ঈশানী রায়চৌধুরী
(১)
যতবার ডাক দিই...
তুমি বল, 'অসময়,
কথা হবে পরে |'
চৌদিক আচ্ছন্ন করে
বৃষ্টি নামে
বুকের ভিতরে |
(২)
ভালোই ছিলে ? ভালোই আছ ? আমায় ছাড়া ?
জলের শাড়ি বিছিয়ে থাকে হাঁসের গায়ে
যেমন করে ..তবু পালক ভিজছে না তো
তেমনি করে তুমিও বুঝি একার জলে
সাঁতার কাটো এবং ভাসো নিজের মনে
এই যে আমি পাশে দাঁড়াই আলতো পায়ে
চোখের আলো ছড়ায় মুখে এবং ছায়া
নকশা এঁকে শাড়ির বুকে অনর্গলে
বলছে কথা চৈত্র শেষে শিরীষ গাছে
তুমি আমায় ভুলেই গেছো ? একেবারে ?
আমার মনে তবুও কেন তোমার কথা
খুব গোপনে শাড়ির ভাঁজে চোরকাঁটাটি
যেমন থাকে তেমন সুখে লুকিয়ে আছে ?
(৩)
তোমার চোখের কোলে খুব আলগা দু:খ লেগে ছিল
যদিও সেভাবে আগে কখনও তো নজরই করিনি
আজকেই চ্যাটরুমে... তুচ্ছ গল্প... ইঙ্গিতে জানালো
তোমার চোখের কোলে খুব আলগা দু:খ লেগে ছিল
অনেক যুদ্ধ হল... গৃহযুদ্ধ ... অপ্রেম অমিলও
তবুও তোমাকে আমি... রাজহংসী... অন্যথা ভাবিনি
তোমার চোখের কোলে খুব আলগা দু:খ লেগে ছিল
যদিও সেভাবে আগে কখনও তো নজরই করিনি
(৪)
তোর মুখে আঁধারেও লেগে থাকে আলোমাখা ভোর
তোকে তাই আজকাল ছুঁয়ে থাকি লোভীর মতন
টুকিটাকি ভালোবাসা মিছিমিছি খুনসুটি তোর
তোর মুখে আঁধারেও লেগে থাকে আলোমাখা ভোর
দুধসাদা ক্যানভাসে ঝিলমিল চাপানউতোর
মেঘে রোদে কানামাছি এভাবেই যখন তখন
তোর মুখে আঁধারেও লেগে থাকে আলোমাখা ভোর
তোকে তাই আজকাল ছুঁয়ে থাকি লোভীর মতন
(৫ )
প্রেম ছিল গোপন বিভার, প্রেম ছিল শালুকপাতায়
জলের কণা পসরা নিয়ে, রুলটানা স্কুলের খাতায়
তিন দশক পথ পেরিয়ে চিলেকোঠার অন্ধকারে
অভিমানী উপুড় খাতা, কেউ কি তাকে ফেলতে পারে?
আমিও তাই কুড়িয়ে নিই, ঝাঁপির বুকে সাজিয়ে রাখি
নকশা আঁকি দশ আঙুলে, ফুলবাগানে ধুলোর পাখি!
(৬)
অগুরু ধূপের ধোঁয়া মেখে রেখো অগোছালো চুলে,
বনজ কুসুমরং আঁচল জড়িয়ে রেখো
এলোমেলো আনাড়ি আঙুলে
শুকনো হলুদ পাতা
অনুভব পড়ে থাকে
জলের আনাচে কানাচে,
যত্নে কুড়িয়ে নিয়ে লক্ষ্মীর ঝাঁপিতে রেখো
যদিও বা একটুকু বাঁচে
পাগলামি আদিখ্যেতা
নিন্দেমন্দ কটু কথা
যতিহীন
দিবস শর্বরী
মরালগ্রীবায় তবু
অহঙ্কারী রোদ মেখে
হেঁটে যেও
পরমেশ্বরী