জগন্নাথ দেব মণ্ডলের এক গুচ্ছ কবিতা

জগন্নাথ দেবমণ্ডল বয়সে তরুণ, শহর কলকাতা থেকে দূরে থাকেন। এই সদ্যতরুণের লেখার বয়স দুই-ই কম হলেও তাঁর পদচিহ্ন বাংলার সাহিত্যক্ষেত্রে ছাপ ফেলতে শুরু করেছে।

জগন্নাথ দেবমণ্ডল বয়সে তরুণ, শহর কলকাতা থেকে দূরে থাকেন। এই সদ্যতরুণের লেখার বয়স দুই-ই কম হলেও তাঁর পদচিহ্ন বাংলার সাহিত্যক্ষেত্রে ছাপ ফেলতে শুরু করেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Jagannath DebMondal Poetry

ছবি- অরিত্র দে

গ্রামদেবতা

আখগন্ধে একটা লক্ষ্মীপুজো আছে।

ধানের মরাই থেকে ওঠে লন্ঠন আলো।

চৈত্রর আকন্দফুলে শিবলিঙ্গ সকলি উঠে আসে।

আমি সন্ধের গাভি হয়ে বৃন্ত উজাড় করে দি।

সন্তানহীন জননীরা টসটস পাকে।

 তোর পাতায় পাতায় রস 

বোলপুরের আকাশে আজ নীলচে অন্ধকার। লাল কাঁকর হাঁ করে চেয়ে আছে ক্ষয়ে আসা চাঁদের দিকে।

Advertisment

মনে পড়ছে কেন্দুবিল্ব গ্রামের আনন্দবট; ওর নীচে দড়ির খাটিয়া,পাশেই বল্মীক স্তূপ।

গুপগুপি যন্ত্র এখানেও মিলছে,উপাসনা গৃহে রাত্রিকালে প্রবেশ নিষেধ।

শুধু খুচরো পুলিশভ্যান কেবলি উড়ে উড়ে যায়।

আমি নিজস্ব ফতুয়ায় লুকিয়ে ফেলছি কল্কে,গাঁজা, আগুন।

মেঘলাদিনে সাঁঝের বেলা

চৈত্রদিনের গোপীনাথ মেলা।

ঝড়বাদলে নৌকা উল্টে আখের টিন জলে ডুবিয়া যায়।

হতাহত ১। মৃতের সংখ্যা শূন্য।

শুধু দেহবেচনেওয়ালী তালবৃক্ষ বজ্রবিদ্যুৎবাবুকে ধরবার আশায় পাতা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নীল নাচ দেখাচ্ছে!

বৈশাখে রচিত কবিতা

(১)

কবিতা লেখা হল না আল্লা।

ভাতের থালা থেকে ডেকে ওরা আমারে দূরে নিয়ে গেল।

ভাতছানা আলুভাতে নিয়ে কতকাল আর পোড়া জিভে হা অন্ন দেওয়া যায়!

কর্ম নেই;

তাই পরবাসী হাওয়া দূরে পাঠায় আমারে।

বুড়ো বাপের ঘাড়ে ২১ বছরের ভূত হয়ে কতোকাল বসে থাকব?

(২)

মিনির ছা মরে গ্যাছে;

হরিতকী গাছের নীচে নস্যি ডিবের মতো ওর সন্তানকে খেয়ে গেল নেউল।

মিনি আমার পা ধরে মিউমিউ স্বরে সন্তানকামনা করে।

ডুমুরবৃক্ষের ন্যায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকি।

মনে মনে বলি-হা ষষ্ঠী ঠাকরুণ!

(৩)

কাঁধে গামছা, বাঁধা লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদ।

অই লোকটা ডোমের চাঙারিও বাঁধতে জানে!

অই তোমার পূর্বপুরুষ ছিল, গাছে গাছে বানর।

চটি বগলে বেয়াই বাড়ি যাচ্ছে!

bengali poetry Bengali Literature