বইমেলায় সহস্র স্টলের ভিড়, নিজেদের পছন্দমতো সকলেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বই কিনছেন। কেউ কেউ স্টলের আকার আয়তন দেখেই ঢুকে পড়ছেন সেইখানে। ভিড় দেখেও দোকানের সামনে লাইন লাগাচ্ছেন অনেকেই, কিন্তু এরই মাঝে লিটল ম্যাগাজিন স্টলের চিত্র ঠিক কেমন?
ঢুঁ মারতেই দেখা গেল, স্টলের সামনেটা বেশ ফাঁকা। হাতে গুনে কয়েকজন মানুষ, তাও তাঁরা বেশিরভাগই বই দেখছেন, আদৌ কিনবেন কিনা সেই সম্পর্কে নিশ্চিত নয়। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি? জিজ্ঞেস করতেই এক সদস্য জানালেন, বিশেষ করে এই ম্যাগাজিনের বই নিয়ে মানুষের সেইভাবে আগ্রহ নেই অথবা ভালভাবে বলতে গেলে হাতে গুনে খুব কম সংখ্যায় আছেন, যারা লিটল ম্যাগাজিন পত্রিকার পাঠক। তাঁদের বাইরে সেইভাবে কেউ আসেন না, সুতরাং স্টলের সামনে অন্যদের মতো ভিড় থাকার কথাও নয়।

২৪টি প্রকাশনী সংস্থা মিলিয়ে লিটল ম্যাগাজিনের স্টল। তাতে দর্শকদের বই নিয়ে বোঝাতে ব্যস্ত সদস্যদের অনেকেই। কতটা কীরকম বিক্রি হচ্ছে এই বছর? জিজ্ঞেস করতেই শুভশ্রী লিটল ম্যাগাজিনের কর্ণধার জানালেন, এখনই সেইভাবে বলা সম্ভব নয়। রবিবার বইমেলা শেষ হলে সমস্ত সম্পাদকরা তাঁদের সদস্যের সঙ্গে কথা বলবেন, তখনই জানা যাবে কাদের বই বেশি বিক্রি হয়েছে। তবে একথা ঠিক, যাঁরাই ঢুঁ মারছেন তাঁরা কিছু বইয়ে আকৃষ্ট হচ্ছেন, তার মধ্যে চিনের একটি বই অন্যতম। এতে চিনের শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক বিবরণের সঙ্গেও রয়েছে সেদেশে বসবাসকারী এক ভারতীয় নাগরিকের দেশ দর্শন, অর্থাৎ তিনি কীভাবে চিনকে দেখছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার সূত্রেই অনেকে এসে বলছেন, একটা চিন দিন! এতে একটু হলেও জনপ্রিয়তা বোঝা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন বইয়ের কোনও ধর্ম নেই, অর্ধ শতক ধরে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে চলেছে ‘হরফ প্রকাশনী’

পাঠকদের মধ্যে কেমন আমেজ বুঝছেন বিক্রেতারা? আরেক সদস্যের মন্তব্য, “পাঠক আসছেন, বই দেখছেন কিন্তু সেইভাবে কেনার ইচ্ছে তাঁদের মধ্যে থাকে না। ঝাঁ চকচকে দোকান, স্টল দেখে অনেকেই বেশি আকৃষ্ট হন। তবে যাঁরা আসেন তাদের প্রত্যেককেই যথাসাধ্য বই নিয়ে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করা হয়।”
বোঝাই যাচ্ছে, ভিড়ের মাঝে লিটল ম্যাগাজিনের পাঠক সংখ্যা খুবই কম। অনেকে তাঁদের খোঁজ পর্যন্ত করে না। সেই স্টলের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই অনেকেরই। তবে বইমেলা যতদিন থাকবে লিটল ম্যাগাজিন একইভাবে থাকবে, এবং পাঠকদের প্রতি তাদের খামতি থাকবে না।

আরও পড়ুন মন পড়ে আছে দেশে, যুদ্ধ নয় বইমেলায় বসে শান্তির কথাই বলছেন রুশ নাগরিকরা