Advertisment

সঞ্চারী পুরকাইতের এক গুচ্ছ কবিতা

কলেজ জীবন থেকেই লেখা শুরু করেছিলেন। পেশায় স্কুল শিক্ষিকা সঞ্চারী পুরকাইত বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লিখে থাকেন। এ সপ্তাহে সঞ্চারীর কবিতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sanchari Purakait Poems

অলংকরণ- অরিত্র দে

প্রজাতন্ত্র

Advertisment

মধ্যরাত্রে, যখন চাঁদ এসে খুঁটে খায় আকাশের ধান,

আর সংসদে উড়ছিল জাতীয় পতাকা,

তখনই বাড়ির পিছনে পুকুরে পা ধুচ্ছিল

কবীরের ছোট মেয়ে।

ওরা এসে তাকে নিয়ে গেল,

জ্যোৎস্নার জাফরি দেওয়া আমবাগানে।

বায়ুহীন চুপচাপ পড়ে থাকে তেরঙা।

 চুমু

জলন্ত কাঠকয়লায় সুখটান দিয়েছিল ছেলেটি।

অতীন্দ্রিয় সুখে বোঝেনি কখন পুড়ে গেছে ঠোঁট।

দাঁত জিভ কণ্ঠনালী ধিকিধিকি জ্বলছে।

কার্যত বিবশ, এখনো জানেনা,

ছাই হয়ে যাবে সে।

আরও পান করে আগুন, নেশাগ্রস্ত হয়ে।

বিপ্রতীপে, ছিল মেয়েটি।

শীতল চোখ আর আগুনঝরানো ওষ্ঠাধর।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় প্রকাশিত আরও বাংলা কবিতা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে

শীতরাত

শীতরাত জমে জমে তুষার নেমেছিল বীরভূমে।

মরা মাঠেদের পাশে থোপে থোপে সাদাজরা চাক বাঁধছিল।

ছানা পাখিরা ডানার ওমে  রাতভোর থেকে

বোঝেনি কখন কাঠ হয়ে গেছে মা।

গাঁদার পাপড়ি খড়ি ওঠা ত্বকের মতো সাদা, বরফে।

তবু ঘুম এসেছিল বালিশে। শান্তির ঘুম।

ভোররাতে যখন উপচানো বরফে ঢাকছে দরজা, আধখোলা লেপ হয়ে গেছে, শরণ্য।

 অশ্রুত

ভাঙা আসরের শেষে গুটিকয় হারিয়ে যাওয়া

চপ্পল পড়ে থাকে।

মাঠভরা লোক গান শুনছিল খানিক আগেই।

হেসে কুটিকুটি সই ঢলে পড়ে অপরের গায়ে।

ঘুমচোখে মা'র কোলে জড়োসড়ো বালক।

আদুরে আহ্লাদ নববধূটির চাহনির প্রশ্রয়ে।

তারপর সব শেষ হয়ে গেল।

প্রথম ফাল্গুনী বাতাসে খালি ঠোঙা ঘূর্ণি হয়ে ওড়ে।

নিরুত্তাপ চোখে দিয়েছিল বিড়ি একটান,

মালিকের লোক।

হা হুতাশ বয়ে যায় হাওয়া।

আসরের শেষে, সুর, কান খুঁজে ফেরে।

বহমান

চোখ বেঁধে রেখে গেছে আগন্তুক হাত।

নিঃশব্দে হাতড়ানো যত পর্ণমোচী কাল,

গুনে গুনে আড়কাঠে বাঁধা পড়ে আছে।

উঠোনে পা দিয়ে চলে অপেক্ষাধানে।

আরো কিছু প্রলাপ, সংসারী জানালায়

খড়খড়ি তোলে।

আলো দেখিনিও যদি বহুকাল,তবু

ওম চিনে পেতে রাখা মাদুরে শয়ন।

রোদ ভালো লাগে ভেবে বুঝে যাই

আরো এক শীতের আগমন।

Bengali Literature bengali poetry
Advertisment