে চলে গেলেন। বেশ কিছু ক্যাটফিশ আর মাডফিশ পড়েছিল ওর ঢাকনা খোলা টিনের গামলাটায়।
- সনাতম্বি, বাকি মাছগুলো আমি নেব। বল, কত দিতে হবে?
- তাইচউ, তুমি ওগুলো এমনিই নিয়ে নাও।
- না, না - তা হয় না। অনেক মাছ আছে ওখানে। একটা একশ টাকা অন্তত রাখো।
- আমি বাড়তি পয়সা নিই না।
- এটা আমি, সনাতম্বি। কোন রাস্তার লোক না।
- আমার কাছে অন্য কেউ যা, তুমিও তাই তাইচউ।
লজ্জায় আমার সমস্ত সত্ত্বা সংকুচিত হয়ে গেল। ও বলে চলল,
- ও মারা যাবার পর থেকে আমি কখনো কারো কাছেই সাহায্য ভিক্ষা করিনি। আমিও তো মানুষ। যতদিন পারব নিজের শক্তিসামর্থ্য দিয়েই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবো। আমার সন্তানদেরও বড় করে তুলব। জানো, বড়টা এখন বেশ তালেবর হয়েছে। ও ওর ছোট ভাইকে বেশ দেখেশুনে রাখে। সাথে ঘরের কাজকর্মও ভালই পারে।
- কটা বাচ্চা তোমার?
- দুটোই মাত্র। ছোটটাও এখন মোটামুটি বড় হয়েছে। বাড়িতে রেখে আসতে পারি নিশ্চিন্তে।
ও আমাকে কুড়ি টাকা ফেরত দিল।
- তাইচউ, এটা নাও।
- রেখে দাও না। বাচ্চাদের জন্য কিছু খাবার কিনে নিও।
- সে তো আমি রোজই ওদের জন্য কিছু না কিছু নিয়ে যাই। আজও নেব।
ওর স্বরে অনমনীয়তা।
- সনাতম্বি! তুমি কি এখনো আমাকে অপরাধী ভাবো?
আমার গলা কাঁপছে। তবু আমার বিদ্রোহী হৃদয় এ প্রশ্ন না করে পারল না। ও উত্তর দিল না। কিন্তু আমার দিকে অদ্ভুত এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। সেই দৃষ্টির অর্থ কিছুতেই আমার বোধগম্য হল না। ওর দিকে আর চোখ তুলে তাকাতে পারছিলাম না। চারপাশে অনেক লোকজন। আমি আরো একবার একই প্রশ্ন করতে গিয়েও থমকে গেলাম। যদি কারো কানে যায়! কিছুক্ষণ বাদে ও নিজেই মুখ খুলল।
- তাইচউ, ও ভীষণ ভাল মানুষ ছিল। সবসময় আমাকে আর বাচ্চাদের আগলে রাখত। আমাদের ভাল রাখার জন্য ও বিশ্রাম নিতেও ভুলে গিয়েছিল। একদিন ও ছোট ছেলেটাকে নিয়ে বাজারে গিয়েছিল। গুটগুট করে হাঁটে তখন বিচ্ছুটা। একটুখানি অন্যমনস্কতার সুযোগে ও রাস্তার মাঝখানে চলে আসে। তখনই একটা গাড়ি প্রায় ওর মুখোমুখি এসে পড়েছিল। ও ছেলেকে সরিয়ে নিল কিন্তু নিজেকে পারল না। আমাদের ছেলে বেঁচে রইল, কিন্তু ও... সারা জীবনের মত ও হারিয়ে গেল আমার কাছ থেকে।
আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়নি সনাতম্বি, কিন্তু অতীতের কাহিনী গুনগুনিয়ে বলছিল এমন ভাবে যেন সেটা একটা গল্প। আমি কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানাব, ভেবে পাচ্ছিলাম না।
- তারপর?
- তারপর থেকে আমি নিজের চেষ্টাতেই ছেলেমেয়েদের মানুষ করছি।
- অ্যাই সনাতম্বি! গোটাও...চলো, যাওয়া যাক...
অন্য এক মহিলা বিক্রেতা চেচিয়ে ডাকল ওকে।
- হ্যাঁ মামী, হয়ে গেছে। তুমি তোমার জিনিসগুলো গুছিয়ে নাও, যাচ্ছি।
ও আমার দিকে ফিরে বলল,
- তাইচউ, আসি তাহলে।
- তোমার ওদিকে তো যানবাহন খুব কম চলে। কিভাবে ফিরবে?
