মাতৃতান্ত্রিক
আমরা দুজনে একসঙ্গে একটা বই পড়ি।
কখনো ও আমাকে রান্না করে খাওয়ায়।
কখনো আমি।
উর্দু সিরিয়ালের সেই স্পর্ধিত যুবকটির জন্য আমরা দুজনেই ফিদা।
ফুচকা খেতে খেতে তেঁতুল জলে দুজনে চাঁদের ছায়া দেখি।
মনখারাপ লাগলে দুজনে ভোদকা খাই।
যদিও স্কচই আমার পছন্দের ড্রিঙ্ক।
এইভাবে প্রতিদিন নিজেদের গায়ের তেলজলের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে আমরা ভাবি
আগামী কোনোদিনে আমরা একসঙ্গে মাচ্চুপিচু যাব।
টুপি, সানগ্লাস, সানস্ক্রিম মেখে মেডিটেরেনিয়ান এ রোদ পোহাবো।
আমি আর আমার মেয়ে।
প্রতিদিন একটু একটু করে
মাতৃতান্ত্রিক হই।
মানুষ
এইসব এলোমেলো, ঝোড়ো দিন আসবেই জানতাম।
তাই কিছু রোদ্দুর কিনে রেখেছিলাম।
দুঃখের দিনে বের করবো। বেশ দামী। তাই দুটো ঘর কিছদিন আলো করতে পারে এইরকম খানিকটা রোদ্দুর কেনা ছিল।
আজ শোকের দিনে আমার ঘরে রোদ্দুর দেখে পড়শী রা অবাক।
আজ মৃত্যুর দিনে আমার ঘরে আলো দেখে
স্বজন রা বিষ্মিত।
আজ আমার মুখোশ ছিঁড়ে যাওয়া মুখ দেখে
বন্ধুরা হতবাক।
আজকাল রোদ, জ্যোৎস্না, বৃষ্টি সব কিনে রাখতে হয়।
বাঁচতে তো হবে।
প্রকৃতি কিছু দেয় না আর।
মানুষ মানুষ খায়।
আরও বাংলা কবিতা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে
বিষাদ
পালকের গায়ে পাখির মনখারাপ লেখা থাকে।
আমি বইয়ের ভাঁজে সেই পালক রেখে বুঝেছি।
বইয়ের পাতা ভিজে গেছে শোকে।
পালকের গায়ে পর্যটনের ধুলো লেগে থাকে।
আমি ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার সময় বুঝেছি
চোখ লাল হয়ে গেছে।
পালকের গায়ে দুব্বোঘাস থাকে।
আমি তুলতে গিয়ে বুঝেছি মাটির সুঘ্রাণ।
পালকের গায়ে আমার পূর্বপুরুষের পাপ
আমি ধরতে গিয়ে বুঝেছি হাতে রক্ত লেগে আছে।
যাবজ্জীবন
নিতে এসেছিলাম। তোমাকে।
তোমার যাবতীয় ঝড়, বৃষ্টি সমেত।
তাড়াতাড়ি উঠে পড়ো।
ভোরের ট্রেন একবার চলে গেলে
ফিরে আসতে সেই সন্ধে হয়ে যাবে।
মা বলেছে সন্ধেবেলা আনিস না।
সন্ধেবেলা পাখিরা ঘরে ফেরে।
মানুষ সেইসময় ঘর খোঁজে।
সন্ধেবেলা যারা আসে তারা থাকতে নয়।
অভাবী সংসারে অশ্রুজল রেখে যায়।
সে থাকায় যাওয়া লেগে থাকে।
নিতে এসেছিলাম তোমাকে।
আমার দুমুঠো যাবজ্জীবনে।