Advertisment

সোনালী চক্রবর্তীর এক গুচ্ছ কবিতা

বেনারসে জন্ম, উত্তরবঙ্গে বেড়ে ওঠা সোনালী চক্রবর্তীর। বর্তমানে সাহিত্যের গবেষক এই তরুণ লেখকের ইতিমধ্যেই একটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। আজ সোনালীর কবিতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অলংকরণ- অরিত্র দে

পাঁজর 

Advertisment

তুমি আমায় অজুহাত শব্দের বানান শেখাও,

আর আমি মহালয়ার ভোরে খুঁজি বিষণ্ণতা বার্ষিকী।

জমে থাকা কুয়াশায় টুরিষ্ট জুতো,

ইয়াবার মেঘে ক্রমশ একা থেকে একা।

অভিমান চিরদিন নিথর অজগর,

গিলে বসে থাকে যাবতীয় সত্যের শ্বাস।

তোমার গভীর নির্লিপ্তি থেকে ঝিকিয়ে ওঠা

নীল আঘাতেরা মনে পড়ায় দুর্বাসার তপশ্চর্যা,

তবুও কি ভীষণ মোহে আমার দিনাতিপাত...

আমি জানি,

ইভেরা এভাবেই মেনে নেয়,

পাঁজর নির্ভরতার ধারাপাত।

লীলা

নিবিড় ক্ষরণ নি:শব্দে অন্তের পর

গহীন হও তুমি,

উতরোল সোহাগে স্নাত ব্যথাদের,

অবগুন্ঠন খোলো ত্রাতার মসীহায়,

ক্ষতস্থান আমার অনাঘ্রাত নববধূ,

কে জানতো?

'লবণ' তোমার প্রিয় বিলাস।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় প্রকাশিত সমস্ত কবিতার জন্য ক্লিক করুন এখানে

মুর্খের শুভঙ্করী

আবছায়া হ্যালোজেনে ঠাহর খোঁজা চোখ,

'ফিরলো সে?'

কোনও কোনও দিন মুহূর্তেরা অতিরিক্ত দীর্ঘ,

ধমনীতে স্পন্দন হঠাৎ দ্রুত,

'আহা,আজ বড় শ্রান্ত',

শুষে নিতে ইচ্ছে করে একশো বছরের প্রতীক্ষা

পলকের সম্মোহনে,

দুর্ভিক্ষ দৃষ্টিতে শান্তিবারি ঝরে

দিনান্তের সন্দর্শনে......

এই সবই ঠাস বুনোট হ্যান্ডলুম,

ফ্যন্টাসির ছায়াবাজি।

বাস্তব, সহ্যাদ্রির অধিক সহ্যশীল,

এখানে উন্মুক্ত অন্তর্জাল,

অবরোধহীন সংযোগসূত্রেরা পড়ে থাকে

পরিত্যক্ত কারশেডে,

ক্রমে নির্জন প্রেতপুরী।

'ব্যথা খুব?'

এ জিজ্ঞাসা আপেক্ষিক,

দাসচুক্তির উলঙ্ঘনে আশঙ্কাদের অন্তর্ধান,

পরিচিত অভ্যাস।

আটান্ন ঢেউ এর ফেনায় অনার্দ্র থেকে যাওয়া,

লবণপীড়িত মহুলমাস......

পরিব্রাজন আদতেই সৎ ও স্মৃতিহীন প্রতারণা,

আধার সাপেক্ষে বদলে নেওয়া

মৌলিক চাহিদা,

'মায়া' শব্দের কল্প দায়ভার....

শ্বাস বৈকুণ্ঠগামী

কার্শিয়াঙের লাল কার্ডিগান আর রডোডেনড্রন,

অদ্ভুত ধন্ধে ফেলে এই বৈকুণ্ঠগামী তন্দ্রায়,

আসলে কি কোনোদিন ঘটেছিল এসব?

প্রদর্শকহীন পথে হেঁটে প্রথম শ্রেণী,

শুধুই ন্যাপথলিন ফাইলের টুরিষ্ট?

এ পৃথিবীতটে কবিতার বসন্ত উৎসবে,

যে প্রেমিক সম্রাটের নাম ভূমিকায়,

তার আলোকদশায় কোনোদিন প্রার্থনা

ছিলোনা কাণ্ডারির বালু সেতু বন্ধনের তবে?

ক্লিওপেট্রা মনে পড়ে।

সম্পাদনা,সৃষ্টিতত্ব নিছক ম্যানমেড বিলিফ।

সাড়ে চুয়াত্তর পৃথিবীর চোখে,

একা শিরদাঁড়ার যোনি শুধুই কলঙ্ক প্রসবিনী,

বৃষ্টি দুপুরে,প্রখর চাঁদে কখনো তাদের আত্মা কাঁদেনি।

অধিকারে নেই অভিমান,

শুধু বৃদ্ধ সাধু সঙ্গিনী।

পুরুষ কোনোদিন মানুষ হয়না এই নশ্বরতায়,

ফেলানির কাঁটাতার ঈদ দেখেছিল,

নষ্ট না হলে বুড়ি চাঁদকে জীবনানন্দও ছোঁয়নি।

পূর্ব রাত 

তবে কি চলেই যেতে হবে?

এই মায়াভূমি অনাথে সঁপে,

গোধূলির গুরুত্বহীন বাঁকে?

অধরা শরাবদানে ছেড়ে যাওয়া

সাকির বিষাদের মতো,

মুছে দিয়ে যাবতীয় চিহ্ন সমুদয়?

অথচ স্পর্শেরা পরিত্রাণকামী নয়।

এখনও প্রলয়তুচ্ছ অপেক্ষা ঘনায় এ হৃদে,

সদ্য কিশোরীর প্রথম মনখারাপের অসুখ,

কথা নেই বহুদিন,চোখে চোখ সুদূর অতীত।

আসছো না বলে প্লাবন বন্ধক পড়ে আছে,

চিতাসম্ভব সূর্যে পুড়ছে চক্রবৃদ্ধি ঋণ।

bengali poetry Bengali Literature
Advertisment