ফ্রান্স
তার ওয়াইন রঙের চুলভর্তি মাথায় আস্ত ফরাসি দেশ লুকিয়ে
আমি পার্কস্ট্রিট থেকে ফোন করি
আঙুলে সিগারেট পুড়ে যায়
আবার সমুদ্রতীর-
আবার হাতঘড়ি বিনিময় ।
তার আলোকসামান্য জিন্স-এ রাজত্ব করে শীতকাল
পুরোনো চকমকি পাথরের গল্প ভুলে যাই
অ্যালবাম চিনতে পারি না
ওর জিন্স, ওর ওই আলোকিত জিন্স-এ দেখি কমলা মেপল পাতাদের ভিড়!
প্যারিসের রোডসাইড ক্যাফেগুলি ওর এলোমেলো টি-শার্টে সূর্যমুখীর ডানা
ছড়িয়ে রাখে।
কফি আর সামান্য সুরায় আমি তখন টলমল-টলমল –
আর ফ্রান্স আমাকে লুকিয়ে স্টিয়ারিং ধরে তক্ষুনি
উইন্ড স্ক্রিনে চাঁদ-তারা আঁকে আদরসম্ভব ইচ্ছেরা।
পার্কস্ট্রিট জানে না, ফ্রান্স ভুলে গেছে
আমার কিন্তু পাসপোর্ট জীবন্ত
আমার ভিসায় মহামান্য দূতাবাস মানচিত্র দিয়েছেন
ফ্রান্স জানে না, পার্কস্ট্রিট ভুলে গেছে
এই যে ভিখারিনী ওদের পথে বসে হাত এগিয়ে দেয়
তার ছেঁড়া ঝোলায় ওইসব ছায়াপথ, আসা-যাওয়া
জমানো বহুকাল।
বহুকাল সে সব সে দেখে নি
আজ এই ওয়াইন রঙের দিন, শান্ত রক্তকরবীর মতো মায়াময় ফ্রান্স
সে-ই উপহার দিয়েছিল আমায়
উদাসীন ঘুড়ি ওড়াতে ওড়াতে আমি পালাতে পারি নি
ওই এক টুকরো ইউরোপ থেকে
-ভিখারিনী ভুলে গেছে, ফ্রান্সও জানে না এখনও।
আরও বাংলা কবিতা পড়ার জন্য ক্লিক করুন এই লিংকে
লেখার টেবিল
মাঝরাতেও লেখার টেবিলে আলো থাকে।
শীতকাল ঘন হয়ে আসে চারপাশে
দেওয়ালের ওপারে সব পাখি,গাছ এবং বাড়ির একমাত্র বন্ধ জানলাটি।
কাঁচে সারাদিন বাতাসের শব্দ হয় –
ভোরবেলা আমার ফিরে যেতে ইচ্ছে করে
ফিরে যেতে ইচ্ছে করে ইছামতী পার হয়ে
অথচ এসময়ে মাথাভরা রোদ্দুর
ছাদে উঠে যাই নিরুপায়
ছাদ মানে জুরাসিক পার্ক
ছাদ মানে লাল সোয়েটার কলরববিহীন।
ছাদে নিয়মিত স্পিলবার্গ বসন্ত নিয়ে আসেন
আমার তো শরীরখারাপ
আমার তো সাদাভাত দেখা পাপ!
ডাইনোসরগুলো দয়া করে তাই
আর সেই কবেকার ‘দ্যা কালার পার্পল’ ফুটে ওঠে সন্ধের আকাশে।