- না না অনেক অটো রিকশা যায় আমাদের ওদিকে।
-ঠিক আছে, যাও তাহলে। অনেকটাই রাত্রি হয়ে গেছে।
দেখলাম ও মাছের গামলা মাথায় তুলে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মিলিয়ে গেল অন্ধকারে। কি আর করার ছিল আমার! আমিও সোজা বাড়িতে ফিরলাম।
সেদিন সারারাত বিছানায় এপাশ-ওপাশ করলাম। ওর স্বামীর মৃত্যুর খবরটা আমাকে ভীষণভাবে আন্দোলিত করেছিল। ঘুমোতে পারছিলাম না কিছুতেই। আমার স্ত্রী জানতে চাইল,
- ঘুমোচ্ছ না কেন? কিছু হয়েছে? শরীর খারাপ লাগছে নাকি?
- না, না, আমি ঠিক আছি।
এই উদ্বেগ একান্তই আমার একার। আমার স্ত্রী এটা জানুক আমি চাই না। যদিও ও সব সময় আমাকে নিয়ে, আমার সুখ- স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা করে। কিন্তু সনাতম্বির ভাবনা আমাকে ছেড়ে গেল না কিছুতেই। বহু প্রশ্ন ঢেউয়ের মত মাথার ভেতরে আছড়ে পড়ছিল। সনাতম্বি, কিভাবে তোমার এই দশা হল? আমি আমার সাধ্যমত তোমার পাশে থাকতে চাই। তুমি এভাবে বাজারে মাছ বিক্রি করতে পারো না। তোমার স্বামী থাকলে কি এটা পারতে? আমিও তো... এভাবেই চিন্তার পরতগুলো একের পর এক খোলা পরা হতে থাকল ভোর অবধি।
আজ রোববার। অফিস বন্ধ। বিকেলে একবার সনাতম্বিকে দেখতে যাবার প্ল্যান করছিলাম। সকাল থেকে কোন কাজে মন বসছে না। অধৈর্য আমি শুধু বিকেল হবার অপেক্ষায় সময় গুনছি। কেন জানিনা, হার্টবিট খুব বেড়ে গেছে আর অদ্ভুত এক আশঙ্কা আচ্ছন্ন করেছে আমাকে।
মাছের বাজার এমনিতেই ভীড়ে ভীরাক্কার।চারদিকে বিশৃঙ্খলা আর দম বন্ধ করা একটা পরিবেশ। ওর ছোট চালাটা পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া বেশ দূরূহ।
আরে, এটাই সেই জায়গাটা নয়? কালই তো ওকে আমি এখানে দেখেছি। অবশ্যই এই সেই জায়গা। আমি চারপাশে তাকালাম। না কোথাও সনাতম্বির ছায়াও নেই। আমার সুদূর কল্পনাতেও ছিল না যে ও আজ এখানে থাকবে না।
এক বৃদ্ধা মাছওয়ালি যে একটু দূর থেকে আমায় লক্ষ্য করছিলেন, বুঝতে পারিনি। এগিয়ে এসে বললেন,
- বাবুমশাই, আপনিই তো সেই, যিনি কদিন ধরে এখানে রোজ আসছেন?
- হ্যাঁ আমিই।
- সনাতম্বি আজ তাড়াতাড়ি চলে গেছে। আপনাকে জানানোর জন্য কটি কথা ও আমাকে বলে গেছে।
- কি?
- বলেছে, ওর বাচ্চাদের জন্য ও একাই লড়াই করতে চায়। বলেছে, আপনি যেন ওর খোঁজে আর এখানে না আসেন।
কি বলব আমি! বৃদ্ধার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেও কেমন অস্বস্তি হচ্ছে। একটা অতি চঞ্চল ক্যাটফিশ বৃদ্ধার মাছের গামলা থেকে লাফিয়ে বেরিয়ে এল। আমার পায়ের পাতায় ওর ধারালো পাখনার আঘাত করে মাটিতে পড়ে রইল কিছুক্ষণ। তারপর ঝটপট করতে করতে খুব তাড়াতাড়ি পাশের নর্দমার জলে ঝাঁপিয়ে আমার দৃষ্টির বাইরে চলে গেল।