তুমি চেনো?
তুমি চেনো কালো মুনিষের পাতে শাদা এককাঁড়ি
গরম ভাতের পিরামিড?
তবে তুমি পেতে পারো
ঘামের ঝাঁঝালো গন্ধ, নান্দনিক গুঁড়াকু-সোয়াদ;
তবে তুমি বুঝে নিও শিং-নাড়া রাবণ-মহিষ
আসলে কেমন শান্ত।
তবে তুমি সঠিক সরিষা-তৈল, কাঁচা ভুট্টার বীজদুধ পেতে পারো
এ-পৃথিবী ঋতুমতী হলে।
সন্ধ্যার বরাদ্দ মুনিষের কালো মতিচুর-পাতা আর শাদা চুন...
তুমি, তুমি, চেনো?
কুক্কুপিন্ট ফুল
কুক্কুপিন্ট ফুলের ভিতর জ্বরের মতন তাপ
সেই দহনের নাম কি বিনয়?
কুসুমবনে দেখতে পেতো নীলাভ গোলাপ।
লোকটা কোনো পাপ করেনি, তবু,
কী-উদ্ধত,
পুণ্য এবং খ্যাতির পাছায় লাথ মারে সে, হেলায় নিলো স্বেচ্ছা-নির্বাসন
ও তার মিষ্ট পয়ার
ও সেই মিষ্ট পয়ার জাপটে ধরে আজো।
একলা ছিলো, শিমুলপুরে? প্রেম করে নি?
বেশ করেছে।
আরও বাংলা কবিতা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে
একা
দ্বিপ্রহর-বাগালের শালপাতা-চুটার আমেজ
আসলে কবিতা।
কচি কচি পাতাগুলি যেমত বালিকা-নুপুর
আবার বসন্ত, আহা, চিত্তগিটার
সেদিন গগনে চাঁদ, তেরো বছরের,
সেদিন বুঝিনি, শুধু, দুলেছিনু,
একা।
স্বীকারোক্তি: তাকে
ডুবতে রাজিই ছিলাম, তবে
ডাকলে কেন ঘাটে?
ওই ঘাটে নায় রাজার বেটি, সালেহা খাতুন।
তোমার কোলে প্রথমদিবস
তল্পিতল্পা বেঁধে ঘুমায় চাষার রোগা বালক
দুপুর ব্যর্থ, তবু
একটুকুনি জায়গা দিলে সুগন্ধী তল্লাটে...
ভাবছি আবার প’রবে কবে বুনোফুলের পালক?
এই তো জীবন
বেশ দু'টাকায় পুণ্যি কেনো সন্ধ্যেসকাল গড়িয়াহাটে।
হালকা রঙের আলতো তিলক, মানিয়েছে খুব, ওই ললাটে।
তারপরে খুব নিয়মমাফিক কপাল ঠুকে ঠকাও জামাই;
এবং বলো কাব্য ক'রে: 'এই তো জীবন, দিন আনি, খাই।'
সেই শুনে তাই, ল্যাজগুবুরে, আটখানা হয়, আহ্লাদীরা।
সাত রাজা ধন, খুব সবেতন, এবং তুমিই আসলি হীরা।
এই যে তোমার দিব্য জীবন কাঁচঢাকা এক ঠান্ডা ঘরে।
দিনদুপুরে দু'এক কলি: 'দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে।'
এই যে তোমার ভরপেয়ালায় ঝড় তুলেছে তুমুল বড়াই-
তোমার কাছেই শিখছি এখন, মুষ্টিবদ্ধ বাঁচার লড়াই!
গর্হিত
যদিও প্রেম-কথা অমেয় ভীতিকর
জানি সে গর্হিত, তবুও হে মুখর
সাহসী সুর তোলো পিয়ানো গীটারে
শোনো সে আনকথা, বলিতে কে পারে?
কে শোনে মা-নিষাদ? রাজাও ভিখারি;
শ্রীমতী ভুলে গেছে, ছিল সে কুমারী।
তুমিও ভুল করে জড়ালে জড়োয়া।
ও বাঁশি উদাসীন, করে না পরোয়া।
ওড়না মিছিমিছি সাজালে পলাশে।
হারালো পথরেখা, এমনই কুয়াশা...
সারাংশ
আজকের এই মনমরা মে-বিকেল,
তবু সন্ধেয় বাতাস একটু ঝোড়ো।
বেশ, খুলে দিই তোমার পায়ের শেকল।
বেশ, উড়ে যাও, অনির্দিষ্ট ওড়ো।
উড়ে যাক তবে এক দশকের স্মৃতি,
এ-শহর থেকে অনেক যোজন দূরে...
ঠাট্টায় শিখি ভুলে থাকবার রীতি।
পোকা-কাটা যত পাতা খাক হোক পুড়ে।
উড়িয়ে দিচ্ছি হাওয়ার পাল্লা খুলে,
উড়িয়ে দিচ্ছি, নিরুদ্দিষ্ট ছাই।
বৃষ্টিমাসের তারিখ হারাবো, ভুলে।
শেষ হ’লে সেই বেভুল গল্পটাই।
ঈশ্বর
তোমার ঈশ্বর, দাঁড়ালে কুঁজো, তার
মাথায় টুপি আঁটা, অযথা রংদার।
অথচ মজে ছিল নুনে ও পান্তায়
এখন সেধে সেধে সহসা গান গায়।
সে গান তালকানা, সে গান ভ্রষ্ট
আহা হা কী যে ব্যামো, অবুঝ কষ্ট।
'কী তোর কষ্ট যে, আমাকে খুলে বল্ '
যেই না তাকে বলা, হাসলো নিষ্ফল;
বেঁকা সে তালগাছ, বলেছে,' বুড়োধাড়ি!
রুমাল খোলো, হও, পুনর্মার্জারী।